পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8O8 প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ উচিত যে অ-বাঙ্গ পেট্ৰিীয়টিজম আমার মনের উপর একাধিপত্য করে না। যে ভাষা ভারতবর্ষের কোনো দেশেরই ভাষা নয়, সেই ভাষাকে সমগ্র ভারতবষের ভাষা গণ্য করে সেই ভাষাতে পেট্রিয়টিক বক্ততা করতে হলে আমি সেই পেট্রিয়টিজমের বাহানা করতে বাধ্য হতুমি যে, দেশপ্ৰীতি ভারতবর্ষের কোনো দেশের প্রতি ভালোবাসা নয়, কিন্তু সমগ্ৰ ভারতবর্ষের প্রতি প্রীতি। মখস্থ ভাষায় শািন্ধ মখস্থ ভােবই প্রকাশ করা যায়। তার প্রমাণ আমাদের কনফারেন্স কনগ্রেসে নিত্যই পাওয়া যায়, দেশের যত মখস্থবাগীশ ও-সকল সভার তাঁরাই হচ্ছেন যােগপৎ নায়ক ও গায়ক। সে যাই হোক, কোনোরাপ ভালোবাসার কৈফিয়ত চাওয়াও যেমন অন্যায় দেওয়াও তেমনি শক্ত, তা সে অন্যরাগের পাত্র ব্যক্তিবিশেষই হোক, জাতিবিশেষই হোক। এ ক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে, আমরা যাকে স্বদেশপ্ৰীতি বলি আসলে তা সবজাতিপ্ৰীতি। দেশকে ভালোবাসার অর্থ দেশবাসীকে ভালোবাসা- কেননা মানষে শােধ মানষেকেই ভালোবাসে। যদি এমন কেউ থাকেন যিনি মানষেকে নয়। মাটিকে ভালোবাসেন, তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে তিনি মানষ নন- জড়পদাৰ্থ ; কেননা জড়ের প্রতি জড়ের যে একটা নৈসগিক ও অন্ধ আকর্ষণ আছে, এ সত্য বিজ্ঞানে আবিহুকার করেছে। যাক ও-সব অবান্তর কথা। আসল কথা এই যে, সবজাতিপ্ৰীতির কৈফিয়ত কারো কাছে চাওয়া অন্যায়, কারণ ও হচ্ছে মনের একটা দবলতা। সর্বজনবাৎসল্যরপ ক্ষদ্র হৃদয়দৌবাল্য যখন অজনেরও ছিল, তখন আমাদের মতো ক্ষদ্র ব্যক্তিদেরও যে থাকবে তাতে আর আশচযা কি। আর বাঙালি বাঙালি-মাত্রেরই সর্বজন, তার কারণ ভাষার যোগ হচ্ছে মানস-কায়ে রক্তের যোগ। সতরাং বাঙালিদের পরস্পরের প্রতি নাড়ির টান থাকাই স্বাভাবিক, না থাকাটাই অদ্ভুত। তার পর এ প্রীতির পরো কৈফিয়ত দেওয়া শক্ত, কেননা তার মােল আমাদের কাছে প্রত্যক্ষ নয়। ছেলেবেলায় গরমহাশয়েরা আমাদের একটা ভারি শান্ত অণ্ডক কাষতে দিতেন, যা আমরা সকলে কষে উঠতে পারতুম না। সে অঙ্ক হচ্ছে এই— আছিল। দেউল এক পবিতপ্রমাণ তার পর কি আছে ঠিক মনে পড়ছে না। কবিতা আমার কন্ঠস্থ থাকে না। তবে এটকু মনে আছে যে, সে মন্দিরের মাটির ভিতর কতটা পোঁতা আছে। অাঁক কষে তাই আমাদের বার করতে হত। এখন আমার কথা এই যে, মানষের মন পর্বতপ্রমাণই হোক, আর বলমীকপ্রমাণই হোক, তার সমস্তটা জেগে নেই। তার অনেকটা ভাবে ডুবে আছে; যেটকু জেগে আছে সেইটকু আমরা নিজে দেখতে পাই, অপরকেও দেখাতে পারি; কিন্তু সেই আংশিক মন দিয়ে আমাদের সমগ্ৰ মনের পরো পরিচয় আমরা দিতে পারি নে। সতরাং আমাদের রাগদ্বেষের সঠিক কারণ আমরা সব সময়ে নিজেও জানি নে, অতএব পরকেও জানাতে পারি নে। এ ক্ষেত্রে নিজের কোট বজায় রাখবার জন্য মানষে যে-সব তাক যিন্ডি দেখায় সে-সব ষোলো-আনা গ্রাহ্য নয়। কেননা যান্তিতকের দোষ এই যে, তার স্বারা আমরা অপরকে প্রবণগুত করতে না চাইলেও অনেক সময় নিজেকে প্রবর্ণিগুত করি। কে না জানে যে পথিবীতে