পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইউরোপীয় সভ্যতা বস্তু কি 8&S অবশ্য ইউরোপীয় সভ্যতার মম উদঘাটিত করতে হলে ইউরোপ নামক ভূভাগ ও তার অধিবাসীদের race-এর উপেক্ষা করা যায় না। কারণ, ইউরোপ নামক দেশটা যে তার অধিবাসীদের অনেক পরিমাণে গ’ড়ে তুলেছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। ধনী হবার, শক্তিমান হবার যতটা সংযোগ ইউরোপের অধিবাসীরা তাদের দেশের কাছ থেকে পেয়েছে, পথিবীর অন্য জাতিরা ততটা পায় নি; ইউরোপের সৌভাগ্য যে সে কতক অংশে প্রকৃতির অনগ্রহের উপর প্রতিষ্ঠিত, সে কথা অস্বীকার করা মােখাতা। SO কিন্তু ইউরোপের মেটিরিয়াল সিভিলাইজেশন ইউরোপের যথাৰ্থ সিভিলাইজেশন নয়। যাঁরা মনে করেন, ইউরোপের ঐশবযই তার সভ্যতার চরম ফল তাঁদের বলা দরকার যে, যদিও তাই হয় তা হলে ভবিষ্যতে তাঁদের ঐশবর্ষ দিন দিন বদ্ধি হবার কোনো সম্পভাবনা নেই। অতীতে যে-সব কারণে ও যে-সব উপকরণের সাহায্যে ইউরোপ তার বর্তমান ধনদৌলত লাভ করেছে, সে-সব কারণ যে ভবিষ্যতেও তার সহায় হবে, এরুপ আশা করা ব্যথা।। একবার চোেখ তাকিয়ে দেখলেই দেখা যায় যে, পথিবীর প্রায় সকল জাতিই তাদের নিজের নিজের দেশকে এক সম্পািলয়েট করতে শিখেছে, এবং করছে; এবং ভবিষ্যতে এ বিষয়ে ইউরোপের মতো সমান কৃতকাৰ্য হবে। অর্থাৎ মেটিরিয়াল সিভিলাইজেশনে ইউরোপ অপর সকল দেশের উপর চিরকাল টেক্কা দিতে পারবে না। যাকে বলে টেকনিকাল বিদ্যা তা বিশবিমানবের করায়ত্ত হয়েছে। সতরাং টেকনিকাল সিভিলাইজেশনই যদি ইউরোপীয়ান সিভিলাইজেশন হয়, তা হলে সে সিভিলাইজেশনের ইউরোপীয় নামের কোনো সার্থকতা থাকবে না। সত্য কথা এই যে, ইউরোপকে সন্টি করেছে প্রধানত হিসটরি, জিয়োগ্রাফি নয়; অর্থাৎ ইউরোপীয় সভ্যতার সন্টি ও স্থিতির মািল কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক নয়; আর তার ভিত্তি হচেছ একটি বিশেষ 'moral and intellectual tradition”। সেই ভিত্তির উপরই ইউরোপীয় সভ্যতার ইমারত গড়ে উঠেছে, এবং সেই ভিত আলগা হলেই ইউরোপীয় সভ্যতা ভেঙে পড়বে। এই ভিত্তির গোড়া আলগা হয়েছে বলেই ইউরোপ ধবংসের মাখে অগ্রসর হয়েছিল। সতরাং ইউরোপীয় সভ্যতা যাঁরা রক্ষা করতে চান তাঁদের জানা উচিত ইউরোপীয় সভ্যতা বস্তু কি। কারণ ইউরোপে তথাকথিত মেটিরিয়াল সিভিলাইজেশন যাঁরা যথাৰ্থ সিভিলাইজেশন ব'লে ভুল করেন তাঁরাই ইউরোপীয় সভ্যতাকে ধবংসের মখে এগিয়ে নিয়ে যাচেছন। বস্তুজগতের উপর প্রভুত্ব যথার্থ সভ্যতার ফল মাত্র, তার মল নয়। ܦܬܠ গ্ৰীকসভ্যতা, রোমানসভ্যতা ও খাস্টধমা- এই তিনে মিলে বতমান ইউরোপীয় সভ্যতাকে গড়ে তুলেছে। গ্ৰীক জাতি বতমান বিজ্ঞানের ভিত্তিপত্তন করে গিয়েছেন; রোমান জাতি