পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

CeN 88S সিধে পথ ভিন্ন চলতে জানে না, যাঁর কলপনা আপনা হতেই খেলে না, যিনি আপনাকে সম্পপণ্য ছেড়ে দিতে পারেন না, অথবা ছেড়ে দিলে আর নিজবশে রাখতে পারেন না- তাঁর খেয়াল-লেখার চেষ্টা না করাই ভালো। তাতে তাঁর শািন্ধ গৌরবের লাঘব হবে। কৃশ দেহ পালট করবার চেন্টা অনেক সময় ব্যৰ্থ হলেও কখনোই ক্ষতিকর নয়, কিন্তু সস্থলদেহকে সক্ষম করবার চেন্টায় প্রাণসংশয় উপস্থিত হয়। ইঙ্গিতজ্ঞ লোকমাত্রেই উপরোক্ত কথা-কটির সার্থকতা বঝতে পারবেন। (; আমার কথার ভাবেই বৰ্ব্বতে পারছেন যে, আমি খেয়াল বিষয়ে একটি হালকা অঙ্গের জিনিসের পক্ষপাতী। চুটকিও আমার অতি আদরের সামগ্ৰী-যদি সাের খাঁটি থাকে ও ঢঙ ওস্তাদী হয়। আমার বিশবাস আমাদের দেশের আজকাল প্রধান অভাব গণপনাযন্ত ছিবলেমি। এ সম্পবন্ধে কৈফিয়তস্বরপে দ-এক কথা বলা প্রয়োজন। কোনো ব্যক্তি কিংবা জাতি৷ -বিশেষ যখন অবস্থা-বিপর্যয়ে সকল অধিকার হতে বিচ্যুত হয় তখন তার দটি অধিকার অবশিষ্ট থাকে-কাঁদবার ও হাসবার। আমরা আমাদের সেই কাঁদবার অধিকার ষোলো-আনা বঝে নিয়েছি এবং নিত্য কাজে লাগাচ্ছি। আমরা কাঁদতে পেলে যত খশি থাকি, এমন আর কিছতেই নয়। আমরা লেখায় কাঁদি, বক্তৃতায় কাঁদ। আমরা দেশে কে দেই সন্তুটি থাকি নে, চাঁদা তুলে বিদেশে গিয়ে কাঁদি। আমাদের সবজাতির মধ্যে যাঁরা স্থানে-অস্থানে, এমন-কি, অরণ্যে পর্যন্ত, রোদন করতে শিক্ষা দেন, তাঁরাই দেশের জ্ঞানী গণেী বদ্ধিমান ও প্রধান লোক বলে গণ্য এবং মান্য। যেখানে ফোঁস করা উচিত। সেখানে ফোঁস-ফোঁস করলেই আমরা বলিহারি যাই। আমাদের এই কান্না দেখে কারো মন ভেজে না, অনেকের মন চটে। আমাদের নাতন সভ্যযাগের অপবর্ণ সন্টি ন্যাশনাল কনগ্রেস অপর সদ্যোজাত শিশর মতো ভূমিষ্ঠ হয়েই কান্না শার করে দিলে। আর যদিও তার সাবালক হবার বয়স উত্তীণ হয়েছে তবও বৎসরের তিনশো বাষটি দিন কুম্ভকণের মতো নিদ্ৰা দিয়ে তার পর জেগে উঠেই তিন দিন ধরে কোকিয়ে কান্না সমান চলছে। যদি কেউ বলে, ছি, অত কাঁদা কেন, একটা কাজ কর না - তা হলে তার উপর আবার চোখ রাঙিয়ে ওঠে। বয়সের গণে শােধ ঐটকু উন্নতি হয়েছে। মনের দঃখের কান্নাও অতিরিক্ত হলে কারো মায়া হয় না। কিন্তু কান্না-ব্যাপারটাকে একটা কত ব্যকম করে তোলা শািন্ধ আমাদের দেশেই সম্পভব হয়েছে। আমরা সমস্ত দিন গহকাম করে বিকেলে গা-ধয়ে চুল-বোধে পা-ছড়িয়ে যখন পরাতন মাতৃবিয়োগের জন্য নিয়মিত এক ঘণ্টা ধরে ইনিয়ে-বিনিয়ে কাঁদতে থাকি তখন পথিবীর পদ্মষমানষদের হাসিও পায়, রাগও ধরে। সকলেই জানেন যে, কান্না-ব্যাপারটারও নানা পদ্ধতি আছে, যথা রোলকান্না, মড়াকান্না, ফাঁপিয়ে কান্না, ফলেফলে কান্না ইত্যাদি; কিন্তু আমরা শােধ, আভাস করেছি নাকে-কান্না। এবং এ কথাও বোধ হয়। সকলেই জানেন যে, সদারঙ্গ বলে গেছেন— খেয়ালে সব সাের লাগে, শািন্ধ নাকী সদর লাগে না। এই-সব কারণেই আমার মতে এখন সাহিত্যের সাের বদলানো প্রয়োজন। কারণ