পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘যৌবনে দাও রাজটিকা’ 86ኔ © দিকে শািন্ধ নেতি নেতি; অর্থাৎ এক দিকে লোষ্ট্ৰকাঠিও দেবতা, অপর দিকে ঈশ্বরও ব্ৰহ্ম নন। অর্থাৎ আমাদের জীবনগ্রন্থে প্রথমে ভূমিকা আছে, শেষে উপসংহার আছে; ভিতরে কিছু নেই। এ বিশ্বের জীবনের আদি নেই,অন্ত নেই, শুধু মধ্য আছে; কিন্তু তারই অংশীভুত আমাদের জীবনের আদি আছে অন্ত আছে; শুধু মধ্য নেই। বার্ধক্যকে বাল্যের পাশে এনে ফেললেও আমরা তার মিলন সাধন করতে পারিনি; কারণ ক্রিয়া বাদ দিয়ে দুটি পদকে জুড়ে এক করা যায় না। তা ছাড়া যা আছে তা নেই বললেও তার অস্তিত্ব লোপ হয়ে যায় না। এ বিশ্বকে মায়া বললেও তা অপশ্য হয়ে যায় না, এবং আত্মাকে ছায়া বললেও তা অদশ্য হয়ে যায় না। বরং কোনো-কোনো সত্যের দিকে পিঠ ফেরালে তা অনেক সময়ে আমাদের ঘাড়ে চড়ে বসে। যে যৌবনকে আমরা সমাজে সথান দেইনি, তা এখন নানা বিকৃতরূপে নানা ব্যক্তির দেহ অবলম্বন করে রয়েছে। যারা সমাজের সম্মুখে জীবনের শােধ নান্দী ও ভারতবচন পাঠ করেন, তাঁদের জীবনের অভিনয়টা যবনিকার অন্তরালেই হয়ে থাকে। রক্ষা ও বন্ধ করে রাখলে পদার্থমাত্রই আলোর ও বায়ুর সম্পক হারায়, এবং সেইজন্য তার গায়ে কলঙ্ক ধরাও অনিবার্য। গতি জিনিসের পক্ষে দন্ট হওয়া সবাভাবিক। আমরা যে যৌবনকে গোপন করে রাখতে চাই, তার জন্য আমাদের প্রাচীন সাহিত্য অনেক পরিমাণে দায়ী। কোনো বিখ্যাত ইংরেজ লেখক বলেন যে, literature (g criticism of life; &r(sfer riffsNo. 4GS IGINT (5 পারে, কিন্তু সংস্কৃত সাহিত্য হচ্ছে যৌবনের আলোচনা। সংস্কৃত সাহিত্যে যােবকব্যবতী ব্যতীত আর কারো স্থান নেই। আমাদের কাব্যরাজ্য হচ্ছে সমযবংশের শেষ নপতি অগ্নিবর্ণের রাজ্য, এবং সে দেশ হচ্ছে অন্টাদশবর্ষদেশীয়াদের সবদেশ। যৌবনের যে ছবি সংস্কৃত দশ্যকাব্যে ফটে উঠেছে, সে হচ্ছে ভোগবিলাসের চিত্র। সংস্কৃত কাব্যজগৎ মাল্যচন্দনবনিতা দিয়ে গঠিত এবং সে জগতের বনিতাই হচ্ছে সবগ, ও মাল্যচন্দন তার উপসাগ। এ কাব্যজগতের স্রস্টা কিংবা দ্রািমটা-কবিদের মতে প্রকৃতির কাজ হচ্ছে শািন্ধ, রমণীদেহের উপমা জোগানো, পরিষের কাজ শােধা রমণীর মন জোগানো। হিন্দযাগের শেষকবি জয়দেব নিজের কাব্যসম্পবন্ধে সম্পন্টাক্ষরে যে কথা বলেছেন, তাঁর পবিবতী কবিরাও ইণ্ডিগতে সেই একই কথা বলেছেন। সে কথা এই যে, “যদি বিলাস-কলায় কুতােহলী হও তো আমার কোমলকান্ত পদাবলী শ্রবণ করো’। এক কথায় যে-যৌবন যযাতি নিজের পত্রিদের কাছে ভিক্ষা করেছিলেন, সংস্কৃত কবিরা সেই যৌবনেরই রপগণ বর্ণনা করেছেন। এ কথা যে কত সত্য, তা একটি উদাহরণের সাহায্যে প্রমাণ করা যেতে পারে। কৌশাম্পিবর যােবরাজ উদয়ন এবং কপিলাবাস্তুর যােবরাজ সিন্ধাৰ্থ উভয়ে সমসাময়িক ছিলেন। উভয়েই পরম রূপবান এবং দিব্য শক্তিশালী যাবাপরিষ; কিন্তু উভয়ের মধ্যে প্রভেদ এইটকু যে, একজন হচ্ছেন ভোগের আর-একজন হচ্ছেন ত্যাগের পণ্য অবতার। ভগবান গৌতমবন্ধের জীবনের ব্রত ছিল মানবের মোহনাশ করে তাকে