পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘যৌবনে দাও রাজটিক” 866 করেছিলেন। কিন্তু যে কারণেই হোক প্রাচীন ভারতবর্ষের চিন্তার রাজ্যে দেহমনের পরস্পরের যে বিচ্ছেদ ঘটেছিল, তার প্রমাণ-প্রাচীন সমাজের এক দিকে বিলাসী অপর দিকে সন্ন্যাসী, এক দিকে পত্তন অপর দিকে বন, এক দিকে রঙ্গালয় অপর দিকে হিমালয়; এক কথায় এক দিকে কামশাস্ত্র অপর দিকে মোক্ষশাস্ত্র। মাঝামাঝি আর-কিছ জীবনে থাকতে পারত, কিন্তু সাহিত্যে নেই। এবং এ দই বিরািন্ধ মনোভাবের পরপর মিলনের যে কোনো পন্থা ছিল না, সে কথা ভাতৃ হরি সম্পন্টাক্ষরে বলেছেন @का छाशी ग:मद्भौ वा प्रद्धौ वा এই হচ্ছে প্রাচীনযাগের শেষ কথা। যাঁরা দরী-প্ৰাণ তাঁদের পক্ষে যৌবনের নিন্দা করা যেমন সবাভাবিক, যাঁরা সন্দরী-প্ৰাণ তাঁদের পক্ষেও তেমনি সবাভাবিক। অধিক ঝাঁজি আছে। তার কারণ, ত্যাগীর অপেক্ষা ভোগীরা অভ্যাসবশত কথায় ও কাজে বেশি অসংযত । যাঁরা সন্ত্ৰীজাতিকে কেবলমাত্র ভোগের সামগ্রী মনে করেন। তাঁরাই যে সন্ত্রী-নিন্দার ওস্তাদ, এর প্রমাণ জীবনে ও সাহিত্যে নিত্য পাওয়া যায়। স্ত্রী-নিন্দকের রাজা হচ্ছেন রাজকবি ভাতৃ হরি ও রাজকবি সোলোমন। চরম ভোগবিলাসে পরম চরিতার্থতা লাভ করতে না পেরে এরা শেষবয়সে সত্ৰীজাতির উপর গায়ের ঝাল। ঝেড়েছেন। যাঁরা বনিতাকে মাল্যচন্দন হিসাবে ব্যবহার করেন। তাঁরা শকিয়ে গেলে সেই বনিতাকে মাল্যচন্দনের মতোই ভূতলে নিক্ষেপ করেন, এবং তাকে পদদলিত করতেও সংকুচিত হন না। প্রথমবয়সে মধর রস অতিমাত্রায় চৰ্চা করলে শেষবয়সে জীবন তিতো হয়ে ওঠে। এ শ্রেণীর লোকের হাতে শঙ্গার-শতকের পরেই বৈরাগ্য-শতক রচিত হয়। একই কারণে, যাঁরা যৌবনকে কেবলমাত্র ভোগের উপকরণ মনে করেন। তাঁদের মখে। যৌবন-নিন্দা লেগে থাকবারই কথা। যাঁরা যৌবন-জোয়ারে গা ভাসিয়ে দেন, তাঁরা ভাটার সময় পাঁকে পড়ে গত জোয়ারের প্রতি কটােকাটব্য প্রয়োগ করেন। যৌবনের উপর তাঁদের রাগ এই যে, তা পালিয়ে যায় এবং একবার চলে গেলে আর ফেরে না। যযাতি যদি পােরর কাছে ভিক্ষা করে যৌবন ফিরে না পেতেন তা হলে তিনি যে কাব্য কিংবা ধমশাস্ত্র রচনা করতেন, তাতে যে কি সতীৱ যৌবননিন্দা থাকত তা আমরা কলপনাও করতে পারি নে। পরে যে পিতৃভক্তির পরিচয় দিয়েছিলেন, তার ভিতর পিতার প্রতি কতটা ভক্তি ছিল এবং তাতে পিতারই যে উপকার করা হয়েছিল তা বলতে পারি নে, কিন্তু তাতে দেশের মহা অপকার হয়েছে; কারণ নীতির একখানা বড়ো গ্রন্থ মারা গেছে। যযাতি-কাঙিক্ষত যৌবনের বিরদ্ধে প্রধান অভিযোগ এই যে, তা অনিত্য। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণ ও শ্রমণ, নগনক্ষপণক ও নাগরিক, সকলেই একমত। ‘যৌবন ক্ষণস্থায়ী, এই আক্ষেপে এ দেশের কাব্য ও সংগীত পরিপািণ ফাগান গায়ী হয়, বহরা ফিরি। আয়ী হয়। গয়ে রে যোেবন, ফিরি। আওত নাহি