পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Gk Vy প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ এই গান আজও হিন্দৱস্থানের পথে-ঘাটে অতি করণ সরে গাওয়া হয়ে থাকে। যৌবন যে চিরদিন থাকে না, এ আপসোস রাখবার সােথান ভারতবর্ষে নেই। যা অতি প্রিয় এবং অতি ক্ষণস্থায়ী, তার স্থায়িত্ব বাড়াবার চেন্টা মানষের পক্ষে সবাভাবিক। সম্পভবত নিজের অধিকার বিস্তার করবার উদ্দেশ্যেই এ দেশে যৌবন শৈশবের উপর আক্ৰমণ করেছিল। বাল্যবিবাহের মলে হয়তো এই যৌবনের মেয়াদ বাড়াবার ইচ্ছাটাই বতমান। জীবনের গতিটি উলটো দিকে ফেরাবার ভিতরও একটা মহা আর্ট আছে। পথিবীর অপর-সব দেশে লোকে গাছকে কি করে বড়ো করতে হয় তারই সন্ধান জানে, কিন্তু গাছকে কি করে ছোটো করতে হয়। সে কৌশল শােধ জাপানিরাই জানে। একটি বটগাছকে তারা চিরজীবন একটি টবের ভিতরে পরে রেখে দিতে পারে। শনতে পাই, এই-সব বামন-বিট হচ্ছে অক্ষয়বট। জাপানিদের বিশবাস যে, গাছকে হিসাব করলে তা আর বদ্ধ হয় না। সম্পভবত আমাদেরও মনষ্যত্বের চর্চা সম্পবন্ধে এই জাপানি আট জানা আছে, এবং বাল্যবিবাহ হচ্ছে সেই আটের একটি প্রধান অঙ্গ। এবং উক্ত কারণেই, অপর-সকল প্রাচীন সমাজ উৎসন্নে গেলেও আমাদের সমাজ আজও টিকে আছে। মনষ্যেত্ব খব করে মানবসমাজকে টবে জিইয়ে রাখায় যে বিশেষ-কিছ অহংকার করবার আছে, তা আমার মনে হয় না। সে যাই হোক এ যাগে যখন কেউ যৌবনকে রাজটিকা দেবার প্রস্তাব করেন তখন তিনি সমাজের কথা ভাবেন, ব্যক্তিবিশেষের কথা নয়। ব্যক্তিগত হিসেবে জীবন ও যৌবন অনিত্য হলেও মানবসমাজের হিসেবে ও-দই পদার্থ নিত্য বললেও অত্যুক্তি হয় না। সতরাং সামাজিক জীবনে যৌবনের প্রতিষ্ঠা করা মানষের ক্ষমতার বাঁহভূত না হলেও না হতে পারে। কি উপায়ে যৌবনকে সমাজের যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করা যেতে পারে। তাই হচ্ছে বিবেচ্য ও বিচায । এ বিচার করবার, সময় এ কথাটি মনে রাখা আবশ্যক যে, মানবজীবনের পণ্য অভিব্যক্তি- যৌবন। যৌবনে মানষের বাহেন্দ্ৰিয় কমেন্দ্রিয় ও অন্তরিান্দ্রিয় সব সজাগ ও সবল হয়ে ওঠে, এবং সন্টির মলে যে প্রেরণা আছে মানষে সেই প্রেরণা তার সকল অঙ্গে সকল মনে অনভব করে। দেহ ও মনের অবিচ্ছেদ্য সম্পবন্ধের উপর মানবজীবন প্ৰতিস্ঠিত হলেও দেহমানের পার্থক্যের উপরেই আমাদের চিন্তারাজ্য প্রতিষ্ঠিত। দেহের যৌবনের সঙ্গে মনের যৌবনের একটা যোগাযোগ থাকলেও দৈহিক যৌবন ও মানসিক যৌবন সম্ভবতন্ত্র। এই মানসিক যৌবন লাভ করতে পারলেই আমরা তা সমাজে প্রতিস্ঠা করতে পারব। দেহ সংকীর্ণ ও পরিচ্ছিন্ন ; মন উদার ও ব্যাপক। একের দেহের যৌবন অপরের দেহে প্রবেশ করিয়ে দেবার জো নেই; কিন্তু একের মনের যৌবন লক্ষ লোকের মনে gae (G GT RCA 9s পাবে বলেছি যে, দেহ ও মনের সম্পবন্ধ অবিচ্ছেদ্য। একমাত্র প্রাণশক্তিই জড় ও চৈতন্যের যোগ সাধন করে। যেখানে প্ৰাণ নেই সেখানে জড়ে ও চৈতন্যে মিলনও দেখা যায় না। প্রাণই আমাদের দেহ ও মনের মধ্যে মধ্যস্থতা করছে। প্রাণের