পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সরের কথা 8S শােধ তার নকল করে। কিন্তু সে নকলেও মাছিমারা হয় না। মানষের গলগ্ৰহ কিংবা যন্ত্রস্থ হয়ে প্রকৃতিদত্ত স্বরগ্রামের কোনো সদর একট চড়ে, কোনো সর একটা ঝলে যায়। তা তো হবারই কথা। প্রকৃতির হৃদয়তন্ত্রী থেকে এক ঘায়ে যা বেরোয়, তা যে একঘেয়ে হবে- এ তো স্বতঃসিদ্ধ। সতরাং মানষে এই-সব প্রাকৃত সরকে সংস্কৃত করে নিতে বাধ্য। এ মত লোকে সহজে গ্রাহ্য করে; কেননা, প্রকৃতি যে একজন মহা ওস্তাদ এ সত্য লৌকিক ন্যায়েও সিদ্ধ হয়। প্রকৃতি অন্ধ, এবং অন্ধের সংগীতে ব্যুৎপত্তি যে সহজ এ সত্য তো লোকবিশ্রাত। প্রকৃতির ভিতর যে শব্দ আছে- শব্দ নয়, গোলযোগ আছে- এ কথা সকলেই জানেন; কিন্তু তাঁর গলায় যে সারা আছে, এ কথা সকলে মানেন না। এই নিয়েই তো আর্ট ও বিজ্ঞানে বিরোধ। আর্টিসন্টরা বলেন, প্রকৃতি শােধ অন্ধ নন, উপরন্তু বধির। যাঁর কান নেই তাঁর কাছে গানও নেই। সাংখ্যদর্শনের মতে পােরষি দ্রুটা এবং প্রকৃতি নতকী; কিন্তু প্ৰকৃতি যে গায়িকা এবং পরষ শ্রোতা, এ কথা কোনো দর্শনেই বলে না। আর্টিস্টদের মতে তেীযত্রিকের একটিমাত্র অঙ্গ-নতাই প্রকৃতির অধিকারভুক্ত, অপর দটি— গীতি বাদ্য- তা নয়। এর উত্তরে বিজ্ঞান বলেন, এ বিশেবর সকল রপ-রস-গন্ধ-সপশ-শব্দের উপাদান এবং নিমিত্তকারণ হচ্ছে ঐ প্রকৃতির নিত্য। কথাটা উড়িয়ে দেওয়া চলে না, অতএব পড়িয়ে দেখা যাক ওর ভিতর কতটকু খাঁটি মাল আছে। শাস্ত্রে বলে, শব্দ আকাশের ধম ; বিজ্ঞান বলে, শব্দ আকাশের নয় বাতাসের ধম ; আকাশের নিত্য অর্থাৎ সবাঙ্গের সবচ্ছন্দ কক্ষপন থেকে যে আলোকের, এবং বাতাসের উক্তরােপ কম্পন থেকে যে ধবনির উৎপত্তি হয়েছে- তা বৈজ্ঞানিকেরা হাতেকলমে প্রমাণ করে দিতে পারেন। কিন্তু আর্ট বলে, আত্মার কক্ষপন থেকে সরের উৎপত্তি, সতরাং জড়প্রকৃতির গভে তা জন্মলাভ করে নি। আত্মা কাঁপে আনন্দে, সন্টির চরম আনন্দো; আর আকাশ-বাতাস কাঁপে বেদনায়, সন্টির প্রসববেদনায়। সতরাং আর্টিস্টিদের মতে সাের শব্দের অন্যবাদ নয়, প্রতিবাদ । যেখানে আর্টে ও বিজ্ঞানে মতভেদ হয়, সেখানে আপস-মীমাংসার জন্য দশনকে সালিস মানা ছাড়া আর উপায় নেই। দার্শনিকেরা বলেন, শব্দ হতে সরের কিংবা সর হতে শব্দের উৎপত্তি- সে বিচার করা সময়ের অপব্যয় করা। এ স্থলে আসল জিজ্ঞাস্য হচ্ছে, রাগ ভেঙে সরের, না। সার জড়ে রাগের সন্টি হয়েছে-এক কথায়, সর আগে না রাগ আগে। অবশ্য রাগের বাইরে সাগমের কোনো অস্তিত্ব নেই, এবং সাগমের বাইরে রাগের কোনো অস্তিত্ব নেই। সতরাং সরে পবিরাগী কি অন্যরাগী, এই হচেছ আসল সমস্যা। দার্শনিকেরা বলেন যে, এ প্রশেনর উত্তর তাঁরাই দিতে পারেন যাঁরা বলতে পারেন বীজ আগে কি ব্যক্ষ আগে ; অর্থাৎ কেউ

  • ान का ।

আমার নিজের বিশবাস। এই যে, উক্ত দার্শনিক সিদ্ধান্তের আর-কোনো খন্ডন নেই। তবে ব্যক্ষায় বেদীরা নিশ্চয়ই বলবেন যে, ব্যক্ষ আগে কি বীজ আগে সে