পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিষার দিন 8NG সে বর্ণনা পড়লেও আমাদের গায়ে জবর আসে। এ বর্ণনা প্রকৃতির ঘরে আগমন লাগবার বর্ণনা। যে ঋতুতে বাতাস আসে আগানের হালকার মতো, যে ঋতুতে আলোক অগিনর রােপ ধারণ করে, যে ঋতুতে পত্ৰ পাপ সব জলে পড়ে ছাই হয়ে যায়, আর বাক্ষলতা সব কঙ্কালসার হয়ে ওঠে, সে ঋতুর অন্তে বর্ষার আগমন, প্রকৃতির ঘরে নবজীবনের আগমন। কালিদাস একটি শেলাকে সেকালের কবিদেব মনের আসল কথা বলে দিয়েছেন বহাগােণরমণীয়ঃ কামিনীচিত্তহারী তরারিটপলতানাং বান্ধবো নিবি কারঃ। জলদসময় এষ। প্রাণিনাং প্রাণভুতো দিশতু তব হিতানি প্রায়শো বাঞ্ছিতানি৷ পথিবীতে যে বস্তুই ‘প্ৰাণিনাং প্রাণীভূতো সেই বস্তুই শােধ কামিনী-চিত্তহারী - সে কবি-চিত্তহারীও। আর কালিদাস যে বলেছেন “কামিনী-চিত্তহারী” তার অৰ্থ- যা সব মানবের চিত্তহারী তা সত্ৰীজাতিরও চিত্তহারী হবার কথা, কেননা সত্ৰীলোকও মানষে। উপরন্তু সত্ৰীজাতির সঙ্গে প্রকৃতির সম্প্ৰবন্ধ অতি ঘনিষ্ঠ। এত ঘনিষ্ঠ যে অনেকের ধারণা নারী ও প্রকৃতি একই বস্তু, ও-দিয়ের মধ্যে পরষ শােধ প্ৰক্ষিপত। V) আমাদের দেশে গ্রীল্ডেমর পরে বর্ষার আবিভােব প্রকৃতির একটা অপরাপ এবং অদ্ভুত বদল। গ্রীষ্মম অন্তত এ দেশে ধীরে ধীরে অলক্ষিতে বর্ষায় পরিণত হয় না। এ পরিবতন হ্রাসও নয়। বদ্ধিও নয়, একেবারে বিপৰ্যায়। বর্ষা গ্রীমের evolution নয়, আমল revolution । সতরাং বর্ষার আগমন কানারও চোখে পড়ে, কালারও কানে বাজে। কালিদাস বৰ্ষাঋতুর বণনা এই বলে আরম্পর্ভ 夺石冈区可一 সশীকরশেভাধরমত্তকুঞ্জার সতড়িৎপতাকোহশনিশবদমন্দলিঃ। ঘনাগমঃ কামিজনপ্ৰিয়ঃ প্রিয়ে ৷ বর্ষার এতাদশ রােপবর্ণনা ইউরোপীয় সাহিত্যে নেই। কারণ এ ঋতু ও-বেশে সে দেশে প্রবেশ করে না। ইংলন্ডে দেখেছি, সেখানে বলিট আছে কিন্তু বর্ষা নেই। বিলিতি প্রকৃতি সদাসবাদা মখ ভার ক’রে থাকেন এবং যখন তখন কাঁদতে শর করেন, আর সে কান্না হচ্ছে নাকে-কান্না, তা দেখে প্রকৃতির উপর মায়া হয় না, রাগ ধরে। সে দেশে বিদ্যুৎ রণপতাকা নয়-পিন্দিমের সলতে, তার মাখের আলো প্রকৃতির অট্টহাস্য নয়- রোগীর মাখের কািটহাসি। আর সে দেশের মেঘের ডাক অশনিশব্দমদল নয়, গাব-চটা বাঁয়ার বকচাপা গ্যােঙরানি। এক কথায় বিলেতের বৰ্ষা থিয়েটারের বর্ষা। ও গোলাপপাশের বলিটিতে কারো গা ভেজে না, ও টিনের বজধবনিতে কারো কান কালা হয় না, ও মেকি বিদ্যতের আলোতে কারো চোখ