পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W9 Vy প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ বহিজগতের অধীন, সেই অংশে এবং সেই পরিমাণে তা বন্ধ; এবং যে অংশে ও যে পরিমাণে তা স্বাধীন সে অংশে ও সে পরিমাণে তা মন্ত। আমরা যখন বহিজগতের সত্যসন্দরমণ্ডগলের কেবলমাত্র দ্রািন্টা, তখন আমরা বন্ধ জীব; এবং আমরা যখন নতন সত্যসন্দরমণ্ডগলের স্রস্টা, তখন আমরা মন্ত জীব। যাঁর স্বাধীনতা নেই তাঁর সাহিত্যে কোনো কিছরই সন্টি করবার ক্ষমতা নেই। তিনি বড়ো জোর বিশেবর রিপোর্টার হতে পারেন, তার বেশি নয়। ধম প্ৰবতক কবি আর্টিসন্ট প্রভাতিই মানবের যথাৰ্থ শিক্ষক, কেননা তাঁরাই মানবসমাজে নািতন প্রাণের সম্প্রচার করেন। এই কারণে যিনি যথাৰ্থ কবি তিনি সমাজের ফরমায়েশ খাটতে পারেন না, তার জন্য যদি তাঁকে আত্মম্পভাঁর বল তাতে তিনি আত্মনিভািরতা ত্যাগ করবেন না। যে দেশে আত্মার সাক্ষাৎকার লাভ করাই সাধনার চরম লক্ষ্য বলে গণ্য, সে দেশে কবিকে আত্মতান্ত্রিক বলে নিন্দা করা বড়োই আশচয্যের বিষয়। 8 দেশকালের ভিতর সম্পৰ্ণে বদ্ধ না করতে পারলে অবশ্য জড়বস্তুর সঙ্গে মানবমনের ঐক্য প্রমাণ করা যায় না। মেটিরিয়ালিজমের পাকা ভিতের উপর খাড়া না করলে রিয়ালিজমের গোড়ায় গলদ থেকে যায়। অতএব রাধাকমলবাব, কবিপ্রতিভাকে কেবলমাত্র স্বদেশ নয়, সবকালেরও সম্পপণ্য অধীন করতে চান। তিনি বলেন সাহিত্যের চরম সাধনা হইয়াছে যােগধম প্রকাশ করা, নবযাগ আনয়ন করা। যদি তাই সত্য হয়, তা হলে মহাভারতাদি ব্যতীত অপর কোনো কাব্য সবদেশী এবং জাতীয় নয়, এ কথা বলবার সার্থকতা কি ? ও-জাতীয় কাব্য আমরা রচনা করতে পারি নে, কেননা আমরা ত্রেতা কিংবা দ্বাপর যাগের লোক নই। ন্যাশনাল এপিক রচনা করা এ যাগে অসম্পভব, কেননা ও-সকল মহাকাব্যকে অপৌরষেয় বললেও অত্যুক্তি হয় না। এরােপ সাহিত্য কোনো-এক ব্যক্তির দ্বারা রচিত হয়। নি। যাগে যাগে পরিবতিত ও পরিবর্ধিত হয়েই ভারতী-কথা মহাভারতে পরিণত হয়েছে। যােগধম যাই হোক, কোনো অতীত যাগের পনরাবত্তি করা কোনো যাগেরই ধম নয়। যদি যােগধম অনসরণ করতে হয়, তা হলে এ যাগে ক পক্ষে বিদেশী এবং বিজাতীয় ভাববজিত সাহিত্য রচনা করা অসম্পভব, কেননা আমরা বাংলার মাটিতে বাস করলেও বিলাতের আবহাওয়ায় বাস করি। আমাদের মনের নবদ্বার দিয়ে ইউরোপীয় মনোভাব অহনিশি আমাদের হৃদয়ের গভীরতম প্রদেশে প্রবেশ করছে। কাজেই ষগধম অনসারে আমরা আমাদের সাহিত্যে একটি নব এবং মিশ্র মনোভাব প্রকাশ করে থাকি। আমাদের সাহিত্যের গণও এই, দোষও এই। এ সাহিত্যের গািণাগণ এই দেশী-বিলাতি মনোভাবের যথাযথ মিলনের উপর নিভাির করে। দ্য ভাগ হাইড্রোজেনের সঙ্গে এক ভাগ অক্সিজেন মিশ্রিত হলে জলের সন্টি হয়; যা পান করে মানবের পিপাসা নিবারণ হয়। অপর পক্ষে দ। ভাগ অক্সিজেনের সঙ্গে এক ভাগ হাইড্রোজেন মিশ্রিত হলে যে বাপের সন্টি হয়,