পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বস্তুতন্ত্রতা বস্তু কি VG তা নাকে-মাখে ঢািকলে হয়তো আমরা দম আটকে মারা যাই। শােধ, তাই নয়, মাত্রা ঠিক থাকলেও হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনে মিলে জল হয় না, যদি না তাদের উভয়ের রাসায়নিক যোগ হয়। অর্থাৎ যদি না ও-দটি ধাতু পরস্পর পরস্পরের ভিতর সম্পপণ্য অন্য প্রবিন্স্ট হয়। এই রাসায়নিক যোগসাধনের জন্য বৈদ্যুতিক শক্তির সাহায্য চাই। সতরাং এই দেশী-বিলাতি ভাবের মিশ্রণে এ যাগের সাহিত্যে অমত ও বিষ দইই রচিত হচ্ছে। যে মনের ভিতর আত্মার বৈদ্যুতিক তেজ আছে, সে মনে এ যাগের রাসায়নিক যোগ হয়; এবং যে মনে সে তেজ নেই, সেখানে এ দাই শােধ মিশে যায়, মিলে যায় aNT যগধম প্রকাশ করাই সাহিত্যের চরম সাধনা, এ কথা সত্য নয়। তার কারণ, প্রথমত, যােগধম বলে কোনো যাগের একটিমাত্র বিশেষ ধৰ্ম নেই। একই যাগে নানা পরস্পরবিরোধী মতামতের পরিচয় পাওয়া যায়। দ্বিতীয়ত, মন-পদার্থটি কোনো বিশেষ কাল সম্পপণ্য গ্ৰাস করতে পারে না। আত্মা এক অংশে কালের অধীন, অপর অংশে মন্ত ও স্বাধীন। কাব্য ধম আর্ট প্রভাতি মন্ত আত্মারই লীলা। সতরাং ইতিহাস এই সত্যেরই পরিচয় দেয় যে, প্রতি যাগের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যে সমসাময়িক যােগধম পরীক্ষিত এবং বিচারিত হয়েছে। নব যােগধম আনয়ন করা যদি সাহিত্যের চরম সাধনা হয়, তা হলে সাহিত্য বর্তমান যােগধম অতিক্রম করতে বাধ্য। যে আদর্শ সমাজে নেই, সে আদশের সাক্ষাৎ শােধ মনশচক্ষতে পাওয়া যায় এবং জীবনে নতেন আদশের প্রতিষ্ঠা করতে হলে সমাজের দখলিস্বত্ববিশিস্ট আদশের উচ্ছেদ করা দরকার, অর্থাৎ যােগধমের বিরোধী হওয়া আবশ্যক। বানান্ড শ অবজ্ঞার সহিত বলেছেন যে তিনি 'art for art'এর দলের নন। তার কারণ, তিনি এবং তাঁর গাের ইবসেন ইউরোপে সভ্যতার নবযাগ আনয়ন করাই জীবনের ব্রত করে তুলেছেন। এদের রচিত নাটকাদি যে সাহিত্য, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে সে যে কতটা তাঁদের মতের গণে এবং কতটা তাঁদের আর্টের গণে, তা আজকের দিনে বলা কঠিন। কেননা, তাঁরা যে সামাজিক সমস্যার মীমাংসা করতে উদ্যত হয়েছেন, তার সঙ্গে সকলেরই সামাজিক সাবাথ জড়িত রয়েছে। এ কথা বোধ হয় নিভয়ে বলা যেতে পারে যে, এ শ্রেণীর সাহিত্যে শক্তির অনরপে শ্রী নেই। সাহিত্যকে কোনো-একটি বিশেষ সামাজিক উদ্দেশ্যসাধনের উপায় স্বরপ করে তুললে তাকে সংকীর্ণ করে ফেলা অনিবায। আমরা সামাজিক জীব, অতএব নািতন-পরিাতনের যন্ধেতে একপক্ষে-না-একপক্ষে আমাদের যোগ দিতেই হবে, কিন্তু আমাদের সমগ্র মনটিকে যদি আমরা এই যন্ধে নিয়োজিত করি তা হলে আমরা সনাতনের জ্ঞান হারাই। যা কোনো-একটি বিশেষ যাগের নয়, কিন্তু সকল যাগেরই হয়। সত্য নয় সমস্যা, তাই হচ্ছে মানবমনের পক্ষে চিরপরাতন ও চিরনােতন, এক কথায় সনাতন । এই সনাতনকে যদি রাধাকমলবাব নিত্যবস্তু বলেন, তা হলে সাহিত্যের যে নিত্যবস্তু আছে। এ কথা আমি অস্বীকার করব না; কিন্তু ইউরোপের বস্তুতান্ত্রিকেরা তা অগ্রাহ্য করবেন। একান্ত