পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] যুক্ত হইলেন ; এই দুই মহাপুরুষের আত্মা যেন কেশবচন্দ্রের অন্তরে শক্তিসঞ্চার করিল। তাই কেশবচন্দ্র বিশ্বাসে পাহাড়ের ন্তায় অটল হইয়া ঈশ্বরের স্বৰ্গরাজ্য বিস্তার করিতে লাগিলেন এবং ভাবোন্মত্ত বৈষ্ণবের মত প্রেমে মত্ত হইয়া ভক্তি প্রচার করিতে আরম্ভ করিলেন। কেশবচন্দ্রের ভক্তি ও মত্ততা সম্বন্ধে ভক্ত চিরঞ্জীব শৰ্ম্ম মহাশয় লিখিয়াছেন— “পায়ে নুপুর হাতে সোনার বালা পরিয়া যখন হরিসঙ্কীৰ্ত্তনে মাতিতেন, তখন থামাইয়া রাখা ভার হইত। হুঙ্কার, গর্জন, নৃত্য কিছুই বাকী ছিল না । * * ভক্তিমার্গের শাস্ত দাস্ত, সখ্য, বাৎসল্য এবং মাধুর্ঘ্যরস তিনি ব্রাহ্মসমাজের শুষ্ক দেহে সঞ্চার করিয়া গিয়াছেন।” শ্ৰীঅমৃতলাল গুপ্ত। ভ্রমণ-কাহিনী ডেরাদুন-মুশুর । সেদিন হরিদ্বারের ষ্টেসন প্লাটফরমে পাইচারি করিতেছিলাম, এমন সময় ডেরাদুন হইতে লক্সারের গাড়ী আসিল। গাড়ীটীতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কামরাই বেশী, অথচ হরিদ্বার হইতে মধ্যম শ্রেণী ও তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রী বিস্তর উঠিল । গাড়ীতে তাহদের স্থান হয় না—এক কামরা হইতে তাড়া থাইয়া অন্ত কামরায় ছুটিয়া যায়, আবার সেখানে ঢুকিতে পায় না। যাত্ৰিগণের মধ্যে অধিকাংশই বৃদ্ধাস্ত্রীলোক, তাহদের কষ্ট দেখিয়া মনে অত্যন্ত ক্লেশ হইল। রেলওয়ে কোম্পানী তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীর সুবিধা অসুবিধার কথা চিন্তা করিয়া মস্তিষ্কের অপব্যয় করিতে রাজি নহেন অথচ এই তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীর পয়সাতেই কোম্পানি চলিতেছেন ; প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীর নিকট হইতে র্তাহারা কয়ট টাকা পান ? যাহা হউক, এই বৃদ্ধ তীর্থযাত্ৰিগণের নিকট হইতে আমাদের অনেক শিথিবীর আছে। ইহারা যাহা বিশ্বাস করে তাছার জন্ত দেখ কত না কষ্ট যন্ত্রণ সহ করিতেছে, কিন্তু শিক্ষাভিমানী নব্য বঙ্গীয় আমরা আমাদের বিশ্বাসের জন্ত কি কষ্ট সহ করি, কোন মুখ ত্যাগ করি ? বন্ধু বলিলেন— “We have opinions but have no faith.” अभ*-कांश्निौ > రి సె আমাদের কতকগুলা মতামত থাকিতে পারে কিন্তু যাহাকে বিশ্বাস বলে তাহার কিছুই আমাদের নাই। 鬱 橡 攣 橡 灣 হরিদ্বার হইতে ডেরাদুন ৩২ মাইল। রেললাইন গঙ্গা ছাড়িয়া উত্তর-পশ্চিম মুখে চলিয়া গিয়াছে। হৃষিকেশ রোডের তাম্রাভ শুষ্ক কাশপুষ্পের জঙ্গল ছাড়াইয়া গাড়ী দইওয়ালা ও হরওয়ালার বৰ্দ্ধিষ্ণু গ্রাম এবং ধান ও জোয়ারের বড় বড় ক্ষেতের মধ্যে আসিয়া পড়িল । মাঝে মাঝে সুবর্ণ বর্ণ সরিষার ক্ষেত নেত্রভৃপ্তি বৰ্দ্ধন করিতেছিল। কিছুক্ষণ পরে ডেরাদুন নগরে আসিয়া পড়িলাম। বেলা তখন ১০টা, স্নানাহার সারিয়া একটু সহর বেড়াইয়া ওবেলা মুগুর যাইব মনস্থ করিলাম। ডেরাদুনে বসিয়া সময় নষ্ট করিবার ইচ্ছা ছিল না কেননা আসিবার সময় হরিদ্বার ষ্টেসনে একটা বৃদ্ধ বাঙ্গালী ভদ্রলোকের সহিত সাক্ষাৎ হয়। আমরা ডেরাদুন বেড়াইতে যাইতেছি গুনিয়া তিনি বলিলেন “তার চেয়ে একটা কাজ করুন। যে কয়ট টাকা খরচ হইবে আমাকে দিন, আমি একটা ডেরাদুনের কেচ্ছা বলিয়া দিতেছি, আপনাদের যাইবার কষ্ট বাচিয়া যাইবে । সেখানে গিয়া আর দেখিবেন কি ? একটা সামান্ত পশ্চিমে সহর মাত্র । তবে কিছু দেখিবার সাধ থাকে ত মুণ্ডরী পাহাড়ে যান।" ভদ্রলোক তিন মাস ধরিয়া ভারতের নানা স্থান পর্য্যটন করিয়া বেড়াইতেছেন। আজ কাল অনেক বাঙ্গালীর দেশ ভ্রমণের সখ দেখিতে পাওয়া यग्नि । ষ্টেসনের নিকটেই গুরুদ্বার ও তৎসংলগ্ন ধৰ্ম্মশালা । এই স্থানে উদাসীন-সম্প্রদায়স্থ শিখগণের গুরু বা মোহস্ত বাস করেন। তাহার ধৰ্ম্মশালায় উপস্থিত হইবামাত্র সেখানকার একজন কৰ্ম্মচারী আসিয়া বলিল, “আপনার এখানে আসিলেন কেন ? এখানে আপনাদের বহুৎ তক্লিফ হুইবে । কোনও বাঙ্গালী এখানে কখনও থাকে না । আপনার বাঙ্গালী-পাড়ায় যান—সেখানে খুব আরামে থাকিবেন ইত্যাদি ইত্যাদি ।” এখন কোনও ভদ্রলোককে অকারণ ব্যস্ত করিতে আমরা সম্মত ছিলাম না, কাজেই এলোকটী আমাদের থাকা সম্বন্ধে আপত্তি করায় অসন্তুষ্ট ও বিস্মিত হুইলাম। শেষে সে যখন বলিল “আপনাদের বড় কই