পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] মুকুমারীর বুকের উপর শোয়াইয়া দিল। মুকুমারী মাতৃহৃদয়ের অন্তিম উচ্ছ,াসে খোকাকে বক্ষের উপর টানিয়া লইতে চেষ্টা করিল—কিন্তু এই আবেগে তাহার শেষ বক্ষম্পন্দন স্তব্ধ হইয়া গেল। . নবীন উষার প্রথম স্বর্ণরশ্মিরেথ গবাক্ষপথে আসিয়া সদ্যোমৃতের পাণ্ডু মুখের উপর পড়িয়াছে। তরুণ স্বৰ্য্যালোকে সেই মৃত্যুচ্ছায়াসমাচ্ছন্ন বিবর্ণ মুখমণ্ডল দেখিয়া থোক ভয়ে কঁপিয়া উঠিল—আকুল ভাবে “ম ! মা !” বলিয়া মনোরমার দিকে তাতার ক্ষুদ্র বাহু প্রসারিত করিল। আবেগপূর্ণ হৃদয়ে “এস বাবা এস” বলিয়৷ মুকুমারী তাহাকে আপনার উদ্বেলিত হৃদয়ের উপর টানিয়া লইল । থোকা সেই শান্তিময় স্নেহনীড়ে আশ্রয় পাইয়া ক্ষণকাল পরে র্কাপিয়া কাপিয়া ঘুমাইয় পড়িল । মনোরমার প্রশান্ত নয়নতট মেহোচ্ছ,াসে অশ্রুপূর্ণ হইয়া উঠিল ! ( & ) সুকুমারীর অস্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ব্যবস্থা করিয়া দিয়া শিশুটিকে বক্ষে লষ্টয় মনোরম যখন দ্বিজেন্দ্রনাথের সম্মুখে আসিয়া দাড়াইল তখন দ্বিজেন্দ্রনাথ মনোরমাকে দেখিয়া আপনার অজ্ঞাতসারে সসন্ত্রমে উঠিয়া দাড়াইলেন। কি মহামহিমাময়ী রাজরাজেশ্বরীরূপিণী দেবীমূৰ্ত্তি ! কোথায় সে চঞ্চল চটুলত, কোথায় সে মৰ্ম্মভেদী বিদ্ধপপূর্ণ তীক্ষ থর-দৃষ্টি, কোথায় সে হৃদয়হীন উপেক্ষার তুষারশিলা ! চঞ্চলত গাম্ভীর্য্যে ঢাকিয়া গেছে, নিষ্ঠুর কৌতুকপ্রিয়তার তীক্ষ্ণ বিদ্যুৎ বাৎসল্য ও প্রেমের স্নিগ্ধ মেঘতলে অস্তৰ্হিত হইয়াছে—রুঢ় অবিশ্বাস এবং মৰ্ম্মভেদী অবজ্ঞার কণ্টকরজির উপর ভক্তিবিশ্বাসের খাম শস্তরাজি নীরবে মন্তক উত্তোলন করিয়াছে ! স্তম্ভিত দ্বিজেন্দ্রনাথ বিস্মিত দৃষ্টিতে মনোরমার মুখপানে চাহিয়া চাহিয়া দেখিল— আর সে মনোরম নাই! মাতৃত্বের “সোনার কাঠির” পশ গুণে বনবিহুঙ্গিনী স্বেচ্ছায় আজ পিজরবাসিনী— “কপালকুণ্ডলা” “স্বৰ্য্যমুখী"তে পরিণত ! * দ্বিজেন্দ্রনাথের হৃদরের জালা জুড়াইল। খোকা "পন্ধিপত্র" রূপে উভয়ের মধ্যে আজ অকস্মাৎ মিলন ঘটাইয়া cजहस्त्र बिऊंब ➢ >ዓ দিল। এমন কঠিন লোহাকেও সোনা করিয়া তুলিল খোকা “ম্পর্শমণি” । ঐযতীন্দ্রমোহন গুপ্ত। সেন্তে বিউব উনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপে যে সকল সাহিত্য-সমালোচক প্রাজুভূত হইয়াছিলেন, ফরাসী সেন্তে বিউল তাহাদিগের অন্ততম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি । ১৮০৪ খুঃ অব্দে একটী দরিদ্র পরিবারে তাহার জন্ম হয় এবং ৬৫ বৎসর বয়সে র্তাহার মৃত্যু হয়। তিনি ধনলালসা ও পদগৌরবম্পূহ বিসর্জন দিয়া কায়মনোবাক্যে সাহিত্যেব সেবা করিয়াছিলেন,— সাহিত্য র্তাহাকে জগতের বরণীয় করিয়া তুলিয়াছে। চিন্তার ও ভাবের রাজ্যে র্তাহার হৃদয়ের অসংখ্য পরিবর্তন সংঘটিত হইয়াছিল। র্তাহার গ্রন্থাবলী পাঠ করিলে মনে তয় যেন সাগরের অসংখ্য উৰ্ম্মিমালার অবিশ্রান্ত ক্রীড়া চলিতেছে । তাঙ্গার প্রতিভার সহস্ৰ চঞ্চল তরঙ্গে সমাজকে অবাক করিয়া তুলিয়াছে ও তাঙ্গাকে তৎযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ সমালোচকের গৌরবে গৌরবান্বিত করিয়াছে । তিনি অবিবাচিত ছিলেন, তাহার বংশলোপ হইয়াছে, কিন্তু কীৰ্ত্তিলোপ হইবে না। তিনি সমালোচনার রাজ্যে সেবানীতির প্রকৃষ্টত প্রদর্শন করিয়াছেন। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ পর্য্যস্ত ইউরোপে ক্লাসিকেল সাহিত্যের বিশেষ প্রতিপত্তি ছিল । অবশু ইতিপূৰ্ব্বে, এমন কি ষোড়শ শতাব্দীতেও সেক্ষপিয়র-প্রমুখ প্রতিভাবান লেখক সময়ে সময়ে ক্লাসিকেল আদর্শের নির্দিষ্ট গওঁীর বাহিরে গমন করিয়াছেন, তবুও বলিতে হয় যে রুসোলিথিত Emile গ্রন্থের পূৰ্ব্বে “Back to Nature” প্রকৃতিতে-প্রত্যাবর্তন-পন্থী লেখকের যুগ বিশেষভাবে স্থাপিত হয় নাই। রুসো যখন এমিলিকে প্রকৃতির ক্রোড়ে লালিত পালিত করিয়া বিকশিত করিয়া তুলিলেন, তখন এষ্ট নব্যপন্থার প্রতি ইউরোপের সাহিত্য-সমাজের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। তখন সুধীসমাজ দেখিতে পাইলেন যে ক্লাসিকেল আদর্শের ভাব, ভাষা ও বস্তুনির্ণয়ের নির্দিষ্ট নিয়মবদ্ধ প্রণালীর ভিতর দিয়া সাহিত্যে স্বাধীন প্রবৃত্তি প্রস্ফুটিত