পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] “মৃত্যুর পূৰ্ব্বে আর কি তিনি দিবালোকে বাহির হইয়া আসিতে পারিবেন না ?” “না ; সৰ্ব্বাপেক্ষা কঠিনতম যে সংকল্প তাছাই তিনি গ্রহণ করিয়াছেন—শবে পরিণত হইবার পূৰ্ব্বে আপনার আশ্রম ত্যাগ না করার যে পবিত্র সত্য তাহাকেই তিনি বরণ করিয়া লইয়াছেন।” “র্তাহার বয়ক্রম কত ?” “র্তাহার বয়স কত আমরা জানি না, তাহাকে চল্লিশ বৎসবের মত দেখায় ।” “কিন্তু তিনি অমুস্থ হইয়া পড়িলে কি হয় ? তাহার কি সাহায্য পাটবার কোনো উপায় থাকে না ?” মতুষ্যের সহিতই তাহার বাক্যালাপ চলিতে পারে না । অসুস্থ হইয়া পড়িলে সারিয়া উঠা অথবা মরিয়া যাওয়া পর্যাস্ত ধৈর্য্যের সহিত অপেক্ষা করা ছাড়া আর তাহার কোনো উপায় নাই।" “তলে তিনি কেমন আছেন, সে কথা আপনারা কখনই জানিতে পারেন না ?” “না, মৃত্যুর পূৰ্ব্বে নহে। প্রতিদিন একবাটি ৎসম্ব (এক প্রকার ভাজা ছাতু ) এবং প্রতি ষষ্ঠ দিনে একবাটি চা ও মাখনের এক টুকরা রন্ধ-পথে তাহার কক্ষে প্রবেশ কুরাইয়া দেওয়া চয় ; রাত্রে আহারের পর ཨཱ5) পাত্র পরদিন আচার্য্যের জন্ত তিনি বাহির করিয়া দেন। রন্ধমুখে ভোজনপার অস্পৃষ্ট অবস্থায় থাকিতে দেখিলে আমরা বুঝি সংরুদ্ধ পুরুষ স্বস্তু নাই। দ্বিতীয় দিনও থান্ত স্পর্শ না করিলে আমাদের আশঙ্কা বাড়িয় উঠে ; উপযুপিরি ছয়দিন আহাৰ্য্য এইরূপ অস্পৃষ্ট অবস্থায় পড়িয়া থাকিলে তাহাকে মৃত স্থির করিয়া আমরা প্রবেশদ্বার ভাঙ্গিয়৷ ফেলি।” “এরূপ কি বাস্তবিক কখনও ঘটিয়াছে ?” “হঁ; তিন বৎসর পূৰ্ব্বে একজন লামা দেহত্যাগ করিয়াছেন, তিনি দ্বাদশ বর্ষ ঐ কক্ষে যাপন করিয়া গেছেন। পনর বৎসর পূৰ্ব্বে আর একজন মারা গিয়াছেন, চল্লিশ বৎসর তিনি নির্জনে ছিলেন, বিশ বৎসর বয়ক্রমের সময় তিনি অন্ধকারে প্রবেশ করেন। লং-গান্‌ডেন-গোম্প মঠে যে লামা উনসত্তর বৎসর পৃথিবীর সংসর্গ এবং দিবা “না ; অপর কোনো সংকলন ও সমালোচন - সংরুদ্ধ সন্ন্যাসী b(tఫి লোক হইতে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে রুদ্ধ করিয়া রাখিয়াছিলেন তাহার কথা মহাশয় অবশুষ্ট গুনিয়াছেন ।” “কিন্তু যে সন্ন্যাসী ‘ৎসম্বা’-পাত্র ছিদ্রপথে ভিতরে প্রেরণ কবেন, তাহার সহিত বন্দীর বাক্যালাপ করার কি সম্ভাবনা নাই ? সমস্তই ধে যথাযথ হৃষ্টতেছে--তাঙ্ক! দেখিলার জন্ত সেখানে ত আর কোনো সাক্ষী উপস্থিত থাকে না ।” আমার সংবাদদাতা ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন “তাহ কথন ৪ ঘটিতে পারে না, তাহা কখনও ঘটিতে দেওয়া হয় না । বাহিরের সন্ন্যাসী রন্ধ পথে মুখ দিয়া ভিতরের সন্ন্যাসীর সঠিত কথা বলিবার চেষ্টা করিলে চিরদিনের জদ্য র্তাহার আত্মা অভিশপ্ত হইবে –ভিতরের সন্ন্যাসী একবার কথা বলিলে তাহার সাধন নষ্ট হষ্টয়া যাইবে । একটি কথা বলিলে তাহার এক্ট তিন বৎসরের তপস্তা একবারে বৃথা কইয়া যাঠবে, কে আর তাহা ইচ্ছা করে ?-- কিন্তু লিঙ্গ অথবা সামদেপুকে কোনো লামা অসুস্থ হইয়৷ পড়িলে তিনি র্তাহার রোগের বিবরণ ও সংরুদ্ধ সন্ন্যাসীর মধ্যস্থতার জন্ত অঙ্কুরোধ এক খণ্ড কাগজে লিখিয়া ৎসম্বাপাত্রের সহিত রন্ধ পথে ঠেলিয়া দিতে পারেন । পীড়িত ব্যক্তির জন্ত সংরুদ্ধ পুরুষ তখন প্রার্থনা করেন এবং প্রথমোক্তের • যদি প্রর্থনার শক্তির প্রতি শ্রদ্ধা থাকে এবং ইতিমধ্যে যদি তিনি কোনো অযোগ্য বিষয়ে বাক্যালাপ না করেন তবে দুইদিন পরে লামা রিমপোচির প্রার্থনায় ফল হয় এবং পীড়িত ব্যক্তি পুনরায় আরোগ্যলাভ করেন। কিন্তু সংরুদ্ধ সন্ন্যাসী লিখিয়া নিজের কোনো সংবাদ কাহাকেও প্রেরণ করেন না ।” “আমরা এখন তাহার কাছ হইতে দুই এক পা মাত্র দূরে আছি। আমরা যাহা বলিতেছি তাহা কি তিনি শুনিতে পাইতেছেন না ?—অন্তত কেহ যে র্তাহার গুহার বাহিরে দাড়াইয়া কথা বলিতেছে তাহা ত তিনি বুঝিতে পারিভেচ্ছন ?” “না ; এ দেয়াল এত পুরু যে আমাদের কণ্ঠস্বর ভিতরে পৌছাইতে পারে না—পৌছাইলেও তিনি শুনিতে পাইবেন না, কেননা তিনি সমাধিতে মগ্ন আছেন ; হয় ত দিনের পর দিন, রাত্রির পর রাত্রি গৃহের এক কোণে