পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○>之 বিধান। বিধাতার নিৰ্ব্বন্ধে কিছুদিনের পরে দরবেশপুরের মজুমদার পরিবারে দুঃখের কালরাত্রি ঘনাইয়া আসিল । নায়েব হরিশ্চন্দ্র মজুমদার দুশ্চিকিৎস্ত বাতরোগে পঙ্গু হইয়৷ জীবনের সন্ধা সমাগমের বহু পুৰ্ব্বেই ইহলোক ত্যাগ করিলেন । হরিশ্চন্দ্র অমিতবায়ী ছিলেন ; সঞ্চয় আয়ের বাহুল্যে নহে, ব্যয়ের সংকোচে ; তিনি কোন দিন ব্যয় সঙ্কোচ করিতে শেখেন নাই, তাই মৃত্যুকালে নগদ টাকাকড়ি বিশেষ কিছু রাখিয়া যাইতে পারেন নাই ; যে কিছু নগদ টাকা ছিল, মহা সমারোহে তাহার শ্রাদ্ধ করিতেই তাহ। নিঃশেষিত হইল। তাছার আত্মার সদগতির জন্ত তিন দল কীৰ্ত্তনওয়াল মৃদঙ্গধানিতে ক্ষুদ্র দরবেশপুর গ্রামখানি মুখরিত করিয়া তুলিল । পিতার মৃত্যুর পর হারাণচন্দ্র পিতার চাকরীটি পাইবার জন্ত সাহেব সরকারে উমেদারী করিল, কিন্তু তাহাতে কোনও ফল হইল না । ম্যানেজার সাহেব তাহাকে জানাইলেন, তাহার দ্যায় জমিদারী কার্য্যে অনভিজ্ঞ তরুণবয়স্ক যুবক দায়িত্বপূর্ণ নায়েব পদ প্রথমেই পাইতে পারে ন, তিনি তাহাকে পেস্কারের পদে নিযুক্ত করিতে পারেন, ক্রমে জমিদারী সংক্রান্ত কার্য্যে তাতার অভিজ্ঞতা জন্মিলে ভবিষ্কাতে সে নায়েবী পাইতে পারে । নায়েবের পুত্র নায়েবীর পরিবর্তে পেস্কার লইতে সন্মত হইল না, কারণ এই পদের বেতন তেমন অধিক নহে, তাহার উপর তাহাতে কিছুমাত্র স্বাধীনতা ছিল না ; বিশেষতঃ সৰ্ব্বদা সাহেবের নিকট থাকা তেমন প্রার্থনীয় নহে । এই সকল ভাবিয়া হারাণচন্দ্র হতাশ মনে বাড়ী আসিয়া গৃহিণীর অঞ্চলচ্ছায়ার আশ্রয় লইল । অতঃপর পিতৃব্য মুকুন্ধচন্দ্রের পক্ষে মাসিক কুড়ি টাকা আয়ে সংসারযাত্রা নিৰ্ব্বাচ্চ করা কঠিন হষ্টয়া উঠিল ; তিনি দুই একবার হারাণকে সাহেবদের পেস্কারাটা লইবার জন্ত অনুরোধ করিলেন, কিন্তু হারাণ র্তাহার কথায় কর্ণপাত করিল না ; সে বলিল, পচিশ টাকার কেরাণীগিরি করিবার জন্ত সে বিদেশে গিয়া পড়িয়া থাকিতে পারিবে না, তাহাতে জাতিও যাইবে, পেটও ভরিবে না । মুক্তকেশী দেখিলেন, তাহার স্বামীর উপার্জিত প্রবাসী—পৌষ, ১৩১৭ [ ১০ ম ভাগ, ২য় খণ্ড টাকাগুলি আর সেবিংস ব্যাঙ্কের খাতায় প্রবেশ করিতে পারে না, সংসার খরচেই সকল ফুরাইয়া যায় ! তাহার চাঞ্চল্য বৰ্দ্ধিত হইল । অবশেষে তিনি আর অসন্তোষ গোপন করিতে পারিলেন না, ঘাটে পথে পল্লীবাসিনীগণকে বলিতে আরম্ভ করিলেন, “দেখদেখি হারাণের আকেলখান ! ছ পয়সা রোজগার করবার ‘ক্ষ্যামতা’ নেই, সাত, গুষ্টিতে মিলে গিলবে। আমাদের উনি মাসে কুড়ি টাকা মাইনে পান, সংসারে রাজ্যের মমুষ্যি, বুড়ে মামুষ ভেবে ভেবে আধখানা হয়ে গিয়েছেন ।” * হরিশ্চন্দ্রের মৃত্যুর দুই মাস পরে মুকুন্দ হাল ছাড়িয়া দিলেন, হরাণকে বলিলেন, “বাপু, আমি যতদিন পারিলাম, আমার সামাঙ্গ আয়ে সংসার চালাইলাম, এত বড় সংসার প্রতিপালন করা অাব আমার অসাধ্য। তুমি ত চাকরীবাকরী কিছু করিবে না ; তুমি নিজের সংসারের ভার নিজে লও, আমাদের যে কিঞ্চিৎ জমীজমা আছে পাচজনকে ডাকিয়া ভাগ বাটোয়ার কবিয়া লও।” হারাণ বলিল, “বাবা এতকাল আপনাদের পুষিলেন, আর তিনি মরিতে ন মরিতে আপনি আমাকে পৃথক করিয়া দিবার জন্ত ব্যস্ত হুইয়া উঠিয়াছেন । উত্তম, আমি পৃথকই হইব, কিন্তু বাবা যাহা কিছু করিয়া গিয়াছেন আমি আপনাকে তাহার অংশ দিব না। ভদ্রাসন বলুন, বাগান বলুন, জোতঙ্গম পুষ্করিণী, সকলই বাবার স্বোপার্জিত সম্পত্তি, এ সকল তাহার উপার্জনের টাকায় হইয়াছে, আপনি কোন হিসাবে তাহার অংশ চান ? ঘোল থাবে হরিদাস, আর মাধাই দেবে কড়ি ?” বৃদ্ধ পিতৃব্যের সহিত এরূপ উদ্ধত আলাপ শিষ্টাচারসঙ্গত নহে, কিন্তু সামাজিক শিষ্টাচারের সহিত হারাণের পরিচয় ছিল না ; সে মনে করিত, তাহার পিতার গলগ্ৰহ গ্রাম্য সবৃরেজেষ্ট্রী অফিসের বিশ টাকা মূল্যের কেরাণী তাহার নিকট শ্রদ্ধা ও সন্মানের দাবী করিতে পারে না ! মুকুন্দ ভ্রাতুপুত্রের কটুক্তিতে কিছুমাত্র বিচলিত না হইয়া বলিলেন, “আমি যে আজ এষ্ট বিশ বাইশ বৎসর ধরিয়া চাকরী করিতেছি, আমি কি সংসারের জন্ত কিছুই ব্যয় করি নাই ? তোমার বাবা বিদেশে চাকরী করিতেন, BBB BB BB BBBS BB BBu DD DHHHHH