পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○〉8 জমি খুড়া ভাইপোর মধ্যে এক দুস্তর ব্যবধান স্বষ্টি করিয়া বিধাতার অভিশাপের মত পড়িয়া রঙ্গিল । এবং সামান্ত সামান্ত ব্যাপার লইয়া উভয় পরিবারে তুমুল কলহের উৎপত্তি হইতে লাগিল । মা লক্ষ্মী চঞ্চল চষ্টয়া উঠিলেন। মুকুন্দ ও গরাণ উভয়েই পরস্পরকে অপরাধী মনে করিতে লাগিলেন, কিন্তু জমিটুকুর লোভ ছাড়িয়া শান্তিলাভ করা কাহারও সঙ্গত মনে হইল না । সকল অপেক্ষ বিপদ হইল মাণিকের ; ঠাকুরদাদার কোলটি হঠাৎ বাজেয়াপ্ত হওয়ায় সে মনে বড় বেদন পাইল, ইঙ্গই সে সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক দুর্ভাগ্যের বিষয় মনে করিতে লাগিল । কিন্তু যে ক্রোড়ে সে আজন্ম বৰ্দ্ধিত হইয়াছে—সহজে তাঙ্কার লোভ ছাড়িতে পারিল না, তিন কাঠা বিবাদী জমি অপেক্ষা তাহার মূল্য তাহার নিকট অনেক অধিক । একদিন অপরাহ্লে হারাণ ভ্রমণে বাহির হইবে, এমন সময় সে দেখিতে পাইল মাণিক ধীরে ধীরে নামিয়া তাঙ্কার ঠাকুরদাদার ঘরের দিকে যাইতেছে —অদূরে পিতাকে দেখিয়া মাণিক ভয়ে জড় সড় হইয়া দাড়াইল । হারাণ জিজ্ঞাসা করিল, “মাণকে, কোথায় যাচ্ছিস্ রে ?” মাণিকের বয়স তখন পাচ বৎসর মাত্র, সে তখনও মিথ্যা কথা বলিতে শেখে নাই, ভয়ে ভয়ে বলিল, “ঠাকুরদাদার কাছে ।” হারাণ গর্জন করিয়া বলিল, “আর ঠাকুরদাদার কাছে যেতে হবে না । ঠাকুরদাদা বডড ভালবাসে ! ফের যদি ওমুখে হবি ত জুতিয়ে হাড় গুড়ো করে দেব।” হারাণের কঠোর কথাগুলি মুকুন্দের কর্ণে প্রবেশ করিল, তিনি তখন ঘরে বসিয়া ভাগবত পাঠ করিতেছিলেন। মুক্ত বাতায়ন পথে তিনি দেখিতে পাইলেন, মাণিক তাঙ্গৰ নিকট যাইতে যাইতে পিতার তিরস্কারে অশ্রুপূর্ণ নেত্রে কাতর ভাবে ফিরিয়া গেল । তিনি হৃদয়ে বড় বেদন পাইলেন । মুকুম মাণিককে তাহার ছয় মাস বয়সের সময় হইতে কোলে পিঠে করিয়া মামুষ করিয়াছেন, মাণিক বিশ্বসংসারে ঠাকুরদাদাকেই একমাত্র বন্ধু জানিত, তাহার উপর নান দৌরাত্মা করিত ; ঠাকুরদাদা যত আবদার সহ করিতেন, BBB BB BBB BBBB DDD uSS S S S প্রবাসী—পৌষ, ১৩১৭ | ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড না। সেই ঠাকুরদাদার সঙ্গে মাণিকের একবার দেখা করিবারও উপায় নাই ! মাণিক ঘরে আসিয়া কাদিয়৷ কাদিয়া ঘুমাইয়া পড়িল । ঠাকুরদাদা ভাগবত বন্ধ করিয়া বসিয়া বসিয়া তামাক টানিতে লাগিলেন। তাছার চক্ষু দুটি অশ্রভারে ঝাপসা কষ্টয়া উঠিল । মাণিককে দিমান্তে একবার কোলে না লইলে তাহার মন স্থির চষ্টত না, তাচার কাজ কৰ্ম্ম ভাল লাগিত না । কিন্তু মাণিককে আর কোলে লইবার উপায় নাই ; তাহার কচি মুখের মিষ্ট কথা আর শুনিতে পান না।—মুকুন্দের বুকের উপর একটা গুরুতর পাষাণভার চাপিয়া রহিল । ( ७ ) এষ্ট ভাবে কয়েকমাস কটিয়া গেল। পূজা আসিল । মুকুন্দ প্রতি বৎসর পুজার সময় মাণিকের জষ্ঠ ভাল জুতা জামা কাপড় কিনিতেন। এবার কিনিবেন কিনা ইতস্ততঃ করিতে লাগিলেন । ষষ্ঠীর দিন তিনি পরিবারবর্গের জন্ত নব বস্ত্রাদি কিনিয়া আনিলেন, একটি ভৃত্য কাপড়ের মোট মাথায় লষ্টয়া আসিতেছিল, মাণিক তথন একথানি ময়লা কাপড় পরিয়া নিতান্ত বিষন্নভালে পথে দাড়াইয়া ছিল ; ঠাকুরদাদাকে দেখিবামাত্র আনন্দে তাহার হৃদয় উচ্ছসিত হষ্টয়া উঠিল। সে একবার চঞ্চল দৃষ্টিতে চারি দিকে চাহিল, তাহার পিতাকে কোন দিকে দেখিতে পাইল না ; সে ভয়ে ভয়ে ঠাকুরদাদার কাছে আসিয়া বলিল, “ঠাকুরদাদা, আমাকে একবার কোলে নেওন ; তুমি আমার পূজোর কাপড় এনেছ ?” ঠাকুরদাদা মাণিককে কোলে লইয়া সস্নেহে তাঙ্গার মুখচুম্বন করিলেন কিন্তু পাছে হারাণ দেখিতে পাইয় মাণিককে প্রহার করে এই ভয়ে তিনি তাড়াতাড়ি তাহাকে নামাইয়া দিয়া বলিলেন, “কাল তোমাকে জুতো কাপড় দেব দাদা !" সপ্তমীর দিন মুকুন্দ মাণিকের জন্ত জুতা, একটা সাটিনের জাম ও একখানি ভাল ধুতি কিনিয়া আনিলেন। গৃহিণী তাহ দেখিয়াই তেলে বেগুনে জলিয়া উঠিলেন, বলিলেন, “তোমার মত নিঘিন্নে টো ছেলে জুনিয়ায় আর