পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X 8 প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ কিন্তু চন্দ্রভাগা বাঈ লজ্জিত হচ্ছেন দেথে স্রোঁতের অনুরোধ সত্ত্বেও আমার সে সমস্ত আচার অনুষ্ঠান আর ভাল করে দেখা হল না । মুঞ্জিবন্ধনের দিন এরূপ স্ত্রী-আচার আর ৪ অনেক আছে । মুঞ্জিবন্ধন ছেলের, কিন্তু যত টানাটানি ছেলের বাপ মাকে নিয়ে —দম্পতির একত্রে স্বানের পর একত্রে ভোজন করবার ও নিয়ম আছে । এখানে শুধু বাণকের পিতা মাতা নয় পিসি মাসি প্রভৃতি আত্মীয়ারা ও স্বামীর সঙ্গে একত্রে আচার করেন। পাশপাশি দুখান পিড়ি ( পীঠাসন ) রাখা হয়, আর সম্মুখে একটা রূপার তেপায়ায় ( ত্রিপদিকা ) খাবার থাকে, স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে উভয়কে সেই থাবাব থাইয়ে দেন । এটা একটা বিশেৰ মঙ্গল অনুষ্ঠান । আহারের সময় বাজনা বাজতে থাকে, সমূপে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বলে, আর বাড়ীর যে যেখানে আছেন সকলে সেই ঘরে একত্র হন । গুরুজন অথবা পরিজনের সম্মুখে স্বামীর সঙ্গে কথাবার্তা বলা কি একত্রে খাওয়া যে কোন লজ্জার বিষয় মহারাষ্ট্র রমণীদের এরকম ধারণ একেবারেই নাই । তাঙ্গারা যেমন অসঙ্কোচে অন্ত সকলের সঙ্গে মেলামেশা করেন, কথাবার্তা বলেন, স্বামীর সঙ্গেও ঠিক সেই রকম ভাব। স্রোঁতের ছোট ভায়ের স্ত্রী জানকী বাঈয়ের বয়স ১৪১৫ বৎসর। স্বামীর সঙ্গে জানকীর প্রায়ই ঝগড়া হত আর ঝগড়া হলেই জানকী কাদতে কাদতে শ্বশুরের কাছে গিয়ে স্বামীর নামে নালিস করতেন, শ্বশুর বধুর পক্ষেই থাকতেন, কাজেই লছমন্‌ বেচারার প্রত্যেক বারেই হার হত । আমার কাছে এই নিঃসঙ্কোচ ভাবটী ভারী ভাল লাগে । সোহাগিন অর্থাৎ সধবা মহারাষ্ট্র ললনার মাথায় অবগুণ্ঠন দিবার নিয়ম নাই, কেননা তাদের মাথার "ছত্র’ আছে ; কিন্তু বিধবার তো মস্তকের ছত্র স্বরূপ কেহ নাই, এই জন্ত তাদের বস্ত্রাচ্ছাদনে মাথা ঢাকতে হয় । অনবগুষ্ঠিত মহারাষ্ট্রীয় রমণী রাজপথ দিয়ে চলে যেতে একটুও সঙ্কুচিত হন না। নিমন্ত্রণ-বাড়ীতে রমণীরাই পরিবেষণ করেন। শত শত পরিচিত অপরিচিত লোকের মধ্যে অনবগুষ্ঠিতা কুলবধু পরিবেষণ করছেন—এ দৃগু ভাবতে গেলে আমাদের সংস্কারে কেমন একটা আঘাত লাগে। কিন্তু যখন নিমন্ত্রণ সভায় দেখি অনবগুষ্ঠিত কুলবধু এক হাতে পরিবেষণ [ 》e उाछा, ২য় পাত্র ও এক হাতে দৰ্ব্বি নিয়ে শত শত লোকের পাতে অল্প দিচ্ছেন, তখন তাদের শ্রমে ক্লান্ত অথচ প্রসন্ন মাতৃমূৰ্ত্তি দেখলে মনে হয় যেন অন্নপূর্ণ নিজে সন্তানের পাতে অন্ন পরিবেষণ করছেন । কেবল পরিবেষণ নয়, রাধপাব ভার ও মেয়েদের উপর, রাধুনী বামনের উপর ভাব দিয়ে গৃহলক্ষ্মীরা নিশ্চিন্ত থাকেন না। রন্ধন কাজটা খুব শোলী’তে (পবিত্রভাবে) গু ওয়া চাই । উচ্ছিষ্ট বিচার খুবই আছে, তবে ভাত ডাল এসব সকড়ি বলে মেয়েরা শুদ্ধ কাপড় পরে রাধেন। ধরা হয় না । শ্ৰেীতের বাড়ীতে একদিকে রান্না, একদিকে ব্রাহ্মণ ভোজনের আয়োজন চলছে। কোথাও রাণীকৃত ফুলুরি ভেজে স্ত,পাকার করা হয়েছে, কোনখানে অন্নের রাশি, কোথাও নানারকম নাড়, কোনখানে পুরাণ-পুী—এই সব নানা জায়গায় নানারকম আয়োজন ।—এদিকে উঠানে পাত পাড়া হয়েছে —আমাদের দেশের মত সোজাস্বজি কুশাসন মাটর গেলাস আর পাত পাড়া নয়, এখানে খাবার জায়গা করতে আরও কিছু পরিশ্রম ও নৈপুণ্য দরকার। প্রত্যেক ব্রাহ্মণের ভোজনস্থানের চারিপাশে চৌকা দিতে হবে । ছোট ছোট লোহার হাতল দেওয়া ফাপা লোহার ‘রোলার’, তার চারিদিকে জাফরীর কাজের মত লতাপাত৷ থোদাই করা থাকে, আর তার ভিতরে খড়ির গুড়া পোরা থাকে ; সেই রোলারের কাতল ধরে আস্তে আস্তে প্রত্যেকের পাতের চারিপাশে মাটীতে গড়িয়ে নেওয়া হয়, তাতে তিন আঙ্গুল কি চার আঙ্গুল চওড়া চিত্রবিচিত্র লতাপাত-ৰ্তাকা আলপনার মত একটা দাগ পড়ে যায় ; এই রকম দাগটানাকে চৌকাটানা বলে । চৌকাটান। স্থানটী যেন একটা স্বতন্ত্র ঘর। প্রত্যেকে নিজের নিজের চৌকার ভিতর আহার করতে বসেছেন, কারও সঙ্গে কারও কোন সংস্রব নাই । যাহোকৃ ব্ৰাহ্মণের ভোজনে বসলেন। প্রকাও উঠান। প্রায় দুইশত ব্রাহ্মণ সারি দিয়ে বসেছেন। প্রথমে পাতে পাতে তরকারী পরিবেষণ করা হল, আর সেই সঙ্গে এক একটী পাতার ঠোঙ্গায় ঘি পরিবেষণ করা হল । তরকারির ভিতর ভাজাভুক্তিই বেশী, আর “কাঢ়ি’টা