পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

වඵe ইহাদের উৎপত্তিও ভিন্ন। ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের অভাব হইল না—একটা genealogy প্রস্তুত হইয় গেল । চাষী ব্যবসায়ীরা মনুসংহিতার মাঙ্গিষু নাম গ্রহণ করিলেন, ও নিজ আত্মীয়দের নিকট হইতে স্বতন্ত্র হতয়া পড়িলেন । বাঙ্গালা দেশে জেলে কৈবর্তের নুতন নাম আজিও লন নাই বটে, কিন্তু আসামে ইহার “নদিয়াল” নাম গ্রহণ করিয়া একটা স্বতন্ত্র জাতিতে পরিণত হইয়াছে। মুলে যাহা এক জাতি ছিল, ক্রমে তাহা দুই জাতি হইয়া পড়িল । ব্যবসায় ভেদে ইহাদের প্রথমে স্বাতন্ত্র্য আরম্ভ হইল বটে, এখন fictionও আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে, যখন দুই শ্রেণীর ব্যবসায় ভিন্ন তখন ইহাদের উৎপত্তিও ভিন্ন। আর এক হইবার উপায় নাই। জাতিভেদের মূলে যে স্বতন্ত্র হইবার প্রবৃত্তি (fission) রহিয়াছে তাহাই কাৰ্য্য করিতেছে । কেহ কেহ আপত্তি তুলিতে পারেন—অনাৰ্য্যবংশ (Dravidian) কিরূপে হিন্দু সমাজে প্রবেশ করিল ? এই শ্রেণীর আপত্তিকারীদের বিশ্বাস যে, হিন্দুসমাজের প্রসারণ নাই। লোকে খ্ৰীষ্টান হয়. মুসলমান হয়-- অহিন্দু যে আবার হিন্দু হয়, ইহাত কখনও শুনি নাই। হিন্দু বলিতেই আৰ্য্য জাতীয় বুঝিতে হইবে । বাহিরের কেহ কখনও হিন্দু হইতে পারে না । আমি মণিপুরীদের বৈষ্ণবধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়া, হিন্দু হইবার শুধু নয়, হিন্দু ব্রাহ্মণ হইবার কথা বলিয়াছি। মনুতে দেখিবেন চীন, শক, দ্রাবিড়, যবন, খসেরাও ব্রাত্যক্ষত্রিয় বলিয়া স্বীকৃত হইয়াছিল। কেবল অতীত কালের কথা বলিতেছি না-বর্তমানেও ইহার প্রমাণ পাওয়া যায়। আপনার কেহ যদি ছোটনাগপুর বেড়াইতে যান, এবং আপনাদের নিকট সাওতাল, মহিলী ও ভূমিজ, এই জাতির তিনজন লোক যদি উপস্থিত করা যায়, তাহা হইলে আপনার আকারে ইহাদের মধ্যে কোন প্রভেদ দেখিতে পাইবেন না। তবে আচার ব্যবহার, পোষাক পরিচ্ছদে প্রভেদ দেখিতে পাইবেন। ভূমিজ বা ভূইয়ার বাঙ্গালী সাজিয়াছে, বাঙ্গালা ভাষায় কথা কয়, হিন্দু দেবদেবীর পূজা করে—এক কথায় ইহাদের বাঙ্গালী হিন্দুদের মধ্যে ধরা যায়। হিন্দুর মধ্যে একটা নুতন জাতির স্বষ্টি হইয়াছে। মহিলীরা (Mahili) যখন আপনাদের মধ্যে কথা কয়, তখন সাওতালী ভাষায় কথা কয়; প্রবাসী—পৌষ, ১৩১৭ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড অন্ত কাহারও সহিত কথা কহিবার সময় ভাঙ্গা ভাঙ্গা হিনি বা বাঙ্গালীয় কথা কহিবে। নিজেদের হিন্দু বলিয়া পরিচয় দিবে, কিন্তু এখনও সম্পূর্ণ ভাবে বঙ্গ বঙ্গির (Bonga Bongi) og gttog নাই। পরিধানে বিলাতী কাপড় হিন্দুস্থানিদের মতন করিয়া পরিতে শিথিয়াছে। সাঁওতালের কিন্তু হিন্দুনাম লইতে ঘৃণা করে ; নিজেদের “হর” বলিয়া জানে, আর সব “দিকু" ; ব্রাহ্মণ জাতির উপর একেবারে শ্রদ্ধা নাই, হিন্দুদেবদেবীর নামও সহ করিতে পারে না । পরিধানে মোটাস্থতার হাতে-বোন কাপড় । কিন্তু যেমন চেহারায়, তেমনি আর একটী বিষয়ে ইহাদের একতা বুঝা যায়। হিন্দুদের গোত্ৰনাম ঋষিমুনি দিয়া । আমাদের কাহার ৪ গোত্র কি, জিজ্ঞাসা করিলে “গৌতম” কি “বিশ্বামিত্ৰ” বলিব। এবং কখন কোন গৌতম গোত্রের বালক নিজ গোত্রের কন্যাকে বিবাহ করিতে পরিবে না। ইহাকে eponym বলে। কিন্তু এই সব শ্রেণীর মধ্যে এই গোত্ৰনাম কোন জীবজন্তু বা গাছপালা দিয়া। কেহ “ইসিদা”, কেহ “মুম” । ইহাকে ॥otem বলে । “হাসদা” বংশের কেহ কখনও হাসদা বংশে বিবাহ করিতে পারিবে না। দেখা যায়, কোন কোন স্থানে অসভ্যজাতি হিন্দুসমাজ মধ্যে প্রবেশ কালে এই সব totem নাম ত্যাগ করিয়া একটা একটা হিন্দু eponym নাম গ্রহণ করিতে আরম্ভ করিয়াছে । তন্মধ্যে তাহাদের “কাছওয়া” ( অর্থাৎ কচ্ছপ) নামটী “কগুপ” হষ্টতে প্রায় অভিন্ন বলিয়া প্রায়ই এই গোত্রট হিন্দু হইবার সময় পছন্দ করিয়া লয়। এই শ্রেণীর মধ্যে এই জন্ত “কগুপ” গোত্রের আধিক্য দেখা যায়। একদিন একজন “ঘাটওয়ার” (ghatwar)কে তাহার গোত্রের কথা আমি জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম ; সে বলিল, তাহার “গোৎ” “কাছওয়া” । ঘাটওয়াররা কিন্তু জল-আচরণীয় শুদ্ধ জাতি। কোন প্রকার হিন্দুর অথান্ত খায় না । পরক্ষণে জিজ্ঞাসা করিলে জানিতে পারিলাম যে, তাহারা কখনও কচ্ছপ খায় না । তাহাদের বিশ্বাস যে তাহারা সকলে “কচ্ছপ” হইতে উৎপন্ন, এই জন্য তাহার কচ্ছপ পূজা করিবে ও তাক কথন বধ করিবে না বা তাহা আহার করিবে না । যে জাতি যখন যে totem নাম গ্রহণ করে, তখন তাহারা অার সে জজ বা গ"চ্চ নষ্ট