পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্য। ] চাই-ই চাই। “কাঢ়ি” একরকম ঘোলের তরকারি, মহারাষ্ট্রীদের এটা বড়ই প্রিয় ব্যঞ্জন। তরকারি এমন মুনিয়মে পরিবেষণ করা হয় যে প্রায়ই পাতে কিছু থাকে না, একবারের পরিবেষণের পর পাত একেবারে খালি না হলে আর দ্বিতীয়বার পরিবেষণ করা হয় না। এজন্য প্রায় কোন জিনিস নষ্ট হয় না। তরকারি আর ঘি পরিবেষণের পর ভাত আর পুরাণপুরী পরিবেষণ করা হল । ভাতগুলি খুব মিহি আতপ চালের। ফেন গালবার প্রথা এদেশে নাই, কিন্তু আন্দাজ করে জল দেওয়ার জন্তে ভাত বেশ সুসিদ্ধ হয় অথচ গলেও যায় না, তবে খুব ঝরঝরে হয় না। পিতলের মোট ডাণ্ডি ওয়ালা গোল হাতার মত দৰ্ব্বি ), যেগুলি দিয়ে আমাদের নিমন্ত্রণ-বাড়ীতে ব্রাহ্মণেরা তরকারি পরিবেষণ করে, সেই হাতার ভিতর ভাত বেশ চেপে চেপে পূরে ডাণ্ডিটা ধরে থালার উপর উবুড় করলেই ছোট একটা গোল বাটীর আকারের ভাতের চাপ থালার উপর পড়ে, এইরকম এক একটা বড় থালায় ত্রিশ চল্লিশট বাটীর আকার বিশিষ্ট ভাতের চাপ সাজিয়ে পরিবেষণ স্থানে এনে একটি একটি করে সকলের পাতে দিয়ে যাওয়া হয়। তাড়াতাড়ির সময় এক হাতে ভাতের থালা আর এক কাতে দৰ্ব্বি নিয়ে যেমন তেমন করে বাটীর ভিতর ভাত চেপে পাতে পাতে হাত উবুড় করে দিয়ে যাওয়া হয় । এতক্ষণ ব্রাহ্মণের হাত তুলে ছিলেন, পাতে অন্ন পড়লে সকলে গওয করে সমস্বরে বেদমন্ত্র উচ্চারণ করতে লাগলেন। একত্রে শত শত কণ্ঠে উচ্চারিত সেই সু-গম্ভীর বেদগান শুনতে বড়ষ্ট সুন্দর । বিশেষতঃ মহারাষ্ট্ৰী উচ্চারণের যে বিশেষত্ব আছে তাতে শ্লোকোচ্চারণ আর ও সুমধুর বোধ হয় । স্তোত্র পাঠের পর আচমন করে ব্রাহ্মণের আচার করতে বসলেন। এক-পত্তন অন্ন ব্যঞ্জন উঠে গেলে আবার নুতন করে ঘি পরিবেষণ করা হল, তার পর পুরাণ-পুরী আর ফুলুরী। পুরাণ-পুরী অনেকটা ডালপুরীর মত, ঘিয়ে ডুবিয়ে খেতে হয়। পুরাণ-পুরীর সঙ্গে আরও তিন চার রকমের পিঠাপুরী ও হালুয়া ছিল । যখন এ সমস্ত খাওয়ার পর পাত বেশ পরিষ্কার হয়ে গেল, তখন ব্রাউ ^ 3 লাড এসে হাজির । এ সমস্ত মিষ্টান্ন ঘরে বই প্রস্তুত, বাড়ীর মেয়ের দু’ তিন দিন ধরে এ সব তৈরি করে যিনি যতটা লাড, চাইলেন তাকে ততটা দেওয়া হল, উপরোধ করে বেশ দেওয়ার প্রথা এখানে নাই। তা বলে ব্রাহ্মণের যে কেউ কম লাড়, গেলেন তা নয় । আমি ভাবছি এইখানেই শেষ, কিন্তু আবার ভাত ও দষ্ট এসে উপস্থিত। এবার আর বাটী করে ভাত দেওয়া হল না । মুঠ মুঠ করে যিনি যেমন চাইলেন পাতে পাতে পরিবেষণ করা হল । সকলের শেষে “অমৃতথগু” নামে একরকম দষ্ট ক্ষীর এলাচ কপূর প্রভৃতি নানা-উপকরণ-মিশ্রিত পায়েসের মত মিষ্টদুবা পরিবেষণ শেষ হলে ব্রাহ্মণভোজন সমাধা স্তল । রেখেছেন । སྨི:--- ব্রাউনিং উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ইংলণ্ডের কাব্য-গগনে টেনিসন এবং ব্রাউনিং ভাস্বর নক্ষত্র । বর্তমান সময়ে টেনিসনের নাম সৰ্ব্বজনবিদিত—দেশে বিদেশে তাহার প্রভূত সন্মান ; কিন্তু ব্রাউনিং এর পাঠকসংখ্যা নিতান্ত বিরল । ইহার কারণ নির্দেশ করা সুকঠিন নচে । টেনিসনের রচনাবলী প্রাঞ্জল, পাঠমাত্রই অর্থ প্রতীতি হয়, ভাবগাম্ভীৰ্য্য সত্ত্বেও মস্তিষ্কের ব্যায়াম অনাবশু্যক । এতদ্ব্যতীত তাঙ্গর অসাধারণ পাণ্ডিত্য, অতুলনীয় শব্দ-গ্রন্থন-পটুতা, স্বতীক্ষ পৰ্য্যবেক্ষণ-শক্তি প্রভূতি বহুগুণে মণ্ডিত বলিয়া তাহার কবিতা পাঠকসমাজে বিশেষ সমাদর লাভ করিয়াছে । কিন্তু ব্রাউনিংএর ভাগ্যে তাহ ঘটে নাই । ব্রাউনিংএর রচনা কোমল-কান্ত পদাবলী নহে, ব্রাউনিং লোকরঞ্জন অপেক্ষ লোকশিক্ষাকে উদ্দেশু করিয়া লিথিয়াছেন । স্বতরাং তাহার লেখার সর্বত্র পদবিদ্যাসের লালিত্য দেখিতে পাই না, অনেক স্থলেই তাঙ্গার কবিতা কর্কশকঠোর বলিয়া প্রতীয়মান হয় । কিন্তু এই কর্কশতার অন্তরালে যে অলোক-সামান্ত ধীশক্তি এবং অনিৰ্ব্বচনীয়