পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ) সুন্দরী, এইবার বোধ হয় তুমি আমার বশ মানিবে। এতদিন আমার শাসন হাসিয়া হাসিয়া অগ্রাহ করিয়াছ ; সুখের খবর, তোমার চোখে আজ জল পড়িয়াছে । বল সুন্দরী, এখন তোমার কোন প্রিয়কাৰ্য্য সাধন করিব । তরুণ শুধু জিজ্ঞাসা করিল—“পাশের ঘরে যে বন্দী ছিল সে কোথায় ?” “সে নাই ।” “সে কোথায় ?” “জানি না ।” তরুণী ভ্ৰকুটি করিয়া কহিল—“এখন ওঘরে কে আছে ?” “কেহ না ।” “তবে আমাকে ঐ ঘরে বন্দী করিয়া রাথিতে আজ্ঞা করুন ।” এবার বাদশাহ ভ্ৰকুট করিয়া বলিলেন—“এস।” তরুণী বাদশাহের অনুসরণ করিয়া পাশের কামরায় গিয়া দেখিল দেয়ালের গায়ে রক্ত দিয়া বড় বড় হরপে লেখা আছে— আগর মন্‌ বাজ বিনম্ রূ-এ জার-এ-থেশ্বরা । তা কেয়ামৎ শুক্র গুজ্রারম্ কিৰ্দ্ধিগার-এ-থেশরা। ওগো আমি যদি আমার প্রতিবেশিনীর মুখখানি একটিবার দেখিতে পাইতাম, তবে প্রলয়কাল পর্য্যন্ত দয়াময় জগদীশ্বরকে ধন্যবাদ করিতাম ! চারু বন্দ্যোপাধ্যায় । আমার চীন-প্রবাস সে আজ দশ বৎসরের কথা । কেহ সখ করিয়া কেচ্চব জ্ঞানোপার্জনের জন্ত সুদূর বিদেশে গমন করে, কিন্তু আমার এই প্রবাস এতদুভয়ের কোনটার অন্তর্গত নহে, উহা খাটী পেটের দায়ে । ইংরাজী ১৯০৯ সালের আগষ্ট মাসে শনিবার অমাবস্তা তিথিতে মঘা নক্ষত্রে আমি খিদিরপুর ডক হষ্টতে তল্পিতল্প বাধিয়া পেনিনসুলার ওরিয়েনট্যাল কোম্পানীর “ষণ্ড!” নামক জাহাঞ্জে চাপিয়া একবারে চীনে রওনা হইলাম। 99న

  • ”- ...* *-s_..ره .** همه ماهه ۰

বলিতে ভুলিয়া গিয়াছি সে সময় কলিকাতায় প্লেগের কিম্বা ঐরূপ কোন সংক্রামক পীড়ার বিশেষ প্রাদুর্ভাব থাকায় আমাদিগকে গন্ধকে মিশ্রিত জলীয় বাম্পের মধ্য দিয়া সুসংস্কৃত কষ্টয়া জাহাজে আরোঙ্কণ করিতে হইয়াছিল। বলা বাহুল্য ঐ সঙ্গে আমাদের তল্পিতল্লাগুলিকেও ঐ ভাবে রোগবীজ হইতে মুক্ত করা হইয়াছিল। “হস্ত দ্বারা স্পর্শিত নন্তে” টিনে অবস্থিত গোয়ালিনী মার্ক খাটি গাঢ় দুগ্ধের দ্যায় আমরা বিশুদ্ধ হইয়া জাহাজে আরোহণ করিলাম। জাঙ্কাজে উঠিয়াই দেখিলাম আমাদের স্ব স্ব নাম-লেখা কক্ষ নির্দিষ্ট আছে । একদিন এক রাত্ৰি বাদে আমরা বঙ্গোপসাগরে পড়িলাম। জাহাজ অজগর সপের স্থায় গর্জাইতে লাগিল। চারিদিকে দিগস্তাবস্তৃত নীল বারিরাশি এবং উদ্ধে অনন্ত নীলাকাশ ব্যতীত আর কিছুই নয়নগোচর হয় না । এখান হইতেই আমাদের মধ্যে অনেকে সমুদ্র-পীড়াতে ( Sea-sickness ) কাতর হইয়া পড়িল । আমিও প্রথম ধাক্কা সামলাঙ্গতে পারি নাই। একবার বমন হইবার পর শরীর অনেকটা সুস্থ বোধ হইল। ইহার পর আমি আর কখনও ঐ পীড়ায় আক্রাস্ত হই নাই। তাহার দুইট কারণ নির্দেশ করা যাইতে পারে। প্রথমতঃ, আমি অনবরত জাহাজে ঘুরিয়া বেড়াইতাম। কখনও নিশ্চেষ্টভাবে বসিয়া থাকিতাম না। ৪৫ বার আহার করিতাম, পাকস্থলা প্রায়ই খালি থাকিত না । দ্বিতীয়তঃ কখনও মাথা ঘোরা বোধ হইলে পাতিলেবুর আগ্ৰাণ লষ্টতাম এবং একটু একটু লেহন করিতাম। সমুদ্র যাত্রা করিতে হইলে সকলেরই শেষোক্ত জিনিষট পর্যাপ্ত পরিমাণে সংগ্ৰহ করিয়া লওয়া উচিত। আমার ধারণা কথিত উপায়দ্বয় অবলম্বন করিলে অনেকে উল্লিখিত পীড়ার হাত হইতে মুক্তিলাভ করিতে পারেন। কারণ সমুদ্রযাত্রীদিগের উল্লিখিত পীড়ায় আক্রান্ত হওয়া একরূপ অনিবাৰ্য্য। ছোমিওপ্যাথিক নক্স ভমিকা সেবনে অনেক সময় বেশ উপকার হয় । - সাতদিন পরে নারিকেল-তাল-পরিশোভিত সিঙাপুর দ্বীপ অদূরে নয়নপথে পতিত হইল । সে যে কি মনোরম দৃপ্ত তাহা বর্ণনা করিয়া বুঝান কঠিন। সপ্ত দিবারারি নীল জল এবং অসীম নীলাকাশ ব্যতীত অপর কিছুই_