পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] এবং কৃতজ্ঞতার পরিবর্তে আমার হৃদয় বিরাগে ভরিয়া গেল। আমি আজাদ বধূতের ন্যায় সহসা মৃত্যুর ছায়া দেখিতে পাইলাম। এই ঘটনার অল্পদিন পরে আরো কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়াছিল যদ্বারা নিজের বাৰ্দ্ধক্যকল্পনা ক্রমশঃ অভ্যস্ত হইয়া গেল। এখন বাৰ্দ্ধক্যের বিজয়-পতাকা শিরোদেশে বাধিয়া প্রশান্তচিত্তে এই প্রবন্ধ লিখিতে বসিয়াছি । আমরা সম্বৎসরকে ঋতুভেদে ছয়ভাগে বিভক্ত করিয়া থাকি, কিন্তু সকল ঋতুষ্ট একস্থত্রে গ্রথিত। একঋতু অপরের রূপান্তর মাত্র। অতি দুরন্ত শাত অতি রমণীয় বসন্তের নিত্য-সন্নিহিত এবং শীতের তুষার বাতে বসন্তের মলয় মারুত অতি প্রচ্ছন্নভাবে বহিতে থাকে । অমাবস্তার মসিময় ক্রোড়ে পূর্ণশশী লুক্কায়িত থাকে। সেইরূপ জীবনের ঋতু পরম্পরা ও পরস্পর ঘনিষ্ঠ যোগে আবদ্ধ । শৈশব-যৌবনাদি ক্রমে বাৰ্দ্ধক্যে পরিণত হয়, কিন্তু একেবারে বিলীন হয় না । এইজষ্ঠ কবি বলিয়াছেন— “মানুষ বাড়ন্ত শিশু বষ্ট আর কিছুষ্ট নয়।” এই জন্য বৃদ্ধ ঠাকুরদাদার তিন-বৎসর-বয়স্ক নাতিটি তাতার প্রধান কেলি-সহচর। বৃদ্ধত্বের মুখস হইতে ীেবনও কতবার উকিঝু কি মারে, কিন্তু কয়জন যুবা তাহা দেখিতে পায় ? কোন যুব পলিতকেশ, বিগলিতদশন, লোলচৰ্ম্ম বুদ্ধের নিকট সহানুভূতি পাইবার প্রত্যাশা করে ? কিয়ৎকাল পূৰ্ব্বে আমি একদিন সান্ধ্যসমীরণ সেবন করিবার জন্ত এই মহানগরীর কোনও রাজোদ্যানে বেড়াইতে গিয়াছিলাম। দেখিলাম উষ্ঠানের একপ্রান্তে দুইটি যুবক একখানি বেঞ্চে বসিয়া কথোপকথন করিতেছে। আমি তাহাদিগের কথাবার্তা শুনিবার ঔৎসুক্যে নিকটবৰ্ত্তী একখানি বেঞ্চে আসীন হইলাম। যাহা শুনিলাম তাঙ্গতে গোপন করিবার বিষয় কিছুই ছিল না। উহাদের মধ্যে একজন, তারকেশ্বরের নিকটবৰ্ত্তী কোনও গ্রাম হইতে সপরিবারে কলিকাতায় আসিবার সময় কর্দমাক্ত গ্রাম্য পথে কিরূপ গাড়ীবিভ্রাট ঘটিয়াছিল তাহ, সবিস্তারে বর্ণনা করিতেছিল। কিয়ৎক্ষণ পরে দ্বিতীয় ব্যক্তি বলিল, “চাকরী বাকরীর বাজার দিন দিন যেরূপ মন্দ হইয়া উঠিতেছে তাহাতে মনে হয় বৃথা চাকরীর চেষ্টা না করিয়া একখান ষ্টেসনারীর দোকান খুলি। জীবন-বৈচিত্র্য AASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAASSAASAASAASAASAASAASAASAASAAASAASAASAASSAAAAAAS AAAS SAAAS AAASASASS මේව8ථා গ্ন্যাস-কেস কিনিবার প্রয়োজন নাই। দাদার কয়েকটা পুরাতন আলমারি আছে, আপাততঃ তাহাই কাজে লাগাষ্টব।” ইত্যাদি ইত্যাদি। কথাগুলির কোনও বিশেষত্ব না থাকিলেও কে জানে কেন আমার প্রাণ ঐ যুবকদ্বয়ের প্রতি আকৃষ্ট হইল । পুর্ণ সহানুভূতির আবেগে আমি উচ্চাদিগের অধিকৃত লেঞ্চে গিয়া বসিলাম । কিন্তু হায় ! সেজের মুখে আবরণী দিবা মাত্র যেমন বাতি নিবিয়া যায়, আমার আগমনে উহাদের গল্পস্রোত তেমনি বন্ধ হইল, এবং “রাত্রি অধিক হইয়াছে, গৃহে চল,” বলিয়া উহার উভয়েই আমাকে একাকী ফেলিয়া চলিয়া গেল । আমিও এই ভাবিতে ভাবিতে গৃহে ফিরিলাম যে ইহারা আমার মাথায় সিরাজগঞ্জের পাটের ক্ষেত দেখিয়৷ ভয় পাইল, স্বপ্নেও ভাবিল না যে আমার প্রাণ এখনও হামাগুড়ি দিতেছে । এস্থলে আমার একটি গল্প মনে পড়িল ৷ একদা এক ব্রাহ্মণ এক গৃহস্থের বাটতে আতিথ্য স্বীকার করিয়া রাত্রি যাপন করেন। গতাদ্ধরাত্রে স্তিমিতপ্রদীপে ব্রাহ্মণের হঠাৎ নিদ্রাভঙ্গ হইল । দেখিলেন এক শুক্লবসনা সুন্দরী (শঙ্খচূর্ণ ) মশারির কিয়দংশ ফাক করিয়া তাহার প্রতি কটাক্ষপাত করিতেছে । এই ব্যাপার দেখিয়া ব্রাহ্মণের ংজ্ঞা হারাইবার উপক্রম হইল। তদর্শনে সুন্দরী হী হী করিয়া হাস্ত করিল ও এই বলিয়া চলিয়া গেল—“ভন্ন পেলে বাপু ?” একজন প্রসিদ্ধ ঔপন্যাসিক বলেন যে যৌবনই মমুন্যের স্বাভাবিক ও নিত্য অবস্থা ; যৌবনের বহ্নি বাৰ্দ্ধক্যের ভস্ম দ্বারা কেবল ঢাকা থাকে মাত্র। এই সত্যটির পূর্ণ পরিচয় প্রতিভাশালী ব্যক্তিমাত্রের জীবনে পাওয়া যায় । কি এক চির-বিকসিত সৌন্দৰ্য্যবোধ লইয়া তাহার জন্মগ্রহণ করেন, যে, বিশ্বসংসার তাছাদের চক্ষে নিত্য নবীন— “নবরে নব নিতুষ্ট নব ।” তাছাদের চির-প্ৰজলিত । উৎসাহানল রোগে, শোকে, দারিদ্র্যে, বাৰ্দ্ধক্যে কিছুতেই নিৰ্ব্বাপিত হয় না। বাস্তবিক উৎসাহশীলতা যেমন যৌবনের একটি প্রধান লক্ষণ, তেমনি উৎসাহহীনতা বাৰ্দ্ধক্যের শ্রেষ্ঠ পরিচায়ক । মানুষ উৎসাহ ভঙ্গে যত বুড়া হয় এমন আর কিছুতেই নয়। মিসরের প্রাচীন রাজ-সমাধির মধ্যে পরচুল পাওয়া গিয়াছে। অতি প্রাচীন কালেও চুলে