পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“Эрbe o হাষ্ট তুলিয়া, দুষ্ট একবার চক্ষু রগড়াইয়া, কিঞ্চিৎ কাসিয়া, অৰ্দ্ধনিমীলিত নেত্রে ধূমপান আরম্ভ করিল। মালী বলিল—“মাঈ—আজ বাবুর বাড়ী কালীপূজা। একটু বেলা হইলেক্ট, স্নান করিয়া, খরাই মারিয়া, আমি সেখানে যাইব ।” পেয়ারা চৰ্ব্বণ করিতে করিতে, বৌ করিয়া একপাক যুরিয়া, রামদাসোয় বলিল—“হামু যায়ব ।” মালী বলিল—“তুষ্ট যাইবি, তোকে কোলে করিয়া লইয়া যাইবে কে ?” আর একটা ঘুরপাক দিয়া রামদাসোয় বলিল—“তোর কান্ধাপর চড়কে যায়ব ।” বৃদ্ধ বলিল—“আঙ্গ লইয়া যাইও । ছেলেমানুষ, পূজা দেখিবে না ?” মালী বলিল—“তবে তুষ্টও চল মাঈ। রামদাসোয়াকে কোলে করিয়া লইয়া যাইবি ।” “দুজনেই গেলে উহার খবরদারী করিবে কে ? বাৰু যদি রাগ করেন ?” “সে কথা ঠিক্‌ ৷”—-বলিয়া মালী নীরবে ধূমপান করিতে লাগিল। অবশেষে স্থির হইল, বৃদ্ধ প্রথমে রামদাসোয়াকে লইয়া গিয়া পূজা দেখিয়া আসিবে—দ্বিপ্রহরে সে ফিরিলে তখন মালী যাইবে । পূজা দেখিতে যাইবে বলিয়া রামদাসোয়ার মাতা তাহার বেশবিদ্যাসে প্রবৃত্ত হইল । তাহার মেরজাষ্ট প্রভৃতি খুলিয়া ফেলিয়া, এক ছটাক পরিমাণ সর্ষপ তৈল তাহার ধূলিধূসর কেশবহুল মস্তকে নিক্ষেপ করিয়া যখন দুই হাতে সবলে মর্দন করিতে আরম্ভ করিল, তখন রামদাসোয় বিশেষ আপত্তি করে নাই । উঠানের কোণে এক কলসী জল রাখা ছিল । জ্ঞানোদয়ের পর দুই তিনবার তাহাকে স্নান করিতে হইয়াছে। মাতা তাহার হস্ত ধারণ করিয়া ছড় ছড় করিয়া টানিয়া সেই কলসীর নিকটবৰ্ত্তী করিবামাত্র তাই সে তারস্বরে ক্ৰন্দন আরম্ভ করিল। সজলনেত্রে বারম্বার আবেদন করিতে লাগিল, পূজা দেখিবার জন্ত সে কিছুমাত্র উৎসুক নহে–এ যাত্রা নিস্কৃতি পাইলে বাচে। কিন্তু তাহার এ “এজিটেশনে” কিছুমাত্র ফলোদয় হইল না। ঘটী ঘটী শীতল জল তাহার মস্তকে নিক্ষিপ্ত প্রবাসী—পৌষ, ১৩১৭ { ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড হইতে লাগিল। স্নানান্তে মাতা তাহার চুল আঁচড়াইয়া, কাজল দিয়া, একখানি হলুদে ছোপান ধৃতি এবং একটি ছিটের কুর্ত পরাইয়া দিল। তখন আবার রামদাসোয়ার মুখে হাসি ফুটিল । মনের আনন্দে রৌদ্রে খেলা করিতে লাগিল । ক্রমে বৃদ্ধ মুখাদি প্রক্ষালন করিয়া, বেশমের বাসি ফুলুরি খাষ্টয়া ‘খরাই মারিল । বলিল—“তবে ওখানে জল দিয়া, উকুন ধরাইয়া আসি। আসিয়াট বাহির হইব ।” বৃদ্ধ তথন জামাতার নিকট কষ্টতে চাবিটি চাহিয়া লক্টয়া, ধীরে ধীরে বাগানবাড়ীর পশ্চাৎ ভাগে চলিল । গিয়া দেখিল শিকল খোলা, তালাটা নাই। দেখিয় তাহার মাথা ঘুরিয়া গেল । হাত পা ঠক্ ঠক্‌ করিয়া কঁাপিতে লাগিল। ভাবিল—“কি সৰ্ব্বনাশ ! দুয়ার খোলা কেন ? গঙ্গামণি আছে ত ?” রুদ্ধশ্বাসে ছুটিয়া বৃদ্ধ উপরে গেল । দেখিল কেহ কোথাও নাই । প্রত্যেক ঘর দুই তিন বার করিয়া খুজিল—কেই কোথাও নাই। “গঙ্গামণি”—“গঙ্গামণি”—বলিয় বার বার চীৎকার করিল, কেহ উত্তর দিল না । তখন বৃদ্ধা হতাশ হইয়া, কাদিতে কঁাদিতে জামাতাকে গিয়া সংবাদ দিল । শুনিয়া মালী আকাশ চইতে পড়িল । তাহার চক্ষু বসিয়া গেল। গলার স্বর বিকৃত হইয়া গেল। বলিল— “চল—দেখি গিয়া ।” ছুইজনে তখন ধীরে ধীরে বাগানবাড়ীর পশ্চাতে উপস্থিত হইল। বহিৰাঁরের নিকট দাড়াইয়া, মালীর মুখভাব পরিবর্তিত হইতে লাগিল। তাছার দুই চক্ষু লাল হইয়া উঠিল। দন্তে দন্তে ঘর্ষণ করিয়া, বৃদ্ধার কেশ সবলে ধারণ করিয়া বলিল—“কারামজাদি, তোরই দোষে এই সৰ্ব্বনাশ হইয়াছে।” বৃদ্ধ এই আকস্মিক অপমানে আগুন হইয়া বলিল— “কেন রে ছোড়াপুতা—আমার কি দোষ ? পাজি—আমার চুল ছাড় ।” “তোর দোষ নয় ? নিশ্চয় তোর দোষ । কাল সরাপের নেশায় ছিলি, তালাবদ্ধ কৰিল নাই। এই দেখ,