পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] একটা কড়ায় তালাবন্ধ রহিয়াছে। ছুয়ার খোলা পাইয় গঙ্গামণি পলাইয়াছে।” বৃদ্ধ দেখিল, তালাটা একটা কড়ায় বন্ধ হইয়া বুলিতেছে । বলিল :-"কখনও নয়, আমি দুষ্টট কড়ায় ঠিক তালাবন্ধ করিয়াছিলাম। আর, সে সময় আমি সরাপ ছু ইও নাই। তুই নেশায় ভোঁ কষ্টয়া পড়িয়া ছিলি--চাবি কোথায় ফেলিয়া রাখিয়াছিলি, কে লইয়। তালা খুলিয়াছে।” মালী চুল ছাড়িয়া দিল । তখন দুই জনে উপরে গেল । গঙ্গামণির শয়নকক্ষে প্রবেশ করিয়া, মাঙ্গী দেখিল মাদুরের উপর পোষ্টকার্ডখানা পড়িয়া আছে। তুলিয়া লইয়া বলিল “এখানা কি ? এ চিঠি কোথা হইতে আসিল ? এ যে ডাকের চিঠি দেখিতেছি।” বুদ্ধা বলিল—“তাহ" ত জানি না । দিন এখানে দেখি নাই ।” মালী বলিল—“গঙ্গামণিকে কেহ চিঠি লিখিয়াছিল বোধ হয় । এই চিঠি পড়াইলেক্ট, কে তাকাকে লইয়া গিয়াছে কিনারা হইবে।” বৃদ্ধ বলিল - “দূর বেকুব । গঙ্গামণিকে চিঠি দিয়া যাইবে কে ? এ বোধ হয়, যাহারা তাহাকে লইতে আসিয়াছিল, তাহারাই ফেলিয়া গিয়াছে।” মালী পোষ্টকার্ডখানি লঙ্গয় সযত্বে নিজের কাপড়ে বাধিয়া রাখিল । বলিল “বড়ই সৰ্ব্বনাশ হইল। এতদিন এখানে চাকরি করিয়া খাইতেছি – এইবার চাকরিটি গেল । আর কি বাৰু আমায় রাখিবে –এখনি তাড়াইয়া দিবে। এখন এ বৃদ্ধ বয়সে, কাচ্ছা বাচ্ছা লইয়া যাই কোথায় ?” দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়৷ দুই জনেই কিছুক্ষণ নীরব রহিল । শেষে বুড়ী বলিল—“পলাইয়া হয় ত এখনও বেশ দূর যাইতে পারে নাই । কাছাকাছি কোথাও নিশ্চয়ই লুকাইয়া আছে। একবার খুজিয়া দেখ, ” দুইজনে আবার বাহির হইল । তালাটি বন্ধ করিয়া বিষয় বদনে মালী বলিল—“তবে যাই। খুজিয়া দেখি।” বেল। দ্বিপ্রহর অতীত হইয়া গেলে, মালী ফিরিয়া আসিয়া বলিল—“কোথাও তাহাকে পাইলাম না। এখন যাই—বাবুর নিকট সংবাদ দিষ্ট।” বুড়ী বলিল—“কি বলিবি ?” 'o এ চিঠি ত কোন নবীন সন্ন্যাসী כי "לס

  • বলিব—কোনও দুষ্ট লোক, অন্ত চাবি দিয়া তালা খুলিয়া, গঙ্গামণিকে লইয়া গিয়াছে।”

বৃদ্ধ বলিল-“তোর যেমন বুদ্ধি ! ও কথা বলিলে বাৰু কি বিশ্বাস করিবে ? বলিবে আমরা তাল বন্ধ করিতে ভুলিয়া গিয়াছিলাম।” “তবে কি বলিব ?” “একটা কিছু আনিয়া, তালাটা ভাঙ্গিয়া ফেল। সেই ভাঙ্গ তালা হাতে করিয়া লইয়া যাইবি । বলিবি কল্য রাত্রে কে তালা ভাঙ্গিয়া গঙ্গামণিকে লক্টয়া গিয়াছে ।” মালী বলিল –“এক্ট পরামর্শই ঠিক ।”—তখন নিজ কুটার হইতে দুইটা লোঙ্গ অনুসন্ধান করিয়া বাহির করিল। সেই লোঙ্গার সাহায্যে অনেক কষ্টে এক দণ্ড ধরিয়া তালাটা ভাঙ্গিল । তাঙ্গার পর আঙ্গারাদি করিয়া, বেলা যখন তৃতীয় প্রহর সেই সময় কাদ কঁাদ মুখে বাবুব বাড়ীতে উপস্থিত হইল । মধ্যাহ্ন পূজা তখন শেষ হইয়া গিয়াছে—ব্রাহ্মণ-ভোজনও সমাপ্ত। কাঙ্গালী-ভোজন হইতেছে—কন্মচারীরা পরিবেষণ করিতেছে। গদাঙ্গ এক পাশ্বে দাড়াইয়া তদারক ও হুকুম করিতেছিল । মালী তাঙ্গার নিকট গিয়া দাড়াইল । গদাই বলিল—“কি হে মালীর পো— এত দেরী করে এলে ?” মালী চুপি চুপি বলিল “আজ্ঞা বাবু সৰ্ব্বনাশ কষ্টয়া গিয়াছে।”* যেন কতই আশ্চৰ্য্য হইয়াছে এইরূপ ভাবে বালল— "কেন ? রামদাসোয়া ভাল আছে ত ?” “সে ভাল আছে। গঙ্গামণি পলাইয়াছে।” “আঁ্যা ! বল কি !—কেমন করিয়া পলাইল ?” “কল্য রাত্রে কোন ও দুষ্টলোক তালা ভাঙ্গিয় তাহাকে লষ্টয়া গিয়াছে।” গদাই বলিল—“কি সৰ্ব্বনাশ! এখন উপায় ? কে এমন কাৰ্য্য করিল ?” “কি জানি বাবু তাত জানি না। তবে গঙ্গামণির ঘরে এই চিঠিখান কুড়াষ্টয়া পাওয়া গিয়াছে।”—বলিয়া মালী চিঠি দিল। গদাই সেখানি উল্টাটয়া দেখিয়া মালীকে কিরিয়৷ দিল, বলিল—“চশমা সঙ্গে নেই। পড়তে পারলাম না । কে এ কাষ করলে তাই ভাবছি। আচ্ছা সেই