পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

AASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAAS না থাকে, যেন মাঘ কবির কটমট বাক্যবিদ্যাসের যথাসাধ্য অনুকরণ করা হয়। আর এক দিকে শিল্পচর্চার অধীর প্রচারকেরা একেবারে গেয়ে ভাষায় বই ছাপাহঁতে চান । কিন্তু আমরা দেখিতেছি যে এই দুষ্ট চেষ্টাই বিফল হইয়াছে, এবং ভবিষ্যতেও বিফল হইবে। তাহার কারণ, ভাষা জনসাধারণের সম্পত্তি। যদি রচনা অত্যন্ত কঠিন হয়, যদি পদে পদে অভিধান খুলিতে হয়, তবে সেরূপ লেখা শুধু দুই একজন পণ্ডিতই পড়িবেন, জনসমূহ কথন তাহ চাহিবে না। সেই মত, গ্রাম্য ভাষাও শ্রেণীবিশেষে আবদ্ধ, এবং ভিন্ন স্থানে ভিন্ন আকারের, এক জেলার গ্রাম্যভাষা অন্ত জেলায় বুঝা যায় না । সাহিত্যের উপকরণ অর্থাৎ সৰ্ব্বোচ্চ চিন্তা, মহৎ ভাব, গ্রাম্যভাষায় ঠিক ব্যক্ত করা যায় না। যে ভাষা আমাদের হৃদয়কে অনন্তের সঙ্গে যোগ করিয়া দিবে তাহাকে অতি স্বাক্ষ অতি কোমল ভাবগুলি প্রকাশ করিতে হইবে। সরল কথায় এই কাজ করা যাইতে পারে, কিন্তু গ্ৰাম্য গ্রাম্যভাষা সাহিত্যের ভাষা হইতে পারে عم..۔^* কথায় নহে । না । ফলতঃ ভাষার উপর জোর খাটে না ! ভাষার গতি ফিরাইতে কষ্টলে, আগে জনসমষ্টিকে সেই মতে দীক্ষিত করিতে হয়। মহালেখকেরা ভাষায় যে পরিবর্তন করাষ্টয়া দেন তাহ ঠিক এইরূপে ঘটে । র্তাহারা যাহা বলেন সেই মধুময় বাক্য সব লোকের হৃদয় অধিকার করে. তাহারা মন্ত্রের মত সেই কথাগুলি ব্যবহার করিতে থাকে, প্রতিভার আকর্ষণে তাহারা বাধ্য হইয়া কবির পথে চলিতে থাকে। এইরূপে ভাষায় নব নব প্রথা, নব নব শব্দ প্রবেশ করে। এই জাদুকরী শক্তি শুধু প্রতিভাবান্‌ লেখকের অাছে,—শিক্ষকের নাই, সংস্কারকের নাই, রাজপুরুষের নাষ্ট, ইতিহাস ইহাই প্রমাণ করিতেছে। প্রথম দৃষ্টান্ত গ্রীস দেশ। প্রাচীন গ্রীসের বীরত্বকাহিনী, রাজনৈতিক-প্রণালী, সাহিত্য-ভাণ্ডার, জগতে অমর হইয়া রহিয়াছে, পরবর্তী কত জাতির দৃষ্টান্ত স্বরূপ হইয়াছে। তারপর দুই সহস্ৰ বৎসর ধরিয়া রাজার অত্যাচারে ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপে সেই জগতের আলো গ্ৰীকজাতি লোপ পাইল, সে দেশে সুাভোনীয় জাতীয় বাঙ্গালীর ভাষা ও সাহিত্য .* 8 о Ф লোকেরা আসিয়া বসতি করিল ; তাহাদের ভাষা প্রাচীন গ্ৰীকের এক বিরুত অপভ্রংশ। আশী বৎসর হইল যখন এই নব গ্রীস স্বাধীন হইল, তখন স্বদেশপ্রেমিকের চাহিলেন যে সেই প্রাতঃস্মরণীয় জগৎপুজ্য প্রাচীন গ্রীকভাষা আবার ফিরাইয়া আনি । দেশের নেতারা সকলে ঠিক করিলেন যে নব্য গ্রীককে জোর করিয়া পুরাতনের আকার দিতে হুইবে । তখন সমস্ত সংবাদপত্রের সম্পাদক স্কুলের শিক্ষক এবং লেখক জোট করিয়া শুধু প্রাচীন গ্ৰীক ভাষা ব্যবহার করিতে লাগিলেন, যেন লোকে নব্য গ্রীকের দৃষ্টাত্ত না দেখিতে পাইয়া তাঙ্গ ভুলিয়া যায়। এই অস্বাভাবিক চেষ্টার কি ফল হইল ? পাচ ছয় বৎসর পরে দেখা গেল যে সাধারণ লোকেরা ত প্রাচীন গ্ৰীক ভাষা শেখেই নাই, বরং নব্য গ্রীকে লেখা বন্ধ করায় তাহাদের পড়া শুনার অভ্যাস ও গৃহশিক্ষা একেবারে কমিয়া গিয়াছে ; তাহারা দুকুল হারাষ্টয়াছে। তখন নব্য গ্রীকের ব্যবহার ফিরিয়া আসিল । আর এক দৃষ্টান্ত দেখুন। নৰ্ম্মানগণ ইংলও জয় করিয়া প্রথমে তাহদের পৈত্রিক ফরাসী ভাষা ব্যবহার করিতেন; —রাজসভায়, আদালতে, গির্জায়, পুস্তকে ঐ ভাষা চলিত। কিন্তু ইংলণ্ডের লক্ষ লক্ষ লোক তাহা বুঝিত না। তাঙ্গাদের মধ্যে পুরুষানুক্রমে বাস করিয়া এবং ক্রমে ফ্রান্সের • সহিত সম্বন্ধ হারাইয়া ইংলওঁীয় নৰ্ম্মানদের ভাষা এমন বিকৃত হইয়া গেল যে তাহা গুনিলে ফরাসীরা হাসিত, সে ভাষায় ভাল বষ্ট লেখা বন্ধ হইল। তিন শত বৎসর পরে এই অস্বাভাবিক চেষ্টা ছাড়িয়া নৰ্ম্মানের স্বীকার করিলেন, “আমরা ইংলওবাসী, সুতরাং নৰ্ম্মানবংশজ হইলেও ইংরাজ, আমরা ইংরাজী ভাষা ব্যবহার করিব।” সেই দিন ইংলণ্ডে আশ্চৰ্য্য সাহিত্যের অভু্যদয় হুইল । ইংরাজী কবিতার প্রভাত-নক্ষত্র মহাকবি চসার রাজসভায় দেখা দিলেন। তাহার ভাষা সামান্ত একটু আদর্টু বদলাইয় আজ পর্য্যন্ত চলিতেছে । এ যে শুধু ইংলণ্ডুে ইয়াছে তাহ নয়। আরবের নাহাবল যুদ্ধক্ষেত্রে ( ৬৪৪ খৃঃ ) পারস্ত দেশ জয় করিয়া তথায় মহম্মদীয় ধৰ্ম্ম ও আরবী ভাষার প্রতিষ্ঠা করিলেন। কয়েক শতাব্দী ধরিয়া পারস্তের পণ্ডিতেরা ও রাজকৰ্ম্মচারীরা