পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 o 8 কষ্টে স্বষ্টে আরবীভাষায় গ্রন্থ ও দলিল লিখিতে লাগিলেন। কিন্তু প্রকৃতির বিরুদ্ধে এষ্ট সংগ্রামের ফল হইল যে পারস্তে লিখিত আরবী গ্রন্থগুলির তেমন মূল্য নাই, এবং পাসী প্রজাদের মধ্যে জ্ঞান বিস্তার ও সাহিত্য চর্চা বন্ধ হইল। তখন ফির্দেীসী দেখা দিলেন ; তিনি দেশী ভাষায় তাঙ্গর অমর কাব্য লিখিয়া লক্ষ লক্ষ লোকের মন চুরি করিলেন ; তখন হষ্টতে ফারসী ভাষাই পারস্তের সাহিত্যের ভাষা হইল এবং আজ পর্য্যন্তও তাঙ্কণষ্ট রহিয়াছে। আবার, এক দিকে যেমন পারস্তে ফারসী ভাষার জয়, অন্য দিকে ঠিক সেই কারণেই তুরস্কে তাহার পরাজয়। ফারসী ভাষা মুসলমানজগতে ভদ্রভাষা বলিয়া গণ্য, তাই প্রথমে তুর্কী কবিগণ ফারসী পদ্য লেখেন, কিন্তু তাঙ্গতে ঠিক মনের কথা মনের মত ভাবে প্রকাশ পায় না। শেষে তাহারা ফারসী ছাড়িয়া তুর্কীভাষাতেই পষ্ঠ লেখেন এবং তাহ! বেশ সরস ও সজীব হইয়াছে। অস্তান্ত দেশের ইতিহাস এই সাক্ষ্য দিতেছে। এখন দেখা যাক ভারতে কি ঘটিয়াছে। মুসলমানের উত্তর ভারত জয় করিয়া বসতি করিতে আরম্ভ করিলে পর প্রথমে র্তাহীদের ইতিহাসগুলি আরবীতে লেখা হইত। কিন্তু এক শত বৎসর যাইতে না যাইতেই দেখা গেল যে সে ভাষা পণ্ডিত ভিন্ন আর কেহ বুঝে না, এবং ভারতীয় পণ্ডিতগণকেও বিশুদ্ধ ভাবে আরবী লিথিতে বেগ পাইতে হয় । তখন ফারসীতে বই লেখা আরম্ভ হইল, এবং আগেকার আরবী বইগুলি ফারসীতে অনুবাদ করা হইল । এইরূপে চারিশত বৎসর কাটিয়া গেল, তখন ফারসীও ভারতীয় মুসলমানদের নিকট বিদেশীয় ভাষা হইয় দাড়াইল। মোঘল বাদশাহের তিন পুরুষ ভারতে থাকিতে না থাকিতেই এমন পাক ভারতবাসী হইয়া উঠিলেন যে পৈতৃক চাঘতাই তুৰ্কী ভাষা ত্যাগ করিয়া ভারতীয় উর্দুতে কথাবার্ত কহিতে লাগিলেন। তাছাদের ছেলের পরম্পরকে ডাকিতে হইলে আরবী আখ বা ফারসী ‘cदब्रांशद्भ' नां वणिग्नां श्निौ ‘डांछे' ७ ‘मांन' वणिङ । এইরূপে আওরাংজীবের কুমার অবস্থায় লিখিত ফারসী চিঠিতে ‘ভাই মুরাদ বখশ্ৰ’, ‘দাদা ভাই” অর্থাৎ অগ্রজ দারাগুকে, এইরূপ ভারতীয় শব্দ পাওয়া যায়। এ দেশী প্রবাসী—মাঘ, ১৩১৭ { ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড অনেক নাম তাহাদের পরিবারে প্রবেশ করিল, যেমন “পুট বেগমৃ’, ‘মতি বিৰি ’ শাহজাহান উর্দুতে অতি স্বনার গান রচনা করিতেন ও গাহিতেন, এ কথা পাদিশাহনামাতে লেখা আছে । আপনারা জানেন যে যাহা প্রাণের ভাষা তাহাই গানের ভাষা । আমরা জোর করিয়া বিদেশী ভাষায় গদ্য এবং কোন কোন শ্রেণীর পদ্যও রচনা করিতে পারি, কিন্তু নিজের ভাষায় গান না গাহিলে প্রাণের পিপাসা মিটে না, মনের তৃপ্তি হয় না। সুতরাং শাহজাহানের সময়েই যে উর্দ, বাদশাহদের পর্য্যন্ত ঘরের ভাষা হইয়াছিল তাহার প্রমাণ আছে । আবার মাসির-ই-আলমৃগিরি নামক ইতিহাসে পড়া যায় ষে একজন বাঙ্গালী মুসলমান দাক্ষিণাত্যে গিয়া আওরংজীবের শিষ্য হইতে চায়, কিন্তু বাদশাহ অস্বীকার করিয়া একটা চিনি পদ্য আওড়ান। ইহাতেই বুঝা যায় তাহার স্বাভাবিক ভাষা ফারসী ছিল না। আর আওরংজীবের মৃত্যুর কিছু দিন পরে ত কাগজ পত্র ইতিহাস পন্থ, সমস্তষ্ট উর্দুতে লেখা হইতে লাগিল । যদি দিল্লীর বাদশাহগণ তুর্কী ছাড়িয়া ফারসী ছাড়িয়া উর্দু ব্যবহার করায় তাহাদের থানান বা ধর্শের কিছুমা ক্ষতি না হইয়া থাকে, তবে বঙ্গের মুসলমানগণ উর্দ, ছাড়িয়া বাঙ্গল বলিলে যে র্তাহাদের বংশমর্য্যাদা বা মুসলমানত্ব কেন কমিয়া যাইবে তাহার সন্তোষজনক কারণ এ পর্য্যস্ত পাই নাই । যে কারণে বাবরের উত্তরাধিকারিগণ একশত বৎসরের মধ্যে ভারতীয় ভাষা উর্দু, অবলম্বন করেন, সেই কারণেই ধঙ্গীয় মুসলমানগণের বাঙ্গলা ভাষা অবলম্বন করা অনিবাৰ্য্য, ইহাষ্ট ইতিহাস সাক্ষ্য দিতেছে, ইহাই প্রকৃতির নিয়ম। এ প্রদেশটা পূর্ববঙ্গ বলিয়া যে এখানে প্রকৃতির নিয়মের ব্যতিক্রম হইবে, এরূপ আশা করিবার কোন কারণ নাই। এখন দেখা যাক এই অসাধ্য সাধনের চেষ্টা করিয়া বাঙ্গালী মুসলমান ভ্রাতারা কি লাভ করিতেছেন। বাঙ্গালীর পক্ষে জোর করিয়া বাঙ্গলা সাধুভাষা ছাড়ার (১) প্রথম ফল তাহাদের ছেলেদের শিক্ষার বিভ্রাট। এ বিষয়ে বিজ্ঞ স্থলেখক স্কুল ইনস্পেক্টর শ্ৰীযুক্ত আবদুল করিমের মত আপনারা জানেন । তিনি অতি পরিষ্কার করিয়া দেখাইয়