পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] আধ্যাত্মিক উন্নতি করতে হলে সংসারবন্ধনে থেকে তা হবার যে নেষ্ট-সন্ন্যাসী হতে হবে ।” শুনিয়া সুশীলা আপন মনে বলিতে লাগিল—“নিজের আধ্যাত্মিক উন্নতি করতে হলে সংসাধবন্ধনে থেকে তা হবার যে নেই, সন্ন্যাসী হতে হবে । আচ্ছা, আধ্যাত্মিক উন্নতি কি ?” প্রমথনাথ হাসিয়া বলিল ---“ আমি কি তোমার অভিধান না কি ? যাও অভিধান দেখ গে " স্বশীল বলিল—“আধ্যাত্মিক কথাটার মানে কি আর আমি জানিনে মশাই—তা জানি। আমি শুধু জানতে চাচ্ছি-আধ্যাত্মিক উন্নতি ব্যাপারটা কি । যেমন শারীরিক উন্নতি বল্পে বোঝা যায় যে তার গায়ে খুব জোর হয়েছে—সে খুব কুস্তী লড়তে পারে ইত্যাদি—মানসিক উন্নতি বল্লে বোঝা যায় যে তার খুব বৃদ্ধি হয়েছে—খুব ভাল অঙ্ক কষতে পারে, খুব শক্ত শক্ত বিষয় পড়ে সহজেই বুঝতে পারে, ভাল ভাল বই লিখতে পারে —নৈতিক উন্নতি বল্পে যেমন বোঝা যায় সৰ্ব্বদা সত্য কথা কয়, কারো পাপকার্য্য সেই রকম আমায় বলে দাও, আধ্যাত্মিক উন্নতি বলতে কি বোঝায় ।” প্রশ্নটি গুনিয়া প্রমথনাথ কিছু বিব্রত হইয়া পড়িলেন— বলিলেন—“ওটা কি জান ?—এই ধর—যেমন—সেকালের মুনি ঋষিরে তারা যে রকম নিজের উন্নতি করেছিলেন।” সুশীল একটু দুষ্টামির হাসি হাসিয়া বলিল—“নারদ ঋষি বীণা বাজাতে বাজাতে আকাশ দিয়ে উড়ে যেতে পারতেন। মোহিত বাবু হাৰ্ম্মোনিয়ম বাজাতে বাজাতে উড়তে চান ?” প্রমথনাথ হাসিয়া বলিলেন—“নারদ ঋষি শুধু যে উড়তে পারতেন তা নয়—ঈশ্বরের সাক্ষাৎ পেতেন । র্তার মত ঈশ্বরভক্ত খুব কম।” স্বশীল বলিল—“তা হলে মোহিত বাবুর মত, বিবাহ করলে ঈশ্বরকে ভাল করে ভক্তি করা যায় না।” “তাই। তার মত, সমস্ত ছেড়ে ছুড়ে সংসারের বাইরে গিয়ে না বসলে, ভক্তির একাগ্রত হয় না ।” অনিষ্ট করে না, কোনও রকম করে ন!—পাপচিস্ত মনে স্থান দেয় না— नरीौन जत्रप्रांशौ 8ሡ® স্বশীল মৃদু মৃদু হাসিতে লাগিল। বলিল—“এ কি রকম জ্ঞান ?” “কি রকম ?” “লক্ট না পড়ে সমালোচনা ।” প্রমথ বাবু একটু বিস্মিত চষ্টয়া স্ত্রীর মুখের দিকে চাঙ্গিলেন । বলিলেন—“তোমার কথাটা বুঝলাম না ।” স্বশীল ধীরে ধীবে বলিতে লাগিল—“ঈশ্বরকে ভক্তি করার মানে এ ত নয় যে রোজ একশে। আটবার কি হাক্তারলার কি লক্ষবার তার নাম জপ করতে হবে— কিম্বা ধূপ ধনে জালিয়ে সন্দেশ মণ্ড দিয়ে তার পূজো দিতে হবে ?” * প্রমথ বাবু স্বীকাব কবিলেন—“তা ত নয়-ই।” সুশীলা বলিল-“তিনি স্নেহ করে, করুণা কল্যাণ সাধন করেছেন -—তার আশীৰ্ব্বাদ করে, আমাদের যা স্বরূপ র্তাব কাছ থেকে নিত্য যে সকল সখেব সামগ্ৰী পাfচ্ছ--সেই সকলের জন্তে তার প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া, তার সমস্ত বিধান যে মঙ্গলময় এক্টটে মনে মনে উপলব্ধি করা–এবষ্ট নাম ত ভক্তি ?” প্রমথনাথ বলিলেন--” অস্ততঃ আমি তাই মনে করি ।” “তধে দেখ —তুমি যদি বিবাহ না কর,--শ্রীর ভালবাসা, পুত্ৰকস্তার স্নেঙ্গ—তোমার জন্তে এষ্ট সকল সুন্দর উপকারগুলি হাতে কবে এসে তিনি দাড়ালেন--আর তুমি যদি তা গ্ৰহণ না করে, বিমুখ হয়ে বনে চলে চাও, আর সেখানে বসে তাকে ভক্তি কর—তাহলে বই না পড়ে সমালোচনা, রান্না না চেখে রাধুনির প্রশংসা করা হল না কি ?” স্ত্রীর মুখে এই কথাগুলি শুনিয়া প্রমথনাথের চক্ষু দুইটি উজ্জ্বল হইয়া উঠিল । তিনি গভীর আনন্দে সুশীলার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া বলিলেন—“বড় সুন্দর উপমাটি দিয়েছ ত !—আমি ত এত পড়াশুনো করেছি—এ সকল বিষয়ে চিন্তাও করেছি—কিন্তু এমন সরল যুক্তিটি কখনও ত আমার মাথায় আসেনি।” স্বশীল তাহার ক্ষণিক গাম্ভীৰ্য্য পরিত্যাগ কবিয়া চপলহাস্তের সহিত বলিল—“আসবে কি করে—পুরুষের মাথা বৈ ত নয় ।” তামিব