পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] তিনি বলিয়াছেন শ্রদ্ধাপূর্ণ সেবার ভাবে যে-কোন কাৰ্য্য করা যায় ঈশ্বর তাহাকেই তাহার উপাসনা বলিয়া গ্রহণ করেন । অতএব জগতের মধ্যে ও সমাজের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তির যে বিশেষ কৰ্ম্মক্ষেত্র নির্দিষ্ট আছে সেইখানেই সত্যভাবে আপন কৰ্ত্তব্য সকলকেই পালন করিতে হইবে । • সেই জন্ত প্রত্যেক বাতায়ীকেই তিনি নিজের ও অন্তের fহতের উদ্দেশ্যে কোন একটি শিল্প, বাণিজ্য বা ব্যবসায় অবলম্বন করিতে বিশেষরূপে আদেশ দিয়াছেন । ইহা ছাড়া তাহার আর একটি এই উপদেশ যে---স্ত্রী ও পুরুষের মহত্তম কর্তব্য এই যে পরিবারকে এমন করিয়া গড়িয়া তুলিতে হুইবে যাহাতে সস্তানবর্গ উপযুক্তরূপে নৈপুণ্য ও সুশিক্ষা লাভ করিয়! স্বজাতিকে উন্নতির পথে অগ্রসর করিবার যোগ্যতা প্রাপ্ত হয় । এই উদ্দেশু সাধনের জন্থ তাহার মতানুবৰ্ত্তা প্রত্যুেকেরই প্রতি তাহার অনুশাসন এই যে তাহারা পুত্র কন্ত উভয়েরই জন্ত সমানভাবে যথাসাধ্য সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা করিয়া দিবে। এই সম্বন্ধে তিনি এই সুন্দর বাক্যটা বলিয়াছেন, যে-কোন ব্যক্তি সস্তানদিগকে সুশিক্ষা দেন তিনি আমার আপন পুত্র কন্যাদিগকেই শিক্ষা দিয়া থাকেন। তাহার আর এক বিধান এই যে সমুদয় শিক্ষক ও গুরুর জন্ত বিশেষ সম্মান ও জীবিকার ব্যবস্থা করিয়া দিতেই হক্টৰে । বাঙ্গা উল্লা যেমন একদিকে ভিক্ষাবৃত্তি একাস্তভাবে নিষেধ করিয়াছেন তেমনি অপরদিকে তাহার অনুবৰ্ত্তিগণের প্রতি তাহার এই অনুশাসন ছিল যে যাহার প্রয়োজন ঘটিবে তাহাকেষ্ট কাজ জোগাষ্ঠয় দিতে হইবে । তিনি বলেন অনন্তোপায় অক্ষম ও পীড়িতদিগের এবং 'অসহায় বিধবা ও শিশুদিগের ভার বিশেষ ভাবে সমাজের উপর থাকিবে। এই উদ্দেস্তে, প্রত্যেক বাহারীকে, যোগ্যতা অনুসারে অর্থ দিতে হইবে—এবং নিৰ্ব্বাচিত প্রতিনিধির দ্বারা যে সমিতি স্থাপিত হইবে সেই সমিতিগুলিই বিচার করিয়৷ এই ধন-ভাণ্ডারকে ব্যবহারে লাগাইবেন । এই সমিতিগুলির নাম হুইবে দ্যায়ভবন । প্রত্যেক দল বা সমাজ ন্তায়নিষ্ঠ, সচ্চরিত্র ও বুদ্ধিমান ব্যক্তিগণকে নিৰ্ব্বাচন করিয়া এইরূপ সমিতি গঠন করিবে । এক একটি সম্প্রদায়ের যেমন এক একটি দ্যায়ভবন থাকিবে সংকলন ও সমালোচন—বাহ-ধৰ্ম্ম HIV তেমনি আবার প্রত্যেক নেশনের জন্ত একটা করিয়া সাধারণ দ্যায়ভবন স্থাপিত হইবে এবং ভিন্ন ভিন্ন জাতির প্রতিনিধি সংগ্ৰহ করিয়া একটি সাৰ্ব্বভৌমিক দ্যায়ভবন প্রতিষ্ঠিত হইয়া সৰ্ব্বপ্রকার আন্তর্জাতিক বিরোধের নিম্পত্তি করিয়া দিবে। * বাহাউল্লা আরো বলেন যে আধ্যাত্মিক তত্ত্বসকল শিক্ষা দিবার জন্ত, সাধারণ লোক হইতে স্বতন্ত্র কোন পুরোহিত বা যাজকশ্রেণী থাকিবে না। শিক্ষা ও চরিত্র গুণে র্যাঙ্কার! উপযুক্ত হইলেন র্তাহারাই এই কার্য্যের ভার গ্রহণ কfরবেন। এজষ্ঠ তাঙ্গার কোন বেতন বা কোন নির্দিষ্ট দান পাইবেন না। অন্তান্ত সকল বাঙ্কণয়ীর দ্যায়, তাহাদিগকেও, আপন আপন গ্রাসাচ্ছাদনের জন্ত উপার্জন করিতে হইবে । স্ত্রী পুরুষের ব্যবহারিক ও পারমার্থিক অধিকার সম্পূর্ণ সমান— ইহা অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাবে তিনি প্রচার করিয়াছেন । অনুবৰ্ত্তীদিগের প্রতি র্তাহার বিশেষ উপদেশ এই যে, জগৎব্যাপী শান্তি স্থাপনার চেষ্টা করা, বিরোধ লয় করা, সকল জাতি ও সকল ধৰ্ম্মাবলম্বী লোকদিগের সহিত প্রকৃত ভ্রাতৃভাবে প্রেম ও সাহানুভূতির সহিত মিলিত হওয়া এবং মনুষ্য মাত্রকেই এক সত্যের সন্ধান প্রার্থী বলিয়া স্বীকার করা তাঙ্কাদের সৰ্ব্ব প্রথম কর্তব্য । এই উপদেশের প্রতিষ্ট তিনি সকলের চেয়ে অধিক জোর দিয়াছেন এবং ইঙ্গকেই তাহার সকল শিক্ষাৰ মূল ভিত্তি বলিয়া গণ্য করা যাইতে পারে । তিনি বলেন অতীত কালের সমুদয় ঋষি ও ধৰ্ম্মোপদেষ্টাগণকে ঈশ্বর-প্রেরিত বলিয়া স্বীকার করিতে হইবে। প্রত্যেক যুগের অবস্থার স্বাতন্ত্রা বশতঃ কালে কালে নুতন নূতন উপদেষ্টার অভু্যদয় আবগুক, তাহার একই ধৰ্ম্মকে কালোপযোগী করিয়া পুনঃ পুনঃ প্রচারিত করিবেন। বাহাউল্লার লেখায় বহুতর দিক আছে। সে সকলের আলোচনা বিশেষ কৌতুহলজনক হইলেও তাহার সেসকল উপদেশ কেবলমাত্র চারিত্রনৈতিক ও ব্যবহারগত নহে। যাহা উদারু ভাবে আধ্যাত্মিক, এই প্রবন্ধে কেবল সেইগুলিরই উল্লেখ করিব। o চল্লিশ বৎসর ধরিয়া বাহাউল্লা এক্ট ধৰ্ম্মের প্রচারকার্য্যে নিযুক্ত ছিলেন। তাছার জীবদ্দশায় তিনি যে অসংখ্য গ্রন্থ