পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] জামরা যেগুলি উদ্ধৃত করিয়াছি তাহারা ব্যবহারিক হিসাবে যে কিরূপ অমুকুল ও তাছাদের ক্ষেত্র যে কিরূপ বিশ্বব্যাপী তাঙ্গ সকলেই বুঝিতে পারিবেন। শ্ৰীহেমলতা দেবী । হিন্দুধৰ্ম্ম ও রাষ্ট্রনীতি * খৃষ্ট ধৰ্ম্ম, মুসলমান ধৰ্ম্ম, বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম, ও হিন্দু ধৰ্ম্ম, জগতের এই চারিটি প্রসিদ্ধ ধৰ্ম্মের ইতিহাস আলোচনা করিয়া দেখিলে পূৰ্ব্বোক্ত দুইটিকে পাশ্চাত্য ও শেষোক্ত দুষ্টটিকে প্রাচ্য বলিয়া শ্রেণীবদ্ধ করা যাইতে পারে । যে যে দেশে এইসকল ধৰ্ম্ম প্রতিষ্ঠালাভ করিয়াছে সেষ্ট সেই দেশের বাষ্ট্রনীতির সচিত তাঙ্গদের কি সম্বন্ধ আমাদের প্রবন্ধের তাছাই আলোচ্য বিষয় । eযথেষ্ট উন্নতি প্রাপ্ত সমাজেও যে বহুদেববাদ থাকিতে পারে গ্রীস ও রোম তাহাৰ দৃষ্টান্তস্থল । তাঙ্গর কারণ, গ্রীসে রাষ্ট্রনীতির সহিত ধৰ্ম্মের বিশেষ যোগ ছিল না ; গ্রীস রাষ্ট্রনীতিতে বর্তমান যুগের সমকক্ষ ছিল বটে কিন্তু ধৰ্ম্মমতে গ্রীসের জনসাধারণ অনেক পশ্চাতে পড়িয়া ছিল । কেবল সৰ্ব্বসাধারণের নৈতিক অবস্থার প্রতি গভমেণ্টের দৃষ্টি ছিল । অনাচার ও নৈতিক উচ্ছ জ্বলতাকে আইন বাধা দিত এবং সমস্ত দেশের প্রতি দেবতার কোপ যাহাতে আকৃষ্ট হয় এমন কোন প্রকাগু ধৰ্ম্মবিরুদ্ধ কার্য্য করিলে শাস্তির ব্যবস্থা হইত, এই পৰ্য্যন্ত দেখা যায়। দার্শনিক পণ্ডিতগণ যুক্তিকে ভিত্তি করিয়া নীতি শিক্ষা দিতেন এবং প্রচলিত কুসংস্কারের প্রতি দৃকপাত না করিয়া সেগুলিকে অবজ্ঞার সহিত সহ্য করিতেন । যদিও তাহারা প্রতিমাপূজায় আস্থাবান ছিলেন না তবু তাহারাষ্ট এইরূপ পূজাঅনুষ্ঠানের উপকারিতা সম্বন্ধে উপদেশ দিতেন। গ্রীকদের অপেক্ষ রোমানদের রাজত্বে ধৰ্ম্মের সহিত রাষ্ট্রব্যাপারের ঘনিষ্ঠত্তর যোগ ছিল। রোমের গভমেণ্ট কখনো পরাজিত জাতির ধৰ্ম্মে হস্তক্ষেপ করে নাই ; এই জন্তই অল্প সময়ের মধ্যে রোমের শাসনাধীনে বিশাল সাম্রাজ্য স্থাপিত হইতে পারিয়াছিল। তথাপি পূজা-অনুষ্ঠানের ঐক্যবন্ধনে ংকলন ও সমালোচন—হিন্দুধৰ্ম্ম ও রাষ্ট্রনীতি • ধৰ্ম্ম-ইতিহাস আলোচনার আন্তর্জাতিক সভায় সার আলফ্রেড লায়াল কর্তৃক পঠিত প্রবন্ধ হইতে সঙ্কলিত । ·ථI সকল প্রজাকে এক করিবার প্রতি রোমের রাষ্ট্রনীতির চেষ্টা ছিল । রোম অধীন জাতি সকলের দেবতাদিগকে কোন প্রকারে রোমীয় করিয়া লইত । এইরূপে রোম একদিকে এককেন্দ্রীভূত সাম্রাজ্যচালন ও অন্যদিকে বিচিত্র ধৰ্ম্মের প্রতি সহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত একত্রে দেখাইয়াছে। বৰ্ব্বর ইয়োরোপ সহজেই রোমের প্রাধান্ত স্বীকার করিয়াছিল। রোমানরা এ পর্য্যস্ত কোন গভীর ধৰ্ম্মনিষ্ঠ জাতির সংস্পর্শে আসে নাই । কিন্তু তাহারা যখন এসিয়া জয় করিতে আরম্ভ করিল তখন প্রাচ্য ধৰ্ম্মের বস্তা আসিয়া ইয়োরোপকে আঘাত করিল। রোমানরা অপেক্ষাকৃত দৃঢ়তর ও গভীবতর অধ্যাত্মিক ভাবের পরিচয় লাভ করিতে লাগিল । ইয়োরোপের নানা ধৰ্ম্মকে নিজের আয়ত্তের মধ্যে আনা রোমের পক্ষে সহজ ছিল কিন্তু প্রাচ্য ধৰ্ম্ম বশ মানিবার নহে। প্রাচ্য দেশীয় উদ্দাম ধৰ্ম্মোৎসাহ ও বিচিত্র পূজা-অনুষ্ঠান স্বশৃঙ্খল প্রণালীবদ্ধ রোমান রাজ্যে মহা গোলযোগ বাধাইয়া তুলিল। তথাপি, ধৰ্ম্মকে রাষ্ট্রনীতির অনুগত করিবার জন্ত রোমের যে বিশেষ চেষ্টা ছিল তাহ এসিয়ায় একেবারেই ব্যর্থ হয় নাই। রোমকের পুরোহিতদের ক্ষমতা অনেকটা কমাষ্টয়া আনিল ধৰ্ম্মের মধ্যে একটা সীমা টানিয়া দিল। ক্রমে বিজিত এসিয়ার ধৰ্ম্মতন্ত্রে রোমান দেবতারও স্থান হইতে লাগিল । অবশেষে রোমান সাম্রাজ্যে যখন ধৰ্ম্ম শতধা হইয়া পড়িল তখন খৃষ্টধৰ্ম্ম আপন কঠোর সন্ন্যাস ও অচলা ভক্তি লষ্টয়া আবিভূত হইল। বৃহবন্ধ সেনার সন্মুখে যেমন কোন অসংযত জনতা টিকিতে পারে না, সেইরূপ খৃষ্টধর্মের নিকট উচ্চ খল বহুদেববাদ টিকিতে পারিল না। রোমের প্রজাগণ একচ্ছত্র সাম্রাজ্যের বিধিবিহিত যে-সকল ক্রিয়া কৰ্ম্ম সম্পন্ন করিত এই নবধৰ্ম্ম একেবারে তাহার মূলে গিয়া আঘাত করিল। খৃষ্টানদের নিক্রিয় প্রতিকূলতাকে (Passive resistance) conta reoss forate of not গণ্য করিল এবং তাহাদিগকে পীড়ন করিতে আরম্ভ করিল। কিন্তু আধ্যাত্মিক শক্তি ও নৈতিক বলেরই জয় চট্টল, এবং খৃষ্টান ধৰ্ম্ম রোমে প্রতিষ্ঠিত হইল। একচ্ছত্র সাম্রাজ্যের সঙ্গে একধৰ্ম্মের যোগ হওয়াতে জাতীয় ও লৌকিক প্রভেদগুলি চলিয়া গেল । চার্চ অর্থাৎ ধৰ্ম্মসত্ত্য নিজের অধিকারের