পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ]


...--" "...

—তুমি আমাকে বিলাসিতার মধ্যে রেখে আমার জীবনকে ছুঃসহ করে তুলেচ–আমি তোমার প্রতি কি অবিচার করেছি ? তার শত গুণ অবিচার তুমি আমার প্রতি করেচ ! বুঝেচ ? বেশ! সব বুঝতে না পার এইটুকু বোঝ ষে আমি তোমাকে ঘৃণা করি—অস্তরের সঙ্গে ঘৃণা করি !” বাটি নিজেকে একটা টেবিলের পাশে আড়াল করিয়া উন্মত্তের প্রলাপের মতো বকিয়া যাইতেছিল—সেতারের তার খুব কড়া করিয়া বাধিলে তাহ যেমন ছিড়িবার উপক্রম করে বাটির মনে হইতেছিল তাহার দেহের স্বায়ুগুল তেমনি ছিড়িবার উপক্রম করিতেছে! সে টেবিলের আড়ালে ভয়ে ভয়ে দাড়াইয়াছিল কারণ সম্মুখে ফ্র্যাঙ্ক রোষকষায়িত লোচনে বজ্ৰমুষ্টিতে দণ্ডায়মান—যেন বাঘের মতো লাফাইয়া পড়িয়া আক্রমণ করিবার জন্য উন্মুখ! কখন বাটির কথা শেষ হয় তিনি তাহারষ্ট অপেক্ষা করিতেছিলেন । বাটি আর কোনো কথা খুজিয়া না পাষ্টয়া আবার বলিল—“হা, আমি তোমাকে ঘৃণা করি।--হীন পশুর মতো ঘৃণা করি ” ফ্র্যাঙ্ক আর ধৈর্য্যধারণ করিতে পারিলেন না। একটা ভয়ঙ্কর হুঙ্কার দিয়া টেবিলের উপর লাফাইয়া উঠিলেন— টেবিল টলমল করিয়া সবসুদ্ধ বাটির ঘাড়ে আসিয়া পড়িল ; —ফ্র্যাঙ্ক তাড়াতাড়ি বার্টির গলা ধরিয়া তাহাকে টেবিলের নীচে হটতে টানিয়া বাহির করিলেন, তারপর ঘরের মধ্যখানে আনিয়া এক আছাড়ে ফেলিয়া দিয়া তাঙ্কার বুকে চাপিয়া বসিলেন —রক্তের পিপাসার মতো একটা পাশবিক তৃষ্ণ ফ্র্যাঙ্কের সমস্ত বুক শুষ্ক করিয়া জাগিয়া উঠিল । শক্রকে কবলে পাইয়াছেন বলিয়া দানবীয় আনন্দের একটা হাস্তরেখা মুখে ফুটিয়া উঠিল । তিনি সজোরে বার্টির গলাটা বাম হাতে চাপিয়া ধরিলেন ; বাঘের মতে গর্জন করিয়া তিনি দক্ষিণহস্তের বজমুষ্টি উত্তোলন করিলেন । ছম! দুম ! দুম ! ঘুসি উঠিতে ও নামিতে লাগিল। দুম ! ঘুম ! ছম । কানে মুখে চোখে সৰ্ব্বত্র বজের মতো পড়িতে লাগিল ঘুসি ! ফ্র্যাঙ্ক পৈশাচিক আনন্দে হাকিয়া উঠিলেন—“কেমন । ভাগ্যচক্র • ® ዓ » কেমন ! কেমন!” সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত ঘর কাপাষ্টয়া শব্দ উঠিতে লাগিল—“দুম ! স্কুম ! ঘুম !" फूब ! झध ! श्म ! —লালিমার একটা কুহেলিকা ফ্র্যাঙ্কের চোখের সামনে জমিয়া উঠিতে লাগিল । সমস্ত লালে লাল ;–লাল ং-মশালের আলোর একটা ঘূর্ণি চোখের সামনে অনবরত ঘুরিতে লাগিল—তাকার মধ্য হইতে থাকিয়া থাকিয় ফুটিয়া উঠিতেছে ও কী ভীষণ মৃত্যুবিবর্ণ মুখ । ঘরের মেঝে, কড়িকাঠ, দেয়াল, সব ঘুরিতেছে,দুলিতেছে —একটা ভীষণ লালিমার আবর্তে ! সে কি বিচিত্র লাল ! কোথাও শেষ নাই সে লালিমার—কোথাও শেষ নাই সে ঘূর্ণির। নেশার মতো তার আচ্ছন্নতা, স্বপ্নের মতে তার অস্পষ্টতা, উন্মত্ততার মতো তার নৃত্য | রক্তের সে কী প্রহেলিকা ! • . ، ، ، ، ، ، ، ، а ফ্র্যাঙ্ক কঠোর হস্তে গলা চাপিয়া ধরিলেন-খুসি । পড়িতে লাগিল গ্লুম, চুম, চুম ! হঠাৎ দ্বার খুলিয়া গেল। ইভা চুটিয়া ঘরে প্রবেশ করিলেন ;–সেই রক্তিম কুয়াশার জাল ভেদ করিয়া, ছিন্ন করিয়া, দুই হাতে সরাইয়া তিনি ফু্যাঙ্কের সম্মুখে আসিয়া দাড়াইলেন । "ফ্র্যাঙ্ক । ফু্যাঙ্ক' থামো—থামো। আর নয়, আর নয় ।” ফু্যাঙ্কের গত শ্লথ হইয় গেল ; তিনি স্বপ্নাবিষ্টের মতো ইভার পানে চাছিলেন। ইভা তাঙ্গাকে টানিয়া বাধা দিয়া বাটিকে র্তাহার কবলমুক্ত করিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন । —"ফ্র্যাঙ্ক । ছাড়ো, ছাড়ে । উঠতে দাও—মেরে ফেলো না ! আমি এতক্ষণ বাহিরে দাড়িয়েছিলুম—ভারি ভয় করছিল। তোমরা ডচ ভাষায় কথা কইছিলে তাষ্ট কিছু বুঝতে পারছিলুম না । হায় ! হায় ! ফ্র্যাঙ্ক চেয়ে দেখ, চেয়ে দেখ বার্টির কি অবস্থা করেছ।” ফ্র্যাঙ্ক দাড়াষ্টয়া উঠিলেন–রক্তের সেই উন্মত্ততায় র্তাহীর চক্ষু ধাধিয়া গেল—তিনি চোখ ঢাকিয়া ফেলিলেন । “শাস্তি! শাস্তি —যেমন কাজ তার উপযুক্ত শাস্তি আমি দিয়েছি—এখনো হয়নি আরো বাকী আছে।”