পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6ी १२ বলিয়া ফ্র্যাঙ্ক আবার আক্রমণ করিতে উদ্যত হইলেন ;— রক্তের পিপাসা আবার তাঙ্কার বুকের মধ্যে জাগিয়া উঠিতে লাগিল । ষ্টভ। দুষ্ট বাহু দিয়া তাঙ্গকে ঘেরিয়া বলিলেন—“না, ফ্র্যাঙ্ক ! না । আর না। যথেষ্ট হয়েচে । অবস্থা করেচ ।” ফ্রাঙ্ক ঘৃণার সহিত গৰ্জ্জন করিয়া বলিয়া উঠিলেন—- দেখ ওর কি “তবে উঠক, আব পড়ে কেন ? 0 ! ওঠ ! -পাজি কোথাকার ওঠ !” ফ্রাঙ্ক জুতার ঠোক্কর দিয়া তাঙ্গাকে বলিতে লাগিলেন—“ওঠ, ওঠ, ওঠ !” এক ঠোক্কর, দুই ঠোকর, তিন ঠোক্কর । তবুও বার্টি উঠিল না । ইভা বার্টির পাশে বসিয়.পড়িয়া কাতর কণ্ঠে বলিতে লাগিলেন—“আহে। হা হা ! দেখ দেখ দেখ, বেচারার কি দুৰ্গতি হয়েছে। দেথচ না কি হ’ল ?” ফ্র্যাঙ্ক চাছিলেন। রক্তের নেশা যেন তাহার কাটিয়া গেল । তিনি ভয়বিহবল নেত্রে চাহিয়া দেখিলেন— বাটি পড়িয়া আছে—স্থির । বুকে স্পন্দন নাই, চোখে পলক নাই, মুখ নীল—তাহার উপর রক্তের বিন্দু, ঝরিয়া ঝরিয়া মেঝেয় আসিয়া গড়াইয়া পড়িয়াছে । * * * * বাহিরে ভীষণ গৰ্জ্জন ঝড় বৃষ্টি বিদ্যুৎ ! ঘরের ভিতর মৃত্যুর অনন্ত নিস্তব্ধতা—সেই নিস্তব্ধতার মধ্যে দুষ্ট জনে দাড়াইয়া ভয়ব্যাকুলনেত্রে চাহিয়া রছিলেন সেই নীল স্থির দেহের পানে ! ইভা বাটির দেহের উপর একবার নত হইয়া কান পাতিয়া শুনিলেন সত্যই বুকের শব্দ থামিয়া গেছে কি, না । তারপর ভয়ে কঁাপিতে কঁাপিতে দাড়াষ্টয়া উঠিলেন – ফ্র্যাঙ্ককে তুষ্ট বাহু দিয়া জড়াইয়া ধরিয়া রুদ্ধকণ্ঠে বলিলেন— "ফ্র্যাঙ্ক ! বাটি নেই, বাটি আর নেই। চল, চল আমর পালাই ।” —“বাটি নেই ?” ফ্র্যাঙ্ক অস্পষ্টভাবে বলিলেন—“বাটি নেই ।” তাঙ্গার মনের ঘোর তখন কাটিয়া যাইতেছে— তিনি মেন স্বপ্ন ভক্টতে জাগিয়া উঠিলেন । আর তাহার কোনো মোহ নষ্ট । ইভার বাহপাশ ছিল্প করিয়া তিনি প্রবাসী—ফাল্গুন ১৩১৭ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড বার্টির বুকের উপর গিয়া পড়িলেন-দেখিলেন, পরীক্ষা করিলেন, কান পাতিয়া শুনিলেন, তাহার মনে অস্পষ্টভাবে অনেক কথা উঠিল—ডাক্তার ডাকিবার কথা, সেবা শুশ্ৰুষার কথা, আরো অনেক কথা । সে সব কথা তিনি শুধু মুখে অস্পষ্ট ভাবে বলিয়া গেলেন -কিন্তু কাজে করিবার যেন কোনো শক্তি পাইলেন না । ফ্র্যাঙ্ক একবার চীৎকার করিয়া উঠিলেন---“ই ! বাটি মরেচে, সত্যই বার্টি মরেচে। কিন্তু আমি কি—?” ইভা ফ্র্যাঙ্ককে দুষ্ট বাহু দিয়া জড়াইয়া তখনও অনুনয় করিতে লাগিলেন, বলিতে লাগিলেন—"ফ্র্যাঙ্ক, দুটি পায়ে পড়ি তুমি পালাও, আর এখানে নয়।” কিন্তু ফ্র্যাঙ্কের মনের ঘোর তখন একেবারে কাটিয়া আসিয়াছে— প্রভাতের আলোকরশ্মি তাহার মনের কুহেলিকার উপর আসিয়া পড়িয়াছে, এখন তিনি সব স্পষ্ট করিয়া দেখিতেছেন, বুঝিতেছেন । আর তিনি স্থির থাকিতে পারিলেন না--সবলে ষ্টভার বাহপাশ ছিন্ন করিয়া উঠিয় দাড়াইলেন —একেবারে দরজার কাছে গিয়া বাহির হইবার উদ্যোগ করিলেন । ইভ দেখিলেন ফ্র্যাঙ্ক তাহাকে একেল ফেলিয়া চলিয়া যান, তিনি ভয়ে চীৎকার করিয়া উঠিলেন—“ও ফ্র্যাঙ্ক ! ফ্র্যাঙ্ক !” ফ্র্যাঙ্ক ফিরিয়া দাড়াইলেন অস্ফুটকণ্ঠে বলিলেন— “চুপ্‌ ! তুমি এইখানে অপেক্ষ কর ; আমি ফিরে আসচি! ইভার ইচ্ছা হইতেছিল তিনি ছুটিয়া গিয়া ফ্র্যাঙ্কের সঙ্গ লন, কিন্তু চাহিয়া দেখেন ফ্র্যাঙ্ক ততক্ষণে চলিয়া গেছেন । তিনি একবার চেষ্টা করিয়া উঠিয়া দাড়াইলেন—কিন্তু প কঁাপিতে লাগিল, চলিবার শক্তি নাই ! মৃতদেহের পাশে বসিয়া তিনি ভয়ে কঁাপিতে লাগিলেন । সম্মুখে মৃত্যুর সে কী বীভৎস লীলা ! রুদ্ধ অন্ধকারের মধ্যে ভয়ের সে কী তাণ্ডব নৃত্য ! তাঙ্গর নিশ্বাস রুদ্ধ হইবার উপক্রম হইল ;–ঘরের মধ্যে যেন নিৰ্ভয়ে গ্রহণ করিবার মতে! এতটুক বাতাস নাই । ইচ্ছা হইতেছিল একটা জালাল খুলিয়া দেন কিন্তু জানাঙ্গার কাছে যাইবার সাহস হইল না—ঐ যে সাসির ভিতর দিয়া দেখা যাইতেছে বাহিরের আকাশ-কী ভীষণ, কী রুদ্র,–যেন প্রলয়ের জন্ত