পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] আমরা কাহাকেও কাছাকেও বলিতে শুনিয়াছি যে দীর্ঘ জীবন লাভ করিতে হইলে যে সকল নিয়ম পালন করিতে হয়, সেগুলি অতীব দুরূহ ও কষ্টসাধ্য, সুতরাং এরূপ কঠোর ব্রত অবলম্বন করিয়া ক্লান্তিকর বাৰ্দ্ধক্যে উপনীত হষ্টয়া এমনষ্ট বা লাভ কি ? তদপেক্ষা জীবনের সুখ ও বিলাসৈশ্বৰ্য্য প্রভৃতি পূর্ণমাত্রায় উপভোগ করিয়া বৃদ্ধ ও অথৰ্ব্ব হুইবার পূৰ্ব্বেষ্ট জীবনলীলা সাঙ্গ করা সহস্ৰগুণে বলা বাহুল্য এরূপ যুক্তি নিতান্তষ্ট লমাত্মক, বলিতেছি তাহা শ্ৰেয়স্কর । কেন না আমরা যে বাদ্ধক্যের কথা কোনরূপেই ক্লাস্তিকর বা ক্লেশকব নহে ; ঠকাতে মানুষ অথৰ্ব্ব হয় না ; আনন্দের অভাব চয় না ; শারীরিক ও মানসিক শক্তিসামর্থ্য রক্ষিত হয় : আব একরূপ যন্ত্রণাবিহীন সহজ মৃত্যু দ্বারা ইঙ্গার সমাপ্তি হয়। দীর্ঘ জীবনলাভের সঙ্গে সুখসম্ভোগ ও আমোদ প্রমোদাদির যে চিরশত্রুত আছে তাঙ্গা নহে । চত লাভ করিতে চক্টলে যে কঠোর সন্ন্যাস ব্রত অবলম্বন করিতে কষ্টবে তাহারও কোন অর্থ নাই । সংযত হইয়া সকল প্রকার সুখই ভোগ করিতে পাবা যায়। তাতাতে পরমায়ুর হ্রাস তয় না । যথেচ্ছাচার ও উচ্ছ জ্বল হইলে চলিবে না। উহাতে পরমায়ুর হ্রাস হয় ও জীবন দুঃখময় হয়। সাধারণতঃ দেখা যায় দীর্ঘায়ু অনেক স্থলে কৌলিক । যে সকল ব্যক্তির পিতামাতা ও পুৰ্ব্বপুরুষগণ দীর্ঘকাল বাচিয়াছে, তাঙ্গদের পক্ষে দীর্ঘায়ুর আশা করা অন্যায় বা অসঙ্গত নয়, কিন্তু চেষ্টা করিলে স্বল্পায়ু বংশীয়ের যে দীর্ঘ জীবন লাভ করিতে না পারে এমন নয়। কুলক্রমাগত দোষ অথবা গুণ ভাবী বংশধরের উপর যে নিশ্চয়ই বৰ্ত্তিবে এমন কোন কথা নাই । দীর্ঘজীবীর সন্তানদিগের যেমন অকালে কালগ্রাসে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা, স্বল্পজীবীর বংশধরদিগেরও আবার চেষ্টা দ্বার দীর্ঘ জীবন লাভ করিবার তুল্যই সম্ভাধনা। আমরা এমন অনেক দৃষ্টাস্তের উল্লেখ করিতে পারি সেখানে অমিতাচারের জন্ত দীর্ঘায়ুবংশয়ের স্বল্পায়ু হইয়াছে আর স্বল্পায়ুবংশয়ের মিতাচার ও সংযম অবলম্বন করিয়া এবং বিশেষ বাছিয়া বুঝিয়া বিবাঙ্গ করিয়া দীর্ঘায়ু লাভ করিয়াছে। অকালবাৰ্দ্ধক্য নিবারণ ও দীর্ঘ জীবনলাভের উপায় , ৬২৫ স্বল্পায়ু বংশীয়দের দেখা উচিত তাঙ্গদের পিতামাতা ও নিকট আত্মীয়দিগের মৃত্যুর কারণ কি ? বহুমূত্র না হৃদরোগ, শ্বাস রোগ না ক্ষয়কাশ, না অদ্য কোন রোগ। বাল্যকাল হইতে সতর্কতা অবলম্বন করিলে এই সব কুলক্রমাগত রোগ প্রায়ই নিবারিত হয়, সুতরাং অকালমৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে না । শৈশব হইতে মিতাচার, পরিশ্রম ও exercise বা প্রাণায়াম অভ্যাস করিলে হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস প্রভৃতির রোগ সহজে চক্টতে পারে না । কোন ব্যক্তির কৌলিক বিশেষত্ব কি, তাহার শারীরিক ও মানসিক শক্তি কতদূর, তাহার আচার ব্যবহু বই বা কিরূপ, তাহার পারিপাশ্বিক অবস্থানিচয় বা কেমন, এষ্ট সকলের সম্ভবমত বিচার করিয়া তাঙ্কাকে অনায়াসে দীর্ঘ জীবন লাভের পক্ষে অমুকুল পরামর্শ দেওয়া যাষ্টতে পারে। breathing যাতার দেহযন্ত্রটির যে অংশটি স্বভাবতঃ দুৰ্ব্বল সেই অংশটিকে সবল করিবার জন্ত স্বতঃ পরতঃ চেষ্টা করা কর্তব্য। এই কথাটি আমরা যেন কখনও না ভুলি— আমরা ঘরেই থাকি আর বাহিরেই থাকি সব সময় আমদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ বায়ু সেবন করা উচিত। ইহাতে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং ব্যাধির আক্রমণও বহুল পরিমাণে হ্রাস হয় । , বুদ্ধ বয়সে শরীরের প্রত্যেক ইন্দ্রিয় ও অংশ প্রত্যংশের এত বেশি ক্ষয় হয় যে শেষে আর তাহারা উহাদের নিজ নিজ কাৰ্য্য করিতে পারে না, সুতরাং মৃত্যু ঘটে। আমাদের দেহের যত কিছু ক্ষয় হয় তাঙ্গ রক্ত হইতে পরিপূরিত হয়। আমরা যাঙ্গ আঙ্গার করি তাঙ্গ চইতে রক্ত নিৰ্ম্মিত চয় । কেহ যদি কিছু দিন আঙ্গর না করে তাঙ্গ হইলে তাচার শরীর শুকাইয়া শেষে মৃত্যু হয়। আমাদের শরীরের প্রত্যেক অংশ প্রত্যংশে কতকগুলি করিয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধমনী আছে, তাঙ্গদের মধ্য দিয়া শরীরের প্রত্যেক অংশ প্রত্যংশে রক্ত গমন করিয়া থাকে। বৃদ্ধ হইলে এষ্ট সকল ধমনীর অনেকগুলি শুকাইয়া যায় সুতরাং শরীরের যন্ত্রাদি ও অংশ প্রত্যংশের মধ্যে পূর্বের দ্যায় রক্ত যাইতে পায় না । এই কারণে তাহদের সম্পূর্ণ ক্ষয়পূরণ ইষ্টতে পারে না । ইহা ব্যতীত বুদ্ধ চক্টলে শরীরের যে সকল যন্ত্রে রক্ত প্রস্তুত হয় তাহারাও