পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ » . জিনিষটি অদ্ভুত কারুকার্য্যসম্পন্ন ;–কিন্তু, 33 শাচ বলিয়া উঠিল, “আপনি কি বলিতে চান ?” ডাক্তার বলিলেন, “জিনিষটি বস্তুতই অস্তুত ; এমন আজগুবি জিনিষ । পুরাকালের সয়তানের মত অদ্ভূত কারিকর ও কল্পনায় আনিতে পারিত কি না সন্দেহ । এমনধারা পাগলামে জিনিষ গুহে স্থান দিয়া দেখি বিষম দায়েই পড়িতে হইবে।” - শাচা যেন একটু দুঃখিত হইল, তথাপি সসন্ত্রমে নিবেদন করিল, “ডাক্তার সাহেব, শিল্পকলা সম্বন্ধে দেখচি, আপনার কেমনধারা ধারণা। এখানে কি আপনি কলা দেবতার জীবন্ত মূৰ্ত্তি প্রত্যক্ষ অনুভব করিতেছেন না ? এই সামান্ত দীপাধারে ত্ৰিদিপমুন্দরী শিল্পদেবতার পূর্ণ পরিস্ফুট লাবণ্যের প্রতিষ্ঠা দেখিয়া সেই শিল্পদেবতার চরণে কাহার মস্তক অবনত না হয় ? এইরূপ অতুলনীয়া ভুবনমোহিনী সুন্দরীর রূপ প্রত্যক্ষ করা দূরে থাকুক, কল্পনায় অঙ্কিত করিতে পারিলেও এ মর্ত্যভূমির অসার দ্রব্যসম্ভারের কথা মুহূৰ্ত্ত মধ্যে বিস্তৃত হইয়া যাইতে হয়, এবং স্বৰ্গীয় অমল ভাবে হৃদয় অনুপ্রাণিত হইয়া উঠে। দেখুন, এই সুন্দরী মূৰ্ত্তি দুইটির কেমন অপরূপ গঠন, স্বচিঙ্কণ কেশরাশি অবধি সুচারু পাদপদ্ম পর্যান্ত প্রতি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কেমন সামঞ্জস্ত, সুকুমার বদনে,—মচঞ্চল নয়নে, অধিক কি সুঠাম সুন্দর প্রতি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে কেমন জীবন্তভাব ফুটিয়া উঠিয়াছে ” ডাক্তার সাহেব অমনি বলিলেন, “তুমি যা বলিতেছ, সবই ঠিক ; আমি এসব উত্তমরূপেই বুঝিতেছি, এবং নিৰ্ম্মাতার অসাধারণ শিল্পকৌশলে বাস্তবিক মুগ্ধ হইয়াছি। কিন্তু এই সুন্দরীগণের স্বভাবসুন্দর নিরুপম দেহলাবণ্যের উপর বসনাধরণ নাই, এ মুক্ত সৌন্দৰ্য্য, —ছায়, আমি বিবাহিত। সংসারে আমার স্ত্রী আছেন, সদাসৰ্ব্বদা মহিলাগণের সমাগমে আমার আবাসগৃহ মুখর হইয় উঠে, বালক বালিকাগণও—” ডাক্তার কোশেলকে বাধা দিয়া শাচ অমনি কহিল, “অবশুই সৌন্দৰ্য্যজ্ঞানহীন সাধারণ লোকের চক্ষে এই দীপাধারের কলাকৌশল সমস্তই ভালান্তরের উদ্রেক করিতে পারে। তাহার সন্দেহ নাই ; কিন্তু শিল্পকলাই »०भ उठांश, २ध्न थ७ যাহাদের আরাধ্য দেবতা, তাহারা ইহার অপূৰ্ব্ব মাধুরী যে ভাবে দেখিতে সমর্থ, আপনার নিকট কি আমি সেই ভাব প্রত্যাশা করিতে পারি না ? আপনি এই দীপাধারটি গ্রহণ না করিলে মা যে কিরূপ দুঃখিত হইবেন, আমার হৃদয়ে যে কিরূপ দারুণ আঘাত লাগিবে, তাহ বোধ হয় অনুভব করিতে পারেন । আমি মার একমাত্র সন্তান— ংসারের একমাত্র অবলম্বন,—আপনি আমার জীবনদাতা,—আমরা আমাদের গৃহের সর্বাপেক্ষ মূল্যবান, সৰ্ব্বাপেক্ষ আদরের জিনিষটি আপনাকে উপহার দিতে আনিয়াছি, আমাদের মনে এইমাত্র দুঃখ যে এরূপ আর একটি দীপাধার দিতে পারিলেই আপনার বৈঠকখানার টেবিলের শোভা বেশ মানানসই হইত ;—টেবিলের দুই পাশ্বে দুষ্টটি অনুরূপ দীপাধার থাকিলে তোরণের উভয় পাশ্বের সুদৃপ্ত অনুরূপ স্তম্ভ-যুগলের ন্যায় কেমন সুন্দর শোভা পাঠত !” ডাক্তার বুঝিলেন, আর বাদানুবাদ বৃথা । তাই বলিলেন, “আচ্ছ ভাল, তাগষ্ট হউক, দীপাধারটি আমার গৃহে অবশুষ্ট স্থান পাইবে । তোমাদের একান্ত আগ্রহে আমি ইহা গ্রহণ করিলাম । তোমার মাকে আমার ধন্যবাদ জানাষ্টবে, তোমাদের ব্যবহারে আমি প্রকৃতই সুখী হুইয়াছি। কিন্তু তুমি নিজেই একটুকু বিবেচনা করিয়া দেখ দেখি, কি করা যায়, কোথায় এ দীপাধার রাখা যায়,—বাড়ীতে ছেলেপুলে আছে, রমণীগণ সৰ্ব্বদা এখানে যাতায়াত করিয়া থাকেন,--আচ্ছা যাক, তোমাকে বুঝানো দায়, থাক, দীপাধারটি এখানেই থাকুক ; গৃহে একটি স্থান নিৰ্ব্বাচন করিয়া তথায় ইহা রাখা যাইবে।” ডাক্তারের সম্মতিসূচক বাক্যে শাচ এতক্ষণে আশ্বস্ত হইল, হৃষ্টচিত্তে বলিল, “ডাক্তার সাহেব, আপনার বৈঠকখানার টেবিলের এক পার্শ্বে ই এই দীপাধারের স্থান হইতে পারে, এখানেই ইহা বেশ দেখাইবে । আমরা বড়ই দুঃখিত যে, এই দীপাধারের অনুরূপ আর একটি দীপাধার আমাদের নাই তাহা হইলে এক জোড়া দীপাধার আপনার টেবিলের উভয় পাশ্বে বেশ শোভা পাইত। যাহা হউক, তার আর উপায় নাই। আজ