পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] «مه--- "هه دهههای بی নয়নপথে পতিত হয় । এষ্টস্থলে পথিকের উপবেশনের জন্ত কতিপয় লৌহময় আসন আছে। আকাশ পরিস্কৃত থাকিলে এই স্থল হইতে হিমাচলের চিরতুষারময় ধবল শৃঙ্গাবলী দেখিতে পাওয়া যায়। কেহ কেহ বলেন, এই স্থান হইতে কৈলাস পৰ্ব্বতের চূড়াও দেখিতে পাওয়া যায়। সমার হিলের উত্তরদিকে চ্যাডউইক ফলস্ নামে সুন্দর জলপ্রপাত আছে । অনেকে এক্ট জলপ্রপাত দেখিতে যান । আমরা যে সময় শিমলায় গিয়াছিলাম, সেই সময়ে জলাল্পতা হেতু প্রপাত ছিল না। শুনিয়াছি, শিমলার মনোহর দৃষ্ঠাবলীর মধ্যে এই প্রপাতও পরিগণিত হইয়া থাকে। সমার চিলের দক্ষিণ ও পূৰ্ব্বভাগে অনেকগুলি আবাসবাটী অাছে । অৰ্দ্ধচন্দ্রণকার গিরিশ্রেণীর দ্বিতীয় মেরুদণ্ডস্বরূপ কাইথু পৰ্ব্বত উত্তরদক্ষিণে লম্বমান শ্লষ্টয়া অৰ্দ্ধচন্দ্রের বহিবৃত্তের সহিত সংযুক্ত হইয়াড়ে । এই পৰ্ব্বতের উপরিভাগে সেণ্ট জোসেফস স্কুল ও অনেক বাটী বিদ্যমান। ইহার অব্যবহিত পশ্চিমভাগে একটী গভীর উপত্যকার মধ্যে এনানডেল নামক প্রসিদ্ধ ঘোড় দৌড়ের মাঠ ও উষ্ঠান আছে। ইংরাজী এনানডেল শব্দটি বাঙ্গলা “আনননিলয়” শব্দ দ্বারা অনুবাদ করিলে স্থানটি অম্বর্থনাম হয় । *আনন-নিলয়” দেখিয়া মনে হইল, একটা পৰ্ব্বতের শিখরদেশকে কাটিয়া ফেলিয়া, তাহাকে যেন সমতলক্ষেত্রে পরিণত করা হইয়াছে । “আনন্দ-নিলয়ে” অবতরণ করিবার দুইটী পথ আছে ; একটী দুরবতরণীয়, অপরটি স্বথাবতৰ্য্য। প্রথম পথটিতে গমন করিলে শীঘ্রই “আনন্দনিলয়ে” উপনীত হওয়া যায় ; দ্বিতীয় পথটি ঘুরিয়া ফিরিয়া গমন করায়, যাইতে কিছু বিলম্ব ঘটে। কিন্তু এই শেষোক্ত পথের শোভা অতীব মনোচারিণী । পৰ্ব্বতগাত্র হইতে কেলু, কইল প্রভৃতি সুদীর্ঘ কাওবিশিষ্ট বৃক্ষরাজি সরলভাবে আকাশ ভেদ করিয়া উঠিয়াছে। এক একট বৃক্ষের কাও একশত ফুট অপেক্ষাও অধিক দীর্ঘ বলিয়া মনে হয়। কাণ্ডের পরিধিও নিতান্ত অল্প নহে। হিমালয় ব্যতীত অন্যত্র কোথাও এরূপ মহান বনস্পতি দৃষ্টিগোচর হয় না। রিকৃশা-নামক দ্বিচক্রবিশিষ্ট নরযানে আরোহণ করিয়া আমি “আনন্দ নিলয়ে” গমন করিয়াছিলাম। বাহকের শিমলা AASAASAAeASAeAeeASAAASAAA AAAASAAAA • ৬৫১ আমাকে দুরবতরণীয় পথ দিয়াই , সখানে লইয়া গিয়াছিল। সেই পথ দিয়া নামিতে নামিতে আমার মনে হইতে লাগিল, আমি যেন পাতালপুরীতেই অবতীর্ণ হইতেছি। পথটি এক প্রকার “খাড়া” বলিলেই হয়। সম্মুখে দুইজন কুলী গাড়ীর ধুৱা ধরিয়া আছে, এবং পশ্চাতে তিনজন তাহাকে বিপরীত দিকে টানিয়া রাখিতেছে। যদি গাড়ীখানি সহসা কুলীদের হস্তচু্যত ইষ্টত, তাহা হইলে তাঙ্গ আরোহী সহিত মুহূৰ্ত্ত মধ্যে নক্ষত্রবেগে কোথায় যে অস্তষ্ঠিত হইয়া যাইত, তাহার স্থিরতা নাই । সমতল ভূমির অধিবাসী আমরা—এইরূপ পথে *আনন্দ-নিলয়ে” গমন করিবার কালে মনোমধ্যে অত্যন্ত ভয় ও উদ্বেগ অনুভব করিয়াছিলাম। সেদিন “আনন্দ-নিলয়ে” ঘোড়দৌড় হইতেছিল । ঘোড়দৌড়ের মাঠে ইংরাজ নরনারীর তো কিছুমাত্র অভাব ছিল না ; অধিকন্তু শিমলা ও শিমলার নিকটবর্তী গ্রামসমূহ হইতে অসংখ্য পাৰ্ব্বত্য নরনারীর ও সমাগম হইয়াছিল । আমি ইতঃপূর্বে এতদ্দেশীয় পাৰ্ব্বত্য নরনারীগণকে দেখিবার তেমন সুযোগ পাই নাই । সেইদিন ঘোড়দৌড়ের মেলায় তাহাদিগকে দেখিয়া যেরূপ বিস্মিত এবং আনন্দিত হই, তদ্রুপ দুঃখিতও হইয়াছিলাম । বিস্ময়ের কারণ এই যে, পাৰ্ব্বত্য মহিলারা যে এরূপ স্বন্দরী হইবে, তাহ পূৰ্ব্বে আমি মনোমধ্যে ধারণাই করি নাই । তাহদের বিশালায়ত চক্ষু, সুগঠিত নাসিক, পরিপাটী অধরোষ্ঠ, গোলাপরাগরঞ্জিত শুভ্ৰ কাস্তি এবং সহস্তি ও প্রফুল্ল বদনম গুল তাছাদিগকে দিব্যাঙ্গনার দ্যায় প্রতীয়মান করিতেছিল । তাছার নানাবর্ণের বিচিত্র বসন ও পরিচ্ছদ পরিধানপূর্বক ঘোড়দৌড় দেখিতে আসিয়াছিল। এই নারীগণ যে আর্য্যবংশসভূত, তদ্বিষয়ে আমার কিছুমাত্র সন্দেহ রহিল না । আমার আননের কারণ এই যে, মহিলাগণের মধ্যে অনেককেই আমি সরল, পবিত্রস্বভাব, তেজোমী, বুখাসঙ্কোচবর্জিত, অথচ সলজ্জাও দেখিলাম। আমার দুঃখের কারণ এই যে, “আনন্দ-নিলয়ে”র এই আনন্দ, পবিত্রতা, সরলতা এবং শোভার মধ্যেও পাপের বীভৎস মূৰ্ত্তি আমার দৃষ্টিগোচর হইল। পরিতাপের বিষয় এই যে, কমলে কণ্টক আছে, চন্দ্রে কলঙ্ক আছে, অমৃতে বিষ আছে এবং মানব-সমাজেও পাপপিশাচ বিচরণ