পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ుల(t: করিয়া তাঙ্কাকে নরকের লীলাভূমিতে পরিণত করিয়াছে। অৰ্দ্ধচন্দ্রাকার গিরিশ্রেণীর তৃতীয় মেরুদণ্ডস্বরূপ ইলীশিয়াম ছিল ( অর্থাৎ নন্দন-গিরি ) উত্তর-দক্ষিণে লম্বমান হষ্টয়া অৰ্দ্ধচন্দ্রের বহিবৃত্তের সচিত সংযুক্ত হইয়াছে। এই গিরির একাংশকে ষ্টালিং হিল বলে। নন্দনগিরির দৃশু অতীব স্বন্দর এবং ইহার উপরিভাগে অনেক সুন্দর বাটাও আছে । - অৰ্দ্ধচন্দ্রাকার গিরিশ্রেণীর চতুর্থ মেরুদণ্ডস্বরূপ যক্ষপৰ্ব্বত উত্তরপূৰ্ব্ব কোণ হইতে দক্ষিণপশ্চিম কোণের দিকে লম্বমান হইয়া অৰ্দ্ধচন্দ্রের বহিবৃত্তের সহিত সংযুক্ত হইয়াছে। পূৰ্ব্বেই উক্ত হইয়াছে যে, এই যক্ষপৰ্ব্বত শিমলার মধ্যে সৰ্ব্বোচ্চ পৰ্ব্বত। ইহা বহুদূর হইতে দৃষ্ট হয় এবং ইহার শোভাও পরম রমণীয়। ইহার শিখর, গাত ও পাশ্বদেশ সুদীর্ঘ কাণ্ডবিশিষ্ট বিপুলকায় বুক্ষরাজিতে সমাচ্ছন্ন। ইঙ্গর চতুর্দিকে পরিভ্রমণের জন্য একটা সুন্দর রাজপথ আছে । এই রাজপথে ভ্ৰমণ করিতে করিতে এমন সুন্দর সুন্দর দৃপ্ত নয়নপথে পতিত হয় যে, তৎসমুদায় চক্ষে না দেখিলে কদাপি তাঙ্গদের সৌন্দর্য্য বর্ণনাদ্বারা রিকৃশাযোগে কিম্বা পদব্রজে সহস্ৰ সহস্র নরনারী এই পথে প্রত্যঙ্গ ভ্ৰমণ করিয়া বিমল আননা অনুভব করিয়া থাকেন । যক্ষপৰ্ব্বতের উপরিভাগে হনুমানজীর একটা মন্দির আছে । এষ্ট পৰ্ব্বতের উচ্চশিখর হইতে চতুর্দিকের শোভাসন্দশনের উদ্দেশ্র্যে মন্দির দর্শনাভিলাষেও একদিন ইতাতে আরোহণ করিতে প্রবৃত্ত হইলাম। রিকশাযোগে যতদূর আরোহণ করা নিরাপদ মনে করিলাম, ততদূর আরোহণ করিয়া পদব্রজে পাৰ্ব্বত্যপথ অবলম্বন পূর্বক শৃঙ্গাভিমুখে গমন করিতে লাগিলাম । কিন্তু এই পথ এরূপ দুরারোহ যে, মনে হইতে লাগিল, আর অধিক উচ্চপ্রদেশে আরোহণ করিতে পারিব না । মধ্যে মধ্যে এক একটা স্থানে কিয়ৎক্ষণ উপবেশন পূৰ্ব্বক বিশ্রামলাভ করিতে লাগিলাম। আবার পাকডাওঁী লাঠীর ৪ উপর ভর করিয়া অগ্রসর হইতে লাগিলাম। * পদব্রজে পৰ্ব্বতে আরোহণ করিবার নিমিত্ত পৰ্ব্বতগাত্রে অপ্রশস্ত উপলব্ধ হইবে না । এবং প্রবাসী—চৈত্র, ১৩১৭ [ ه د ভাগ, ২য় શંજી এইরূপে স্বৰ্য্যাস্তের অব্যবহিত প্রাক্কালে যক্ষগিরির সর্বোচ্চ শিখরে উপনীত হইলাম । তখন জ্যৈষ্ঠমাস। সেই সময়ে দিবাভাগেও, শিমলাতে মাঘ ফাল্গুন মাসের মতম শীত । কিন্তু সেদিন সন্ধ্যার প্রাক্কালে যক্ষপৰ্ব্বতের শিখরদেশে উপনীত হইয় পৌষমাসের মতন তীব্র শীত অনুভব করিতে লাগিলাম। শিখরদেশে একটা প্রশস্ত মাঠ আছে । এই মাঠের মধ্যস্থলে হনুমানজীর মন্দির বিরাজমান। এই মাঠের মধ্যে একটা ক্ষুদ্র জলাশয়ও আছে। মন্দিরস্বামী সন্ন্যাসী ঠাকুর বলিলেন যে, এই জলাশয় হইতেই তিনি বারমাস ব্যবহারোপযোগী জল পাইয়া থাকেন। মন্দিরে হনুমানজীর মূৰ্ত্তি দর্শন করিলাম এবং সন্ন্যাসী ঠাকুরকে কিছু প্রণামীও দিলাম। এই মন্দিরের চতুদিক পৰ্ত্তী বৃক্ষসমুহে অনেক বানর বাস করিয়া থাকে, তাহ পূর্বেই শুনিয়াছিলাম। এই কারণে, আমরা তাঙ্গদের জন্ত কিছু ভাজা ছোলা লষ্টয়া গিয়াছিলাম। সন্ন্যাসী ঠাকুরকে বানরগণের কথা জিজ্ঞাসা করায়, তিনি বানরগণের দলপতিকে “রাজা, রাজা” বলিয়া আহবান করিতে লাগিলেন । রাজা মহাশয় একটী নিকটবৰ্ত্তী বৃক্ষ হইতে অবতীর্ণ হইয়৷ তাতার সমীপে উপনীত হইলেন । তৎপরে তিনি “রাণী”কে আহবান করিলেন । রাণীও, বক্ষোলগ্ন কুমার সহ, তথায় উপনীত হক্টলেন । আমরা মন্দিরের বিস্তৃত বহিপ্রাঙ্গণে ভাজা ছোলা ছড়াচয় দিলাম। ভাজা ছোলা দেখিয়া নিকটবর্তী বৃক্ষসমূহ হৃষ্টতে অনেগুলি বানর আসিয়া তৎসমুদায় ভক্ষণ করিতে প্রবৃত্ত হইল। শুনিলাম, দিবাভাগে ইহারা সৰ্ব্বক্ষণ মন্দির প্রাঙ্গণেই থাকে । কিন্তু আমরা সন্ধ্যার প্রাক্কালে উপস্থিত হওয়ায়, ইহারা আসন্ন নিশাযাপন মানসে নিকটবর্তী বৃক্ষসমুহে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিল। ইহার স্বচ্ছন্দচিত্তে ও নিভীকমনে ছোল ভক্ষণ করিতে লাগিল। আমরা যেরূপ অশ্বপুষ্ঠে আরোহণ করি, বানরশিশুগুলিও তদ্রুপ মাতৃপুষ্ঠে আরোহণ করিয়া মাতার সহিত ভ্রমণ করিতেছিল। এ দৃপ্ত দেখিতে চমৎকার ও অমনই ৰক্ৰগতি পথ আছে । এই পথগুলি অতীব দুরারোহ । বীশের লাঠীর উপর ভর দিয়া এই সমস্ত পথে চলিতে হয়। লাঠীর অগ্রভাগে স্বচীমুখ লৌহসংযুক্ত আছে। এই লাঠীকে পাকডাওী বলে।