পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ। ] দূর ভ্রমণ করা ব্যতীত, অন্ত কোনও শারীরিক ব্যারামের প্রতি বাঙ্গালীদের বিশেষ আস্থা নাই । শিমলার দ্যায় শীতপ্রধান স্থানেও বাঙ্গালীপ্রকৃতির বিশেষ পরিবর্তন লক্ষিত হইল না । বাঙ্গালী মহিলারা নিজ নিজ গৃহমধ্যেই অবরুদ্ধ থাকেন । ইহঁদের অবস্থা দেখিয়া স্বর্গে টেকির অবস্থার কথা মনে পড়িল । শিমলার অনতিদূরে গিরিনদী নামে একটা নদী আছে । এঞ্জিনের সাহায্যে সেই নদী হইতে জল উত্তোলিত হইয়া শিমলায় আনীত হয়, এবং পাষ্টপূ সাহায্য সৰ্ব্বত্র তাঙ্ক পরিচালিত হয়। স্থানে স্থানে এক একটা হাইড়ান্ট আছে । সেই ঠাইড়ান্টসমূহ হইতে সৰ্ব্বসাধারণে জলসংগ্ৰহ করিয়া থাকে। কলের জল ব্যতীত, উপত্যকাভূমিতে “বাউড়ি” নামক অনেক নিঝর আছে । অনেকে এই নিঝ রসমুহের জলও পান করিয়া থাকেন। অনেকের বিশ্বাস এই যে গিরিনদীর জল অপেক্ষ বাউড়ির জল অধিকতর সুস্বাদ ও উপকারী । পাৰ্ব্বত্য অধিবাসিগণ জলের জন্য একমাত্র বাউড়ির উপর নিভর করিয়া থাকে । আমি একদিন উপত্যক-ভূমিতে অবতীর্ণ হইয়া একটা বাউড়ি দেখিয়া আসিয়াছিলাম। পৰ্ব্বতের পাদমূলে একটা ক্ষুদ্র ও অগভীর কূপ বা থাত আছে । সেই কুপে জল ঝরয়া পড়িতেছে, এবং কলস পূর্ণ করিয়া সেই জল পাৰ্ব্বত্য মহিলারা গৃহে লইয়া যাইতেছে । সেই কুপই “বাউড়ি” নামে অভিহিত হয় । শিমলার দ্যায় বৃহৎ নগরীর স্বাস্থ্য রক্ষার্থ এবং রাজপথসমূহ মুসংস্কৃত রাখিবার ও আলোক ও জল প্রভৃতি যোগাইবার নিমিত্ত একটা সুপরিচালিত মিউনিসিপালিটি আছে। মিউনিসিপালিটি গৃহস্থগণের গৃহে নিযুক্ত ভৃত্যগণের জন্তও কর গ্রহণ করিয়া থাকেন । শিমলাতে অধিকংখ্যক বাহিরের লোক আসিয়া নগরীকে অস্বাস্থ্যকর করিয়া না ফেলে, সম্ভবতঃ এই উদ্দেশুেই উক্ত কর ধাৰ্য্য হইয়া থাকিবে । উপরে বাহ লিখিত হইল, তাহ হইতেই পাঠকবর্গের মনে শিমল-নগরী সম্বন্ধে একটী সামান্ত ধারণা উপস্থিত হইবে । শিমল-নগরীর অধিবাসীর সংখ্যা ৪e • • • চল্লিশ ষ্টাজারের অধিক তুষ্টবে না । এষ্ট অধিবাসিগণের মধ্যে শিমলা Ꮼ☾☾ অধিকাংশই হিন্দু। এখানে মুসলমানের সংখ্যা অধিক নহে । - পূৰ্ব্বকালে, হিমালয়ের এক্ট অংশে এবং শতদ্ৰুনদীর দক্ষিণ ও পূৰ্ব্বভাগে অনেকগুণি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বাধীন রাজ্য ছিল। তন্মধ্যে পাটিয়াল ও কেউনথল অন্যতম। এই সমুদায় রাজ্যের সঠিত সন্ধিস্থত্রে বৃটিশ গভর্ণমেণ্টের মিত্রত স্থাপিত হইয়াছে। সেই কারণে এই রাজ্যগুলিকে মিত্ররাজ্য বলে । যে পাৰ্ব্বত্যভূমিভাগের উপর শিমলা নগরী অবস্থিত, তাহার কিয়দংশ পাটিয়াল রাজ্যের কিয়দংশ কেউনথল রাজ্যের অন্তর্গত ছিল । কথিত আছে যে, ১৮১৫ খৃষ্টাব্দে গুথ-সমরের পর ইংরাজের বৰ্ত্তমান শিমলার কিয়দংশ অধিকার করিয়াছিলেন ; এবং পাৰ্ব্বত্য রাজ্যসমূহের সহকারী পলিটিক্যাল এজেণ্ট লেফটেনাণ্ট রস (Ross) ১৮১৯ খৃষ্টাবে শিমলায় একট কুটার নিন্মাণ করেন । তৎপরে ১৮২২ খৃষ্টাব্দে লেফটেনাণ্ট কেনেডি বসবাসের উপযোগী একটা সুন্দর বাট প্রস্তুত করেন । ১৮২৪ খৃষ্টাব্দে স্বাস্থ্যলাভাকাঙ্ক্ষী কতিপয় ইংরাজ পাটিয়াল ও কেউনথলের রাজগণের অনুমতি লইয়া শিমলায় বাস করেন । উক্ত রাজগণ ইহঁাদিগকে এই সৰ্ত্তে বাসের জন্য নিষ্করভূমি প্রদান করিয়াছিলেন যে, ইতারা শিমলায় কদাপি-গোহ ত্যা করিবেন না এবং অনুমতি ব্যতীত কদাপি কোনও বৃক্ষচ্ছেদন করিবেন না। বর্তমান সময়ে শিমলার একটা নির্দিষ্ট স্থানে গোহত্যা হয় বটে ; কিন্তু মিউনিসিপালিটির অনুমতি ব্যতিরেকে কেক বুক্ষচ্ছেদন করিতে পারে না । শিমলা স্বাস্থ্যজনক স্থান বলিয়া ক্রমশঃ পরিচিত হইতে থাকিলে, ইংরাজগভর্ণমেণ্ট পাটিয়ালা ও কেউনথলের রাজগণকে বৃটিশ রাজ্যভুক্ত কতিপয় গ্রাম প্রদান করিয়া তৎপরিবর্তে শিমলার ভূমিভাগ গ্রহণ করেন । ১৮৩৯ খৃষ্টাব্দে গভর্ণমেণ্টের পক্ষ হইতে এক্টরূপে শিমলার ভূভাগ অধিকৃত হয় । ১৮২৬ খৃষ্টাব্দে ভরতপুরের যুদ্ধের পর তাৎকালীন গভর্ণর-জেনেরাল লর্ড আমহাষ্ট বিশ্রাম লাভার্থ শিমলায় গমন করেন । তদবধি শিমলার উন্নতির সূত্রপাত হয় । ১৮৩০ খৃষ্টাব্দে শিমলার গৃহস থ্যা ৩০, ১৮৪১ খৃষ্টাব্দে ১••, ১৮৬৬ খৃষ্টাব্দে ২৯•, ১৮৮১ খৃষ্টাব্দে ১১৪১ এবং ১৯০১ খৃষ্টাব্দে ১৩৫০