পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Go o প্রবাসী—কার্তিক, ১৩১৭ মনের মধ্যে বসাইয়া দেওয়া হয় মাত্র । এই শিক্ষার ফলে মানুষ তাহার ব্যক্তিত্বকে সমাজ-কারখানার দাসত্বে বিক্রীত করে । এইরূপ শিক্ষাপ্রণালী যে মানবসমাজের মুক্তির বিরোধী হইবে তাহা আশ্চর্য্য নহে । এক্ট শিক্ষা শাসন শক্তির হস্তে আত্মবিক্রয়ের উপায়স্বরূপ । শাসন-শক্তি ব্যক্তিত্বকে উন্নত ও স্বাধীন না করিয়া—পরাধীনতার নিগড়ে তাহাকে আরও শক্ত করিয়া আবদ্ধ করে । অতএব বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষা দ্বার মানবমুক্তির আশা করা বাতুলতা মাত্র। তার পর ফেরার বলেন যে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপরে র্তাচার শিক্ষাপ্রণালী প্রতিষ্ঠিত । শিশুদের বিভিন্ন মনোবৃত্তিগুলি যাহাতে অব্যাহত রূপে পরিস্ফুট হইতে পারে —তাহাদের আত্মার যাচাতে স্বাধীন বিকাশ হয়, ভিতর হইতে যেন একটা শক্তি গঠিত হইয়া উঠে ইতাই তাহার লক্ষ্য । এইরূপ লোককে রাষ্ট্র বা সমাজ বড়ষ্ট ভয়ের চক্ষে দেখে। তাই ফেরার স্পেন-কর্তৃপক্ষের কোপদৃষ্টিতে পড়েন । ফেরারের প্রতিষ্ঠিত মানবমুক্তির এই নূতন মত অল্পদিনের মধ্যেই সমগ্র স্পেনে ছড়াইয়া পড়ে। ফরাসী, ইংলণ্ড ও জৰ্ম্মানীর অনেক সাধারণতন্ত্রী ও সোসিয়ালিষ্ট নেতা ফেরারের এই উন্নত মতকে সমর্থন করেন। তার পর স্পেনে বিপ্লবের সূত্রপাত হইলে কর্তৃপক্ষ মনে করেন যে ফেরারের এই স্বাধীন মতই ইহার জন্য অনেকটা দায়ী। ১৯০৬ খৃঃ অক্সে মেটোমরেল নামক এক ব্যক্তি স্পেনের রাজা ত্রয়োদশ আলফঞ্জকে হত্যা করিবার অভিপ্রায়ে বোমা নিক্ষেপ করে । কর্তৃপক্ষ সেই গোলমালের উপলক্ষে ফেরারকে জড়িত করিতে চেষ্টা করে । কিন্তু সমগ্র জগতের সভ্য-সমাজ তাঙ্গাতে বিচলিত হইয়া উঠে এবং ফেরারের পক্ষ সমর্থন করে । সেইজন্তই সেবার কর্তৃপক্ষ র্তাহাকে মুক্তিদান করিতে বাধ্য হয়। - তারপর গত বৎসর বার্সেলনার হাঙ্গামায় মিথ্য সাক্ষা ফুটাইয় তাহার প্রাণদণ্ড করা হইয়াছে। এই সত্যনিষ্ঠ সাধুপুরুষের অন্তায় মৃত্যুতে সমগ্র ইয়ুরোপে তাঙ্কার মত সম্বন্ধে তুমুল আন্দোলন চলিয়াছে। [ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড ইংলও, ফরাসী ও জৰ্ম্মানীর নানাস্থানে ফেরারের মতানুযায়ী বিদ্যালয় স্থাপন করা হইতেছে। তাহার শিষ্য ও বন্ধুগণ জগতে তাহার এই উন্নত মতের প্রতিষ্ঠার জন্ত বিরাট আয়োজনের স্বচনা করিয়াছেন। ফেরারের পবিত্র মৃত্যুর মধ্য দিয়াই তাহার সত্য জয়যুক্ত হইবে। ඕ (− ' লবঙ্গ দ্বীপ (ওয়ারল্ড ওয়ার্ক হইতে ) ৷ আফ্রিকার পুৰ্ব্বদিকে ভারত মহাসাগরে, জাঞ্জিবার দ্বীপের সাতাইশ মাইল উত্তরে লবঙ্গপ্রস্থ পেম্বাদ্বীপ অবস্থিত । ছোট বড় অসংখ্য স্রোতস্বিনী, উপসাগর ও ফাড়ি দ্বীপটির উপকূলভাগকে আচ্ছন্ন করিয়া রাখিয়াছে। সবুজ তৃণ, নারিকেল ও লবঙ্গ তরুর কুঞ্জ দ্বীপটিকে একটি শোভন ত্র দান করিয়াছে। দ্বীপের চারিপাশ্বস্থ সমুদ্র শুামলতৃণাস্তীর্ণ দ্বীপ-খণ্ড দ্বারা বেষ্টিত—তথায় অসংখ্য কুকুট ও বৃহদাকার বানর বাস করে। কোনো কৌতুহলী দর্শক তাহাদের বাসভূমির সমীপবৰ্ত্তী হইবামাত্র তাহারা সমবেতকণ্ঠে কাতর চীৎকার তুলিয় তাহার অনধিকার প্রবেশের প্রতিবাদ জানাষ্টয়া থাকে দ্বীপের অভ্যস্তরে যেখানে লোক-নিবাস রহিয়াছে জাহাজ হইতে নামিয়া নৌকার সাহায্যে সেখানে যাক্টতে হয় । স্রোতস্বিনী ও ফঁাড়িগুলির উভয় তীর হইতে অসংখ্য বৃক্ষ ঝু কিয়া পড়িয়া জলপথকে বনভূমির আকার দান করিয়াছে । উপকূলভাগে প্রবাল ও পুষ্পাকৃতি স্পঞ্জ এবং দুর্লভ গুক্তিসমূহ ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত দেখা যায় । চেকচেকু নগর এই দ্বীপের রাজধানী। সেখানকার সংকীর্ণ, আঁকাবঁকা ও কদৰ্য্য নিৰ্ম্মিত রাস্তাগুলি দশকের বিরক্তি উৎপাদন করিয়া থাকে সন্দেহ নাই। কিন্তু তথা হইতে চতুর্দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া তিনি যে উদার ও বিস্ময়কর মনোহর দৃশ্য দেখিতে পান তাহ অতুলনীয়। তখন তাঙ্গর দৃষ্টিতে তৃণহামল উচ্চ উপকুল একগাছি তাজা সবুজ মালা—দ্বীপখণ্ডগুলি নীল সমুদ্রের উপরে ভাসমান মরকতথও এবং দূরবর্তী আফ্রিকার শৈলশ্রেণী মেঘমুক্ত তবলনীল গ্রীষ্মাকাশ বলিঙ্গ প্রতীয়মান হয়। দর্শক এই দ্বীপের