পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

۰سان জাতি বহুশতাব্দি ধরিয়া আপনাদিগের অস্তিত্ব বজায় রাখিবে । ব্ৰহ্মপুত্রের উপত্যক দিয়া, অথবা পঞ্জাবের গিরি-পথ দিয়া, মধ্য-এশিয়ার লোকেরা ভারতকে আক্রমণ করিবে, তাহার ফলে, ভারতে নানা ছাচের জাতি পরিলক্ষিত হুইবে । পুনঃ পুনঃ আক্রমণ সত্বেও, সাগর ও গিরিমালার দ্বারা অবরুদ্ধ হওয়ায়, এশিয়ার সহিত ভারতের নিত্যনিয়মিত গতিবিধি থাকিবে না । ভারতের গ্রীষ্ম-প্রধান-দেশ-স্থলভ আবৃ-হাওয়া একটি উদীয়মান জনসমাজের সহায়তা করিবে ; কিন্তু অপেক্ষাকৃত উন্নত সমাজকে হীনবীৰ্য্য করিয়া ফেলিবে । ভারতের খনি হইতে স্বর্ণ, রৌপ্য, বহুমূল্য রত্নাদি উদ্ধার করা সহজসাধ্য বলিয়া, ভারত, বহুকাল পর্য্যস্ত সমৃদ্ধ বলিয়, ষার পর নাই খ্যাতি লাভ করিবে । লৌহ ও কয়লা তেমন বেশী না থাকায়, ভারত শ্রমশিল্পের জন্য সহজে প্রাধান্ত লাভ করিতে পারিবে না । বহির্জগতের সহিত বিচ্ছিন্ন হওয়ায়, ভারত একটি অ-পূৰ্ব্ব সভ্যতা গড়িয়া তুলিবে, কিন্তু বিদেশীয়দিগের আক্রমণ ফলে, এই সভ্যতা প্রভূত পরিমাণে রূপান্তরিত হইবে । অত্যন্ত বৃহৎ বলিয়া ও বিচিত্র জাতির দ্বারা অধুষিত বলিয়া, ভারতের রাfষ্ট্রক ও সামাজিক ঐক্য সহজসাধ্য হইবে না । > ভারতের ভৌগোলিক সংস্থান আলোচনা করিয়া দেখিলে, উপরে যে কথা বলিলাম, তাহা দৃঢ়ীভূত হইবে। ভারভের অন্তৰ্ব্বত্তী বর্ষ বা মহাদেশ ও ভারতের প্রায়দ্বীপ— এই দুই অংশকে পৃথক্ করিয়া দেখা আবশুক । ভারতের বর্ষস্থান বা মহাদেশ, তিন বৃহৎ অংশে বিভক্ত ঃ সিন্ধুনদ-প্রদেশ, গাঙ্গেয় প্রদেশ ও রাজপুতানা,—সেই মরুপ্রদেশ যাহা ঐ দুই নদীধৌত প্রদেশের মধ্যে প্রসারিত। ● 鲁 事 সিন্ধুনদের প্রদেশটি আফগানিস্থান ও বেলুচিস্থান হইতে পৰ্ব্বতের দ্বারা পৃথককৃত, এবং হিন্দুস্থান, রাজপুতানায় মরুভূমির দ্বারা পৃথকৃঙ্কত হইয়াছে। অতএব সিন্ধুনদের প্রবাসী—চৈত্র, ১৩১৭ [ ১০ ভাগ, ২য় খণ্ড প্রদেশটি একটি স্বতন্ত্র প্রদেশ। কিন্তু পশ্চিমদিকে গিরিপথসমূহ ও উত্তরদিকে বিস্তৃত সমতল ক্ষেত্র থাকায় এই নদী-প্রদেশটি মধ্য-এশিয়া ও হিন্দুস্থান এই দুই দেশের মাঝামাঝি একটা সংক্রমণ-ভূমি বা সেতুপথরূপে পরিণত হইবে । এই উপত্যক-প্রদেশের সভ্যতা কিরূপ হইবে— যদি জানিতে চাই তাহা হইলে দেখিব, উত্তরভাগে ও ব-দ্বীপটিতে, তত্রস্থ মৃত্তিকার উর্বরতা, কৃষির অমুকুল হইবে, এবং নদী-ধৌত প্রদেশটি সমুদ্রে গিয়া শেষ হওয়ায়, ঐ প্রদেশটিতে বাণিজ্যের উন্নতি হুইবে । আক্রমণের পথ মুক্ত থাকায়, পঞ্জাবের লোক মিশ্রজাতীয় হইবে। আক্রমণের নিত্য আশঙ্কা থাকায়, উচ্চার অধিবাসীরা যুদ্ধপ্রিয় হইবে। এবং ঐ প্রদেশের যেরূপ জলবায়ু, সেই জলবায়ুর প্রভাবে ওখানকার লোকদিগের রীতিনীতি মধ্য-এশিয়ার রীতিনীতির মত’ গ্রীষ্মপ্রধান ভারতবর্ষের রীতিনীতির মত আদেী হইবে না । 臻 肇 臺 রাজপুতানার উত্তরে, পঞ্জাবের পলি-মাটর ক্ষেত্রভূমি, যমুনা-ধেীত প্রদেশের সহিত সম্মিলিত হইয়াছে । এই যমুনা গঙ্গানদীর একটি প্রধান শাখা । গাঙ্গেয় প্রদেশটি তিনভাগে বিভক্ত ; যমুনা প্রদেশ এবং গাঙ্গেয় প্রদেশের মাঝামাঝি স্থান—এই দুইটি লইয়া থাস-হিন্দুস্থান । এই উৰ্ব্বর ভূখণ্ডকে হিমালয়—উত্তরের শীত-বায়ু হইতে, এবং বিন্ধীগিরিমালা—দক্ষিণের শুষ্ক বায়ু হইতে রক্ষা করিয়াছে। এখানকার শীতকালটি বেশ সুখদ ; বসন্তকালে প্রথর উত্তাপ ; নিদাঘের সঙ্গে সঙ্গে মৌসম বায়ু আসিয়া উপস্থিত হয় ; অবিরাম বৃষ্টি হয় ; নদনদী, জলে উদ্বেলিত হইয় উঠে। শরৎকাল, শুষ্কতা ও উত্তাপ আনয়ন করে ; ভিজা মাটি হইতে বাম্পাদি উথিত হইয়া জর-রোগ চতুর্দিকে ব্যাপ্ত করে। এখানকার জীবজন্তু ও তরুলতাদি মালাই দেশের দ্যায়। এই উৰ্ব্বর দেশে কিন্তু দৌৰ্ব্বল্যজনক জলবাসুর মধ্যে অবস্থিত লোকেরা সভ্যভব্য হইবে, কৃষিরত হইবে, কল্পনাপ্রবণ হইবে, সংসারকে দুঃখময় বলিয়া অনুভব করিবে, কোন দারুণ উৎকট চেষ্ট অথবা দীর্ঘকালস্থায়ী চেষ্ট হইতে বিরত থাকিবে । হইবে ।