পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やミ হয়ে থাক ? কেন সব কথার স্পষ্ট জবাব দাও না ? কিছু নয় বলে সব উড়িয়ে দাও কেন ? বুঝেছি! সেই অভিনেত্রীটাকে এখনো তুমি ভালোবাসো—আমার চেয়েও ভালোবাস ! এখনো তার কথা ভুলতে পারনি । সে তোমার জীবনসৰ্ব্বস্ব । সে তোমার সব ! সে জন্য আমি ক্ষোভ করি না। কিন্তু কেন তুমি আমাকে ভালোবাসার ভান দেখিয়েছিলে ? কেন আমার ভালোবাসা অপহরণ করেছ ? আমি বুঝতে পারচি তোমার মনে কোথায় বাধচে ! সে তোমার প্রথম প্রণয়িনী! তাই সে প্রণয়ের মোহ, তা সে যতই ঘূণ্য হোকৃ, হেয় হোকৃ, কাটাতে পারচ না । তাই আমার কাছে তুমি চুপ করে গম্ভীর হয়ে বিমর্ষ হয়ে থাক । বেশ ! তাই যদি হয়, স্পষ্ট করে বল ; একটা চুড়ান্ত নিম্পত্তি হয়ে যাক। আমি তোমার মুখ থেকে না শুনে নিশ্চিন্ত হতে পারচি না। সন্দেহটা কিন্তু আমার মনের নিজস্ব সন্দেহ নয়—সে যেন কে আমার উপর জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছে। আমার মন, আমার বিশ্বাস তাকে যতবার প্রত্যাখ্যান করে ততবারই সে ফিরে ফিরে এসে আমাকে পীড়িত করে তোলে –আমি কিছুতেই তার হাত থেকে মুক্তি পাচ্চি না। তাই তো তোমার কাছ থেকে শুনতে চাই । আমি আর এ সংশয়ের যাতনা সহ্য করতে পারি না । ফ্র্যাঙ্ক তুমি একবার বল—যা হয় বল—ন হয় বল যে আমি নিৰ্ব্বোধ তাই অমন সব চিন্তা মনে স্থান দিই ! বল, সত্য করে বল যে আমার সন্দেহ মিথ্যা – তুমি তাকে ভালোবাস না, তার কাছে যাওন—তুমি আমাকেই শুধু ভালোবাস।” বলিতে বলিতে তাহার প্রাণের আবেগ, হৃদয়ের বেদন মুখে যেন জীবন্ত হইয়া ফুটিয়া উঠিতে লাগিল। সে মুখভাব দেখিয়া মনে হইল যে তিনি নিজের হৃৎপিণ্ডটাকে নিজের নথের দ্বারা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করিয়া ফেলিতেছেন । কিন্তু ফ্র্যাঙ্ক সে সময়কার তাহার প্রাণের বেদন বুঝিতে সমর্থ হইলেন না । ইভার কথায় তাঙ্কার সমস্ত শরীরট একটা অমানুষিক রাগে জ্বলিয়া উঠিতে লাগিল ;–এই রকম রাগ তাছার বহুদিন হয় নাই, যখন ছেলেমানুষ ছিলেন তখন এক-একবার হইয়াছে বটে ! তাহার এ রাগ প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ [ 》● ভাগ, ২য় খণ্ড বড়ভয়ঙ্কর—তাহাকে কাগুজ্ঞান-শূন্ত করিয়া তোলে—মনের আর সমস্ত ভাবকে দমন করিয়া সে প্রধান হইয় ওঠে— তখন দিগ্বিদিক জ্ঞান থাকে না । তাহার এই কথা মনে হইয়া রাগ হইল-ইভার একি অবিচার । আমার কথা, আমার আশ্বাস, আমার সরলতা সে বিশ্বাস করে না ! আমি এমন কী করিয়াছি যাহাতে তাহার এত সন্দেহ ! সে কি মনে করে আমার এতটুকু আত্মসন্মানবোধ নাই ?— আমি মিথ্যাবাদী ! রাগে তাহার সৰ্ব্বাঙ্গ জলিতে লাগিল—র্তাহার চক্ষু দুটা রক্তবর্ণ হইয়া উঠিল। দাতে দাত ঘসিয়া তিনি বলিতে লাগিলেন—“ইভ ! এ অসহ্ ! তুমি আমাকে এত নীচ ভাবে স্বপ্নেও কখনো মনে করিনি! কি ভয়ঙ্কর । আমি তোমাকে বলেছি না—ন!—ন—তার সঙ্গে আমার কোনো সম্বন্ধ নেই ; তবুও সেই কথাই আমায় বার বার জিজ্ঞাসা কর । আমি কি মিথ্যাবাদী যে আমার কথা বিশ্বাস কর না ? কোনো দিন কোনো কথা তোমায় মিথ্যা বলেচি ? আমি যথম বলি–না, তখন সেটা সত্যিই বলি—ন ! তবুও তোমার সন্দেহ ! এ কি ! সোজা কথা যেমন পড়ে রয়েছে সেই ভাবে সেটাকে নাওনা কেন ? তুমি তো সবই জানে! —তোমার কাছে তো সবই খুলে বলেছি ; তবুও বিশ্বাস কর না কেন ? কে বল্পে আমি তার জন্তে মুখ বুজে গম্ভীর হয়ে থাকি ? আমার মনে এতটুকু খুংমুং নেই। আমি তোমাকে ভালোবাসি—তোমাকে পেলে আমি অনন্ত সুখী ! কিন্তু ইভ, বলে রাখচি এমনি করে যদি চল তাহলে তোমার জীবনটাকে চিরদিনের জন্ত অমুখী করে রাখবে এবং তার সঙ্গে আমায়ও অসুখী করবে !” ইভ তাহার দিকে স্থির দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিলেন । ফ্র্যাঙ্কের কথায় তাহার অভিমান উথলিয়া উঠিল । তিনি উদ্ধত হইয়া বলিতে লাগিলেন—"ফ্র্যাঙ্ক । ওকি ! আমার উপর চোখ রাঙিয়ে কথা কও কি ! কী এমন আমি বলেছি ! যার জন্তে যা-না-তাই অামায় শুনিয়ে দিলে । আমি তো বলচি সন্দেহটা আমার ইচ্ছাধীন নয়—-কে যেন জোর করে আমার মনের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। সে কথা তুমি বুঝলে না। তোমার হৃদয়ট কী পাষাণ !” ফ্র্যাঙ্ক রাগে থর থর করিয়া কঁাপিতেছিলেন । কিন্তু