পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ჯy8 প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ [ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড রাখিতে পারিলেন ন—অপমানের একটা তীব্র জালা তাঙ্গকে উন্মত্ত করিয়া তুলিল। তিনি পাগলের মতে ছুটিয়া গিয়া ইভার হাতখান সজোরে ধরিলেন—ইভ ভয়ে একটু পিছাইয়া গেলেন বটে কিন্তু নিজেকে ফ্র্যাঙ্কের কবল হইতে মুক্ত করিতে পারিলেন না-ফ্রাঙ্ক কঠিন হস্তে ঠাহীকে ধরিয়া রছিলেন ;– একটা বৈদ্যুতিক শক্তির তরঙ্গ ইভার শিরায় শিরায় ছুটাছুটি করিয়া বেড়াইতে লাগিল । বজের মতো গৰ্জ্জন করিয়া ফ্র্যাঙ্ক পলিতে লাগিলেন— “ওঃ ! কী নিষ্ঠুর তুমি! এমন জঘন্ত চিত্ত কখনো দেখিনি! এত সন্দেহ ? হৃদয় বলে জিনিষটা কি তোমার একেবারে নেই ! এমন নিৰ্ম্মম কথা বল কি করে ? যে এমন সব কথা ভাবতে পারে তার মতো নীচ পাষণ্ড জগতে নেই। তুমি বলচ তোমার অন্তর থেকে সন্দেহ উঠচে —সে কেবল তোমার অন্তরটা সঙ্কীর্ণ বলে তাই ! তোমার সমস্ত প্রকৃতিটা সঙ্কীর্ণতা, জঘন্যতা, নীচতা, নিৰ্ম্মমতায় ভরা । আমি তোমায় চিনতে পারিনি। আজ থেকে তোমার সঙ্গে আমার সমস্ত সম্বন্ধ ঘুচলে। —যাও!” বলিয়া ফ্র্যাঙ্ক ইভাকে হাতের এক ঝটকায় পাশ্বস্থ সোফার উপর ঠেলিয়া ফেলিয়া দিলেন। ইভা চুপ করিয়া কড়িকাঠের দিকে আড়ষ্ট ভাবে চাহিয়া পড়িয়া রছিলেন । সে সময় তাহার মনে আর রাগ ছিল না, তিনি কেমন হতভম্ব চক্টয়া গিয়াছিলেন—ব্যাপারটা কি ঘটিয়া গেল যেন কিছুষ্ট বুঝিতে পারিতেছিলেন না ফ্র্যাঙ্ক ইভার পানে চাহিয়া দাড়াইয়া রঙ্গিলেন । তাহার মুখ ও চোখের উপর দিয়া একটা মৰ্ম্মান্তিক ক্রোধ ও ঘৃণার ভাব খেলিয়া বেড়াইতে লাগিল । তিনি দাড়াইয়া দাড়াইয়া ইভার দেহসৌন্দর্য্য দেখিতে লাগিলেন ;–-সেই শ্ৰীমণ্ডিত লাবণ্যময় ক্ষীণ তন্থখানি যেন আবেশতন্দ্রীয় অভিভূত হইয়া ছড়াইয় পড়িয়া আছে ; সুক্ষ বস্ত্রের ভজে ভাঞ্জে যুবতীস্থলভ অঙ্গসৌষ্ঠব ও দেহ-রেখাগুলি কমনীয় হইয়া ফুটিয়া উঠিতেছে, রেশমেব মতে কেশগুচ্ছ লীলাভরে মাটিতে এলাইয়া পড়িয়াছে, বুকের উপুর একটা আবেগম্পদনের ঢেউ খেলিয়া চলিয়াছে –ফ্র্যাঙ্ক তাই দেখিতে লাগিলেন। দেখিতে দেখিতে একটা অতৃপ্তির বেদনায় র্তাহার বুকট ভরিয়া উঠিল ;–ষ্ঠায়, এ সমস্ত সৌন্দৰ্য্যকে তিনি স্বেচ্ছায় আজ ত্যাগ করিয়াছেন ! আবার তাহা ফিরিয়া পাইবার জন্ত একটা ব্যাকুল বাসন মনের ভিতর গুমরিয়া বেড়াইতে লাগিল । কিন্তু তাহার অপমানিত আত্মসন্মান ক্রোধে স্ফীত হইয়া বলিল—ন না ! তা কিছুতেই হুইবে না ! তিনি মুখ ফিরাইয়া লইলেন, তার পর দ্রুতপাদক্ষেপে সে স্থান ত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলেন । ইভা যেমন স্থির হইয়া পড়িয়াছিলেন তেমনই পড়িয়া রছিলেন। একটা অস্পষ্ট বিস্ময়ের আবেগ তাহাকে অভিভূত করিয়া রাখিয়াছিল । প্রাণের মধ্যে যেন ঘোর অন্ধকার জমাট বাধিয়া উঠিতেছিল । মিথ্যার প্রতারণায় সন্দেহের অন্ধতায় চালিত চষ্টয়া তিনি যেন নিজের অজ্ঞাতসারে এক দুৰ্গম স্থানে আসিয়া পৌছিয়াছেন, হঠাৎ চোখ খুলিয়া গেলে দেখেন চারিদিক অন্ধকার, কোথাও নষ্ট ! তিনি বুঝিতে পারিতেছিলেন না কি হইতেছে — উন্নছার হৃদয়ে কি গুরুতর আঘাত আজ বাজিয়াছে । তার কিছু ভাবিতেছিলেন না কেবল মনে হইতেছিল—এ কা অন্ধকার । চারি পাশে এ কী ঘোর অন্ধকার ! কেত দ্বাদশ পরিচ্ছেদ ইষ্ঠার পর, একটা মাস নিঝঞ্ঝাটে কাটিয়া গেল । কিন্তু ক্রমেই একটা বিরাট স্তব্ধতা জমিয়া উঠিতে লাগিল,--তীব্র দুঃখভারে গুজনেই মত হইয়া রঙ্গিলেন । তাহাদের জীবনের প্রতি মুহূৰ্ত্ত তাঙ্গার সমস্ত খুটিনাটি লষ্টয়া কেবল বিরসমণ্ডিত হইয়া রহিল। তাছাদের চারিদিকটা এমনি বিরসতীয় ভরিয়া উঠিল যে সেখানে যে-কেউ, যা-কিছু রছিল তাহাষ্ট বিষঃ মুক্তি ধারণ করিল ! এমন কি বাটি পৰ্য্যন্ত তাহা হইতে মুক্ত রহিল না । সে দুজনের মধ্যে অবাক হইয়া ভাবিতে লাগিল, ব্যাপার কি ! কেমন সহজে শীঘ্র সমস্ত ঘটিয়া গেল। সে ? না ! কখনো না ! সে কিছুই করে নাই—তাহার ক্ষমতা কি যে সে কিছু ঘটাইয়া তুলিতে পারে : ঘটনাগুলি একটার ফলে একটা করিয়া ঘটিয়া গিয়াছে । যাহা হইয়াছে তাহা হইতই—কেহ বাধা দিতে পারিত না । 参 এখন সে নিশ্চিন্ত ! আবার নিৰ্ব্বিবাদে সুখে জীবন যাপনের সম্ভাবনায় তাহার সমস্ত ভাবনা নিমেষের মধ্যে