পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6 と ভাবষ্ট ভাষার ভিতর দিয়া ব্যক্ত হয় বলিয়া ভাষার ক্রমিক অভিব্যক্তি ভাবের ক্রমবিকাশের অনুরূপ। বিভিন্ন মানবের ভাব-প্রকাশ প্রণালী এবং বিভিন্ন মানবের ভাষার পুষ্টির পারম্মপৰ্য্য ও পর্য্যায়গুলি আলোচনা করিলে ভাষার বিকাশ সম্বন্ধে কতকগুলি সাধারণ নিয়ম আবিষ্কার করা যায় । দেখা যায় যে চিন্তাপদ্ধতির মধ্যে যেমন পারম্পর্য্য ও ক্রমান্বয় আছে, ভাষার ইতিহাসও সেইরূপ পারম্পর্যা এবং ক্রমাম্বয় বিশিষ্ট । প্রথমতঃ, মানব একই সময়ে দুই বস্তু বা ব্যক্তি সম্বন্ধে বাক্য রচনা করিয়া তাহাদের বিষয়ে মনোভাব প্রকাশ করিতে পারে না । সে একবারে একাধিক বাক্য রচনা করিতে অসমর্থ। এজন্য তাহাকে পৌৰ্ব্বাপর্য্য স্থির করিয়া অথবা কোন পর্য্যায় বা ক্রম অবলম্বন করিয়া পদার্থের গুণ প্রকাশ করিতে হয় । দ্বিতীয়তঃ, মানবের ভাষা একই বয়সে সৰ্ব্বভাব-ব্যঞ্জক হইতে পারে না। বয়োবুদ্ধি ও জ্ঞানবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তাহার বাক্যসমূহ বিবিধ বিষয়ক হয়। প্রথমেই মানব সকল পদার্থ সম্বন্ধে এবং কোন এক পদার্থেব সর্বববিধ গুণ সম্বন্ধে কথা বলিতে পারে না । সে ভিন্ন ভিন্ন বয়সে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীর বাক্য রচনা করিয়া বিশ্বের ভিন্ন ভিন্ন বিভাগ সম্বন্ধে বক্তব্য জ্ঞাপন করে । তৃতীয়তঃ, সৰ্ব্বদা যেসকল শব্দ যোজনার দ্বারা বাক্য প্রয়োগ করিয়া মনোভাব প্রকাশ করা হয় সেই পরিচিত বাক্যসমূহ, সেই পুরাতন ভাষা অবলম্বন করিয়াই নূতন বাক্য রচিত হয় । সাধারণতঃ যে ভাষা ব্যবহার করা झहेम्ना शां८क ऊांरुझे নুতন ভাষা স্বষ্টির উপাদান হয় । এইরূপে মানবের ভাষা ক্রমশঃ পরিচিত পদার্থসমূহ হইতে অপরিচিত দূরস্থ এবং নুতন পদার্থের পবিচায়ক হইতে থাকে । চতুর্থত:, মানব কোন পদার্থ সম্বন্ধে একসঙ্গে একষ্ট আয়াসে বহুবিধ বাক্য রচনা করিতে পারে না । তাছার বাক্যরচনা যেমন প্রথমেই পৃথিবীর সকলপদার্থ-বিষয়ক হইতে পারে না, তাতার বাক্য-পরম্পরা যেমন একই বয়সে সৰ্ব্বভাব-বাঞ্জক এবং সৰ্ব্বপদার্থ-জ্ঞাপক হক্টতে পারে না এবং তাচার বাক্যসমুহ যেমন প্রথমেই অপরিচিত নুতন প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড ও অজ্ঞাত পদার্থ-বিষয়ক হইতে পারে না, সেইরূপ কোনও বিষয়ে তাহার বাক্যসমূহ প্রথমেই বহুবিধ এবং নানা শ্রেণীর অন্তর্গত হইতে পারে না । ক্রমশঃ বয়োবৃদ্ধি ও বুদ্ধিবিকাশের সহিত যেমন তাঙ্গর ধারণা ও বিচারশক্তির বিকাশ হয়, তেমন তাঙ্কার ভাষা সূক্ষ্ম জটিল হইয়া বৈচিত্র্য প্রাপ্ত হয়। ভাষা প্রথমে সরল ও সঙ্কজ থাকে, ক্রমশঃ ইহাতে অনৈক্য ও জটিলতা প্রবিষ্ট হয় । পঞ্চমতঃ, মানব প্রথমেই অতি শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে কথা বলিতে পারে না। প্রথম অবস্থায় তাহার বাকাসমূহ অসামঞ্জস্যপূর্ণ, পরস্পব বিরোধী বা সম্বন্ধহীনভাবে পৃথক পৃথক অস্তিত্বযুক্ত হইয়া থাকে। ক্রমশঃ ইহাদের মধ্যে সামঞ্জস্ত ও শৃঙ্খলা আনীত হয় । অবশেষে ইহারাষ্ট সুসম্বদ্ধ ও প্রণালীবদ্ধ হইয় প্রবন্ধ ও সাহিত্যের ভাষা সষ্টি করে। বাক্যগুলি ক্রমশঃ বিবিধ পদার্থ-বিষয়ক ও বিবিধ ভাব এই উপায়ে ইক্তারা ক্রমশঃ সংখ্যায় বুদ্ধিত কইতে থাকে। সংথ্যাবুদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চহারা বিভিন্ন শ্রেণীর অন্তর্গত হইয়া জটিলতা লাভ করে । বাক্যসমুহের এইরূপ সংখ্যাবৃদ্ধি ও ক্রমিক জটিলতা লাভেক্ট ভাষার শ্ৰীবৃদ্ধি ও পুষ্টি সাধিত হয়। সুতরাং ভাষার ভিতর দিয়া মানব ক্রমশঃ বক্তব্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করে । বক্তব্য-সমূহের বৈচিত্রা ও উৎকর্ষষ্ঠ ভাষার সৌষ্ঠব ও উৎকর্ষের কারণ । ভাষা ও ভাবের সম্বন্ধ, ভাষার উৎপত্তি, প্রকৃতি, ক্রমিক বিকাশের নিয়মের প্রতি লক্ষ্য রাথিয়াই ভাষা শিক্ষার প্রণালী অবলম্বন করিতে হক্টবে। কোন ভাষা শিক্ষা করিতে হইলে বক্তব্য ও ভাবসমূহের প্রতিষ্ট বিশেষ মনোযোগী হইতে হইবে । এজন্ত বাক্যরচনা ও পদ-যোজনকেই একমাত্র উপাদানভালে গ্রহণ করিতে হইবে । বাক্যরচনায় নৈপুণ্য জন্মিলেই ভাষা আয়ত্ত হইতে পারে, নতুবা নহে। এজন্ত অভিধান হষ্টতে বাছিয়া বাছিয়া শব্দ মুখস্থ বা ব্যাকরণের নিয়ম আবৃত্তি করিবার আদৌ কোন প্রয়োজন নাই। অধিক সংখ্যক শব্দ বা উচ্চারণ করিতে কঠিন, যুক্তাক্ষরবিশিষ্ট শব্দের অর্থ জানিলেষ্ট ভাষায় ব্যুৎপত্তি জন্মিতে পারে না। কারণ কঠিন শব্দেই কঠিন ভাষা হয় না। ভাব কঠিন হইলেই ব্যঞ্জক কয় ।