পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Фо তাহা ছাড়া শব্দগুলি যাহাতে যথাসম্ভব শ্রুতিমধুর ও সংক্ষিপ্ত হয় সেদিকে সমিতিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখিতে হইয়াছে। শ্রতিকঠোর দীর্ঘ শব্দ পুনঃ পুনঃ ব্যবহার করা অন্ধবিধাজনক। শিক্ষার্থীদিগের পক্ষেও এরূপ শব্দ কণ্ঠস্থ করা স্বসাধ্য নহে। কিন্তু বিশেষ চেষ্টা সত্ত্বেও সকল স্থলে সমিতির এই উদ্দেশ্য সফল হইয়াছে বলিতে পার যায় না । ইংরেজী প্রভৃতি ভাষার পারিভাষিক শব্দগুলিও যে সকল স্থলেই শ্রতিমুখকর ও হ্রস্বাকৃতি তাহা নহে। দীর্ঘকালের অভ্যাসের ফলে সেগুলিকে এখন আর শ্রুতিকঠোর বা দীর্ঘ মনে হয় না। আশা করা যায়, সমিতি-প্রস্তাবিত বাঙ্গালা শব্দগুলিও পরিচিত হইবার সঙ্গে সঙ্গে এমে স্বমধুর না হউক স্বসহ হইয়া আসিবে, আর স্বকঠিন বিজ্ঞানশাস্ত্রে কেবল মধুর শব্দের আশা করিলেই বা চলিবে কেন ? যে-সকল শব্দের মধ্য দিয়া আপেক্ষিত পারিভাষিক অর্থ ব্যক্ত হইতে পারে সমিতি যথাসম্ভব সেই সকল শব্দ সঙ্কলন করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। পারিভাষিক শব্দকে তাহার। যথাসম্ভব অম্বর্থক করিতে যত্বের ক্রটি করেন নাই। এই উদ্দেশ্যেই কতকগুলি প্রচলিত শব্দ ত্যাগ করিয় তাহদের স্থানে নূতন শব্দ গ্রহণ করিতে হইয়াছে। উদাহরণ-স্বরূপ গণিতের Practice শব্দের উল্লেখ করা যাইতে পারে। বাঙ্গালায় ইহা সাঙ্কেতিক নিয়ম নামে পরিচিত হইলেও ইহার মধ্যে কোনওরূপ সঙ্কেতের অস্তিত্ব আবিষ্কার করা যায় না। তাই এস্থলে, চলিত নিয়ম প্রস্তাব করা হইয়াছে । বস্তুতঃ এইরূপ প্রক্রিয়াহ জনসাধারণের মধ্যে প্রচলিত এবং মেয়েলি হিসাব নামে চলিত ভাষায় ব্যবহৃত । তবে সকল সময় পারিভাষিক বা সংজ্ঞাস্থচক শব্দের অপেক্ষিত সম্পূর্ণ অর্থ কোনও একটি মাত্র শব্দের প্রচলিত বা আভিধানিক অর্থ হইতে প্রতীতি হইতে পারে না। তাই এরূপ স্থলে নিরর্থক বর্ণসমষ্টির সাহায্যে বা কোনও অর্থযুক্ত শব্দের অর্থকে লক্ষণাশক্তির বলে ব্যাপক বা সঙ্কীর্ণ অর্থে প্রয়োগ করিয়া পারিভাষিক অর্থে ব্যবহার করিবার প্রথা প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে তথা পৃথিবীর অন্তান্ত সাহিত্যেও চলিয়া আসিতেছে। সমিতিকেও অনেক ক্ষেত্রে এই প্রচলিত প্রথার অমুসরণ করিতে হইয়াছে। তাহার ফলে অনেক পরিচিত শব্দের প্রবাসী ১৩৪২ অর্থের সঙ্কোচ ও প্রসার করিতে হইয়াছে—কোন কোন স্থলে ‘স্বার্থে ব্যবহৃত ‘ক’ প্রত্যয়ের দ্বারা শব্দের পারিভাষিক রূপ দেওয়া হইয়াছে, আবার একার্থে ব্যবহৃত বিভিন্ন শব্দ মধ্যে পূৰ্ব্বোক্ত সঙ্কোচন-প্রসারণের ফলে কিছু কিছু পার্থক্যের স্বষ্টি করিতে হইয়াছে। উদাহরণ-স্বরূপ বলা যাইতে পারে যে Energy, Power, Efficiency of s to gioi foo বিভিন্ন অর্থের দ্যোতক পারিভাষিক শব্দগুলির প্রতিশবারূপে শক্তি, সামর্থ্য, ক্ষমতা প্রভৃতি সাধারণত একার্থবোধক শব্দের ব্যবহার করিতে হইয়াছে। তবে পারিভাষিক অর্থের সহিত যে-শব্দের অর্থের কোন যোগ নাই এরূপ কোনও শব্দ কোথাও ব্যবহৃত হয় নাই। যে-সকল স্থলে প্রচলিত শব্দের সাহাধ্যে পারিভাষিক অর্থ ব্যক্ত হইতে পারে না সেই সকল স্থলে নূতন শব্দ গঠন করিতে হইয়াছে। শব্দ গঠনের সময় ব্যাকরণ শুদ্ধি ও শব্দমাধুর্যের দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখা হইয়াছে। শব্দগুলিকে সংক্ষিপ্ত আকার প্রদান করিবার জন্য কোথাও নাম ধাতুর আশ্রয় লইতে ইয়াছে Retardation A^{ &l, Acceleration wool, কোথাও ভাববাচ্যে ‘ক্ত’ প্রত্যয় ব্যবহার করিয়া সংক্ষিপ্ত বিশেষ্য প্রস্তুত করা হইয়াছে ৷ ‘ণক’ ও "ষ্ণিক প্রত্যয় আধুনিক বাঙ্গালায় বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হইলেও ‘ণিনি’ ‘ঈয়" প্রত্যয়ের যোগে শব্দ অনেক সময় শ্রুতিমধুর ও সংক্ষিপ্ত হয় বলিয়৷ বহুস্থলে উহা গ্রহণ করা হইয়াছে। ফিক প্রত্যয় ব্যবহারে উভয় পদ বৃদ্ধি হওয়ায় শব্দ উৎকট আকার ধারণ করে এবং উভয় পদ বৃদ্ধির অভাবে ব্যাকরণের নিয়ম লঙ্ঘন হয়। এই দ্বিবিধ দোষই ইংরেজী হইতে অনূদিত অধুনা-প্রচলিত অনেক বাঙ্গালী শব্দে দেখিতে পাওয়া যায়। ঈয়" প্রত্যয় ব্যবহারে এই উভয় দোষের হাত হইতে অব্যাহতি পাওয়া যায় এবং কথঞ্চিৎ শ্রুতিমধুর হয় বলিয়া তত প্রচলিত না হইলেও তাহ প্রচলিত করিবার চেষ্টা করা হইয়াছে । এই প্রসঙ্গে উদাহরণ-স্বরূপ, গতীয় (dynamie ), føvētā ( static ), gorsstą (co-planer) প্রভৃতি শব্দের উল্লেখ করা যাইতে পারে। ব্যাকরণের নিয়মানুসারে গতি শব্দের পরিবতে গত এবং স্থিতি শব্দের পরিবর্তে স্থিত শব্দ ব্যবহৃত হইতে পারে। তাই গত ও