পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক পরিভাষা সঙ্কলন షా$ স্থিতকে বিশেষ্য ধরিয়া তাহা হইতে গতীয়, স্থিতীয় শব্দ নিষ্পন্ন করিলে গীতিক, স্থৈতিক প্রভৃতি উৎকট শব্দ ব্যবহার না করিলেও চলিতে পারে। এইরূপ একতলীয় শব্দ ঐকতলিকৃ বা ঐকতালিক শব্দ অপেক্ষ স্ব সে বিষয়ে সন্দেহ নাই । প্রাচীন কালের প্রচলিত পারিভাষিক শব্দ যথাসম্ভব বাহাল রাথিবীর জন্য চেষ্টার ক্রটি করা হয় নাই, তবে যে-সকল শব্দ নিতান্ত শ্রতিকঠোর বা যেগুলি আধুনিক সাহিত্যে অর্থাস্তরে প্রচলিত থাকার দরুণ পারিভাষিক অর্থে প্রযুক্ত ইষ্টলে সাধারণের সহজে বুঝিবার অসুবিধা হইতে পারে সেরূপ শব্দ গৃহীত হয় নাই। উদাহরণ-স্বরূপ একটি শব্দের উল্লেখ করা যাইতে পারে । শ্রুতিকঠোর ‘শ্রেটী’ ( series ) শব্দের পরিবতে ‘শ্রেণী গৃহীত হইয়াছে। বানান সম্বন্ধে যে-সমস্ত নিয়ম অনুসরণ করা হইয়াছে তাঙ্গদের সকলগুলিই নূতন নহে। রেফ-যুক্ত বর্ণের দ্বিত্ব ও বর্গের পঞ্চম বর্ণের সহিত অন্য বর্ণকে সংযুক্ত করিবার প্রথা বাঙ্গালা দেশেই বেশী দেখিতে পাওয়া যায়। বঙ্গের বাহিরে এ প্রথা কদাচিং দৃষ্ট হয়, বঙ্গের বাহিরের এই প্রথা সকল স্থলে ব্যাকরণান্তগত নহে সত্য, তবে ইহাতে মুদ্রণকার্যের সুবিধা হয় সন্দেহ নাই। তাই ব্যাকরণানুমোদিত স্থলে বঙ্গেরু বাহিরের নিয়মের অনুসরণ করা হইয়াছে। আপাতত: এই রীতি দৃষ্টিবিরুদ্ধ বলিয়া মনে হইবে সন্দেহ নাই ; কিন্তু কালুক্রমে ইহাই সুন্দর হইয়া দাড়াইবে আশা করা যায়। 'Z এর উচ্চারণ দ্যোতক বর্ণ ভারতীয় বর্ণমালায় নাই। বঙ্গের বাহিরে অধোবিন্দু যুক্ত জি কারের দ্বারা এই উচ্চারণ সচিত হয়, মুদ্রণকালে এই অধোবিন্দু ভাঙ্গিয়া যাইবার বা স্বলিত হইবার সম্ভাবনা অত্যধিক । তাই অধোবিন্দুর স্থলে অধোরেখার কল্পনা করা হইয়াছে। বহু ইংরেজী শব্দ, বিশেষতঃ International Scientifi Nomenclature-এর অঙ্গীভূত শব্দ যথাযথ গৃহীত ইয়াছে। এক ভাষার উচ্চারণ অন্য ভাষার লিপিতে প্রকাশ *র সহজ নহে, কিছু কিছু বিকার অবশুম্ভাবী। শিক্ষার্থীকে ইrিয় শিখিতে হইবে এবং শব্দের অর্থ হইতে প্রকৃত উচ্চারণ ৰূপতে হইবে। বাঙ্গালী ‘অ’ বর্ণের সংবৃত (cot-এর ০ ) উচ্চারণেই অভ্যস্ত। ক্লাব (club) লিখিলে অনভিজ্ঞ বাঙ্গালী পড়িবে clawb, ক্লাব লিখিলে পড়িবে lেaab । তাহার পক্ষে অকার বা আকার কোনওটি প্রকৃত উচ্চারণের দ্যোতক নহে। এস্থলে হয় নূতন বর্ণ স্বষ্টি করিতে হইবে নতুবা অ বা আ--- একটির দ্বার কাজ চালাইতে হইবে। হিন্দী, মারাঠী, গুজরাটী প্রভৃতি অধিকাংশ ভারতীয় ভাষায় অ-বর্ণের বিবৃত (cut-এর u) উচ্চারণই প্রচলিত, সেজন্য ক্লব লিখিলে উচ্চারণের ভুল হয় না। ত্রিশ-চল্লিশ বৎসর পূর্বে শিক্ষিত বাঙ্গালী এই উচ্চারণ বুঝিত এবং বিদেশী শব্দে যথাস্থানে অ-বর্ণের বিবৃত উচ্চারণ করিত। তখন ‘পায়োনিয়র’ ‘অপর’ ‘সবজজ' প্রভৃতি বানান প্রচলিত ছিল। রবীন্দ্রনাথ বহুদিন পূর্বে ‘কটলেট" লিখিয়াছেন, র্তাহার নবপ্রকাশিত ‘চার অধ্যায়’ পুস্তকেও থর্ড ক্লাস’ ‘ফষ্ট ক্লাস’ লিথিয়াছেন। কেন্দ্রীয় সমিতির মতে একটি নূতন বর্ণ স্বষ্টি না করিয়া অ-বর্ণের বিবৃত উচ্চারণ পুনর্বার চালাইলে হানি নাই, বরং তাহাতে ভারতের অন্যান্য প্রদেশের সহিত সঙ্গতি রক্ষা করা হইবে । অ-বর্ণের বিবৃত উচ্চারণ সংস্কৃত ব্যাকরণসম্মত । অ-বর্ণ দীর্ঘ, তাহাকে জোর করিয়া হ্রস্ব করা অন্যায় ও অনাবশ্যক । বক্র আ ( cat-এর a ) বুঝাইবার জন্য সাধারণত fা লেখা হয়। আদ্যশ্বরের অ্যা, এ্যা, য়্যা প্রভৃতি অদ্ভূত রূপ দেখা যায়। বাঙ্গালী ভাষায় য-কারের উচ্চারণে ও প্রয়োগে যে বিকার জন্মিয়াছে তাহার অধিকতর প্রসার বাঞ্ছনীয় নহে । হিন্দী প্রভৃতি ভাষায় য-কারের মূল উচ্চারণ প্রায় অবিরুত আছে এবং বহু শিক্ষিত বাঙ্গালী সংস্কৃত পাঠকালে য-কারের শুদ্ধ উচ্চারণ করিতে চেষ্ট করেন। কেন্দ্রীয় সমিতির মতে নব গৃহীত বিদেশী পারিভাষিক শব্দে r অপপ্রয়োগ না করিয়া একটি নূতন স্বরের প্রচলন করা যুক্তিসঙ্গত। এই উদ্দেশ্যে তাহারা অ্যু বর্ণ এবং তাহার যোজ্য চিহ্ন গ্ৰহণ করিয়াছেন। এ-কারের কিঞ্চিৎ রূপান্তর করিলেও চলিত, কিন্তু েচিহ্নের দোষ এই যে তাহ ব্যঞ্জনের পরে না বসিয়া পূর্বে বসে। এই স্বর-চিহ্নের সংখ্যা বৃদ্ধি করা উচিত নহে । দীর্ঘকালব্যাপী প্রযত্ন ও পরিশ্রমের পরেও সমিতির কার্য সৰ্বথা নির্দোষ বা পূর্ণাঙ্গ হইয়াছে এরূপ স্পৰ্দ্ধা করিতে পারা যায় না। বিশাল শব্দশাস্ত্রের মধ্যে কোথায় কোন প্রয়োজনীয় শবটি রহিয়াছে তাহা সকল সময় নির্ণয় করা সম্ভবপর নহে। তাহা ছাড়া, ভারতের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক শাস্ত্রগুলি অত্যন্ত