পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাভিক এখনও জোর আছে। বুড়া বক্ষ স্ফীত করিয়া দাড়াইল । বলরাম সবিস্ময়ে একবার আগাগোড় বৃদ্ধকে চোখ বুলাইয়৷ দেখিল । শিশুমনে ভাবিতে চেষ্টা করিল, এই লম্বাচওড়া বুদ্ধটির আগে কত জোর ছিল এবং কি রকম চেহারা ছিল। প্রকৃতপক্ষে যৌবনে বৃদ্ধের দেহে অসীম শক্তি ছিল। বর্তমানের জরা-জীর্ণ দীর্ঘাঙ্গ গৌরবর্ণ দেহটার দিকে তাকাইলে যৌবনে সে যে স্বপুরুষ এবং বলিষ্ঠ ছিল তাহা বুঝিতে পারা বায় ৷ . বৃদ্ধ কুঠার ফেলিয়া বলরামের নিকট আসিয়া বসিল । মই কুণ্ডু যৌবনের স্বপ্নে শত্ৰু-মিত্র সমস্ত ভুলিয়া গেল । তাহাদের বংশে কেহ কখনও যে দুৰ্ব্বল ছিল না এই স্পৰ্দ্ধা বুড়াকে মাতাইয় দিল। বলিতে লাগিল -তোর বাপের গায়েও কম জোর নয়। এই ত ক-বছর আগে বড় বাধের উপরে সে যে তাগদটা দেখিয়েছে—বাপ রে, বাঘের মত একাই এক রকম সব লেঠেলের সঙ্গে লড়েছে। তবে এক আর কত পারবে ? -- বৃদ্ধ বালক-শ্রোতাকে যৌবনের কাহিনী বলিতে লাগিল— ওষ্ঠ যেখানে গাছের গুড়িটা পড়ে আছে, ওইখানে তোর ঠাকুদ, আর ওই যে কুডুলট-–ওইখানে স্বরূপ-লেঠেল আর আমি যেন এইখানে । ঠকাঠক্‌-- লাঠির উপরে লাঠি, স্বরূপ-লেঠেল ঘায়েল হ’ল-—সবাই পেছিয়ে পড়েছে। তার পর. আমার লাঠিটা দেখেছিস ত ? শোবার ঘরে ঝুলান আছে যেটা, সেটা ছিল আমার হাতে। ছুটে না গিয়ে দিলাম তোর ঠাকুর্দার মাথায় এক ঘা বসিয়ে । বাস্ সেই যে উল্‌টিয়ে পড়ল আর উঠল না । এক ঘায়েই খতম । বলরাম বিস্ফারিত নয়নে বৃদ্ধের দিকে চাহিয়! উৎকর্ণ হইয়া শুনিতে শুনিতে বলিল--তার পর ?-- --তার পর আবার কি—মামলা। পর-পর ত লেগেই 邬(区1 ബ് বৃদ্ধ মহী কুণ্ডুর মনটা সেদিন অত্যন্ত খারাপ ছিল। সকলে এজমালি গাছের কয়েকট ডাব লইয়া বিত্র একটা দী হইয়া গিয়াছে। স্থযোগ্য ভ্রাতু পুত্র অনেক কিছু বলিয়া গিয়ছে, কিন্তু সে বিশেষ কিছুই বলিয় উঠতে পারে নাই। কিছু যে বলে নাই এমন নয়, কিন্তু বলার চেয়ে বেশী কথাই ञांठेि ృoth সে শুনিয়াছে। এখন কোন উপায় অবলম্বনে আঘাতটা স্বদে-আসলে ফিরাইয়া দেওয়া যায় তাহাই সে তামাক টানিতে টানিতে ভাবিতেছিল। মানহানির মোকদ্দমা করিবে, কি আর কিছু করিবে তাহা ভাবিয়া পাইতেছিল না। বলরাম বড় নিরাশ হইয়া আসিয়া দাড়াইল । কাল সে সংবাদ পাইয়াছে—বৃত্তি লাভ করিয়া সে মাইনর পাস করিয়াছে। পড়িবার ইচ্ছা প্রবল থাকায় পিতার নিকটে দরবার করিতে গিয়াছিল, কিন্তু পিতা ইাকাইয়া দিয়াছে— আর পড়িবার প্রয়োজন নাই। বলরাম সসঙ্কোচে ডাকিল—দাদামশাই!...আমি পাস করেছি আর...আর পাচ টাকা বৃত্তি... —সত্যি ? সরে আয়, সরে আয়—দেখলি ত আমার কথার ঠিক আছে কি না ? বেঁচেবত্তে থাক ভাই। আরও ঐরকম পাসটাস কর—বংশের নাম রাখবি. বৃদ্ধ চীৎকার করিয়া উঠিল—কেন তার বাপের কি ? সে কুলাঙ্গার মানা করবার কে ?—তুই পড়। দেখলি ত আজ সকালের কাণ্ডটা ? জ্যাঠামশায় বলে একটু রেয়াদ ক'রে কথা কইলে সে। আমি শাপ দিচ্ছি, তোর বাপ মরবে••• মরবে, ঠিক মরবে। তুই পড়.আমি টাকা দেবো। —ইস্কুলে ভৰ্ত্তি হবো তাহলে দাদামশায় ? —আলবৎ হবি। সে বাধা দেবার কে ? মারপিট যদি করে—আমার কাছে আসিস্। দেবো ফৌজদারী রুজু করে। মহী কুণ্ডু উত্তেজিত হইয়া উঠিয় দাড়াইল । অঙ্গভঙ্গী করিয়া বলিল—দেবো বাছাধনকে ঘানিতে জুড়ে—— নইলে আমার নাম মহী কুণ্ডু নয়। বংশের ভিতরে একটা ছেলে, তাও আবার মুখ্য করে রাখবে। আর একটা যে আছে সেটা মরবে কি বাঁচবে তার ঠিক নেই!--তুই পড়। চিরদিন শত্রুত৷ ক'রে আসছে, তার স্বভাব ঐরকম... আমি টাকা দেবে, তুই পড়। মহীকুও খড়মের শব্দ তুলিয়া পূজার ঘরের দিকে চলিয়া গেল। বলরাম শহর হইতে ছ-মাস পরে ফিরিয়া আসিল । বৃদ্ধ দাদামশায়ের কাছে আসিয়া শহরে সে কি কি নূতন জিনিষ দেখিয়া আসিয়াছে তাহাই গল্প করিতেছিল। বৃদ্ধ তার কথার স্রোতের মাঝখানে বলিল—থাম বল,