পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১২ প্রবাসী SNー8ミ. হারুণ ইহার কিছুই জানিতেন না । হারুণ নিজ সৌভাগ্যের কথা ভাবিতেছেন এমনষ্ট সময়ে হারেমের খোজা আসিয়া তৃতীয় সংবাদ নিবেদন করিল—র্তাহার উত্তরাধিকারী ভূমিষ্ঠ ; খোরাসানী ক্রীতদাসী মরাজিল একটি পুত্র-সন্তান প্রসব করিয়াছে। হরুিণ পুত্রের নাম রাখিলেন আবদুল্লা। মরাজিল পুত্র প্রসব করিবার অল্প সময়ের মধ্যে মারা যান ; মামুন মাতৃহারা হইলেও পিতার স্নেহ হইতে বঞ্চিত হন নাই । V,9 পাঁচ বৎসর বয়সে মামুন কোরণ-শরীফ পাঠ আরম্ভ করেন স্বনামখ্যাত আরবী ব্যাকরণবেত্ত কিসাই নহবী মামুনকে কোরাণের পাঠ দিতেন। ইহা ছাড়া মৌলনা ইজিদী foot also assif.so (guardian tutor) 5RH উপর ভার ছিল শুধু পড়ান নয়, - বালকের চাল-চলন আদবকায়দা দুরস্ত করা। একদিন ইজিদী পড়ার ঘরে উপস্থিত হইয়াছেন ; মামুন তখনও অন্দরমহলে। গোলামের সুবিধা পাহয় ইজিদীকে বলিল আপনি যখন থাকেন না, সাহেবজাদ সকলের উপর বড় জুলুম করেন । শাহজাদা হইলেও মাষ্টাবের হাত হইতেও নিস্তার ছিল না । মামুন হাজির হইলেই ইজিদী তাহাকে পাচ-সাত ঘা বেত বসাইয়া দিলেন । এমন সময় চাকর খবর দিল খলিফা হারুণের অন্তরঙ্গ বন্ধু ও প্রধান মন্ত্রী জাফর বরমকী শাহ জাদার সহিত দেখা করিতে চান। মামুন তৎক্ষণাৎ চোখের জল মুছিয়া নিজের ফরাসের উপর বহি খুলিয়া বসিল ; যেন কিছু ঘটে নাই। উজীর ভিতরে আসিয়া শাহজাদার সঙ্গে অনেক ক্ষণ নানা কথা বলিলেন। এাদকে ইজিদীর প্রাণটা দুরু দুরু করিয়া কঁাপিতেছিল। উজীর চলিয়া যাওয়ার পর আশ্চৰ্য্য হইয়া তিনি ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করিলেন –তুমি বেত-মারার কথা বলিলে না ? মামুন বলিলেন, আপনার শাসন আমার পক্ষে কত উপকারজনক তাহ কি আমি বুঝিতে পারি না ? ইজিদীর শিক্ষায় মামুন অল্প বয়সে অসাধারণ বক্তা ও তর্ককুশল হইয়া উঠিয়াছিলেন । ইজিদীর পুত্র মহম্মদের কাছে মামুন ফেক বা মুসলমান-ব্যবহারশান্ত্র পড়িয়া উহা সম্যক আয়ত্ত করেন। ইহার পর তিনি হদিস বা হজরত-কথামৃত ( যাহাকে ইসলামীয় স্মৃতিশাস্ত্র বলা যাইতে পারে ) পাঠে মনোযোগী হইলেন। সে যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ হদিস-বেত্ত (মুহাদিস্) ছিলেন কুফীবাসী মালিক ইবন আনিস্। হারুণ র্তাহার কাছে লিখিলেন—তিনি বোগদাদে পদার্পণ করিয়া শাহ জাদ মামুন ও আমীনকে হদিস শিক্ষা দিলে খলিফা অনুগৃহীত হইবেন । জ্ঞান-গৰ্ব্বিত, নিৰ্ভীক, নিলেভি পণ্ডিত প্রত্যুত্তরে খলিফাকে জানাইলেন, বিদ্য লোকের কাছে উপযাচক হইয়া উপস্থিত হয় না ; মানুষই বিদ্যার কাছে যায়। দারিদ্র্যে অমলিন পাণ্ডিত্যের স্পৰ্দ্ধার নিকট হারুণের সাম্রাজ্যগৰ্ব্ব স্বেচ্ছায় পরাজয় মানিল । তিনি পুত্রদ্ধয়কে মালিকের শিষ্যত্বগ্রহণের জন্য কুফায়'পাঠাইয়া দিলেন। অসাধারণ মেধাবী ও জ্ঞানপিপাস্থ মামুন অল্প বয়সে “সৰ্ব্বশাস্ত্র পারংগম" হইয়াছিলেন বলিলে অত্যুক্তি হয় না। বিশেষতঃ ইসলামীয় ব্যবহারশান্ত্র ( ফেক ), সাহিত্য, ও আরব জাতির প্রাচীন ইতিবৃত্তে তিনি সে-সময়ের শ্রেষ্ঠ পণ্ডিতগণের সমকক্ষ গণ্য হইতেন । 溶 লোকের চক্ষে প্রতীয়মান হইলেও জগতে প্রকৃত স্বর্থী বোধ হয় কেহ নাই। আরব্যোপন্যাসের নায়ক হারুণও স্বর্থী ছিলেন না। র্তাহার অবস্থা ছিল অনেকটা আমাদের সম্রাঢ় শাহ জাহানের অপেক্ষাও শোচনীয়। আমীনের মাতা সম্রাঞ্জী জুবেদার চক্রাস্তে মিথ্যা সন্দেহের বশবৰ্ত্তী হইয়৷ হারুণ নিজ রাজত্বের উনবিংশ বর্ষে বরমকী-পরিবারকে সমূলে ধ্বংস করিলেন। ঐশ্বৰ্য্যের ভাঙা হাটে তিনি তখন নিতান্ত একক ও অসহায় ; মামুন আমীন প্রভৃতি পুত্ৰচতুষ্টয়ের কাছে র্তাহার জীবন সুদীর্ঘ বোধ হইতে লাগিল । তাহার নৈশপরিক্রমার বিশ্বস্ত সঙ্গী মসরুর মামুনের ও বিশ্বাসী চিকিৎসক গেব্রিয়ল আমীনের গুপ্তচর রূপে তাহার শ্বাসবায়ু গণিতেছিল। ইহার চার বৎসর পরে নৈরাশু ও আশঙ্কার আঁধারে হারুণের শেষযাত্র সমাপ্ত হইল খোরাসানের পথে পারস্তের তুস শহরে ( ২৩শে মার্চ, ৮০৯ খ্ৰী: ) । (t - হারুশ-অল রশিদের ইচ্ছা ছিল মামুনকে অখও সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী করিবেন। কিন্তু নিজ জ্ঞাতিগণের অনুরোধে