পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক ৰিবিধ প্রসঙ্গ—সৱ সামুয়েল হোরের বক্তৃতার অষৌক্তিকতা Տ՝Տ6: সাম্রাজ্যের কথাই ধরুন। কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা প্রত্যেকে নিজের নিজের স্ববিধার জন্ত এখনও এই নীতি অনুসারে কাজ করিতেছে । ব্রিটেন যে বাণিজ্যে, পণ্যশিল্পে, বাণিজ্যজাহাজ নিৰ্ম্মাণ ও চালান বিষয়ে এত অগ্রসর, সেও এখনও এই নীতি অনুসারে কাজ করিতেছে। এই সেদিনও ব্রিটিশ বাণিজ্যজাহাজসমূহকে সাহায্য দিবার জন্য দুই নিযুত পৌণ্ড ( প্রায় তিন কোটি টাকা ) মধুর হইয়াছে। কিন্তু ভারতবর্ষের ব্যবস্থাপক সভা এইরূপ কিছু করিতে গেলে, যদি গবর্ণর-জেনার্যাল মনে করেন, যে, তদ্বারা ব্রিটিশ বাণিজ্য ও পণ্যশিল্পাদির ক্ষতি হইবে, তাহ হইলে তিনি নিজের খুশী অনুসারে ভারতীয় বাণিজ্য, পণ্যশিল্পাদিকে সাহায্য করিবার এরূপ চেষ্টা বন্ধ করিতে পরিবেন–র্তাহাকে কোন কারণ দেখাইতে বা কৈফিয়ং দিতে হইবে না । মনে রাখিতে হইবে, কোম্পানীর আমলে নানা অন্যায় উপায়ে ভারতীয় বস্ত্রশিল্প লৌহশিল্প বাণিজ্যজাহাজ প্রভৃতির প্রভূত ক্ষতি, প্রায় উচ্ছেদ, করা হয় ঐ ঐ ব্রিটিশ শিল্পের প্রতিষ্ঠা ও উন্নতির জন্য। অথচ এখন ভারতবর্ষকে ঐ সব ও গঙ্গান্ত শিল্পের পুনরভু্যদয় সাধনাৰ্থ ফলপ্রদ কিছু করিবার পথে পপ উপস্থিত করিবার ক্ষমতা গবর্ণর-জেনার্যালকে দেওয়া হইয়াছে। শুধু তাই নয়। যদি কোনক্রমে কোন ভারতীয় পণ্যশিল্পকে সাহায্য করিবার ব্যবস্থা হইয়াই যায়, তাহ হইলে ব্রিটিশ-মানুষদের ভারতবর্ষে প্রতিষ্ঠিত কারখানা সে সাহায্য পাইতে পারিবে, নূতন ভারতশাসন আইনে এইরূপ ব্যবস্থা আছে.! এবশ্বকার ব্যবস্থাকেও সবু সামুয়েল হোর স্বশাসন অধিকার মনে করেন ! দৃষ্টান্ত আরও অনেক আছে। কিন্তু আপাততঃ এই বৰ্ণিয় এই খানেই থামি, যে, বর্তমান বৎসরের ভারতশাসন স:ঈন ভারতবর্ষকে স্বরাজ দেওয়া বা স্বরাজের দিকে একটি সে ধাপও অগ্রসর করা দূরে থাক, স্বরাজের বিপরীত দিকেই তাহকে লইয়া গিয়াছে । সামুয়েল হোরের বক্তৃতার অযৌক্তিকতা উরতবর্ষকে স্বশাসন-অধিকার দিবার বড়াইয়ের পরেই পর সমুয়েল বলেন – “Following the same line of thought, we believe that small nations are entitled to collective protection for the maintenance of their national life.” তাৎপৰ্য্য। “ঐ চিন্তারেথীর অমুসরণ করিয়া আমরা বিশ্বাস করি, যে, ক্ষুদ্র জাতির। তাহদের জাতীয় জীবন বজায় রাখিবার নিমিত্ত শক্তিসমষ্টির স্বার রক্ষিত হইবার যোগ্য।” { ইহা কি সত্য, যে, প্রবল কোন শক্তির অধীনে পরাধীন কোন দেশের জাতীয় জীবন বজায় থাকে ? প্রবাসীর সম্পাদক । ] কিন্তু ভারতবর্ষ ত কতকগুলি শক্তির সমষ্টি দ্বারা “রক্ষিত” হইতেছে না, একটি শক্তির, ব্রিটিশ শক্তির, দ্বারা, “রক্ষিত” হইতেছে। যদি বলেন, ভারতীয়েরা ক্ষুদ্র” জাতি নহে, অতএব সবু সামুয়েলের যুক্তি ভারতবর্ষ সম্বন্ধে খাটে না, তাহ হইলে তাহার উত্তর নানা রকম হইতে পারে। জাতির লোকসংখ্যা অনুসারে তাঁহাকে গ্রেট (বড়) বা স্মল (ছোট ) বলা হয় না । ব্রিটিশ জাতির লোকসংখ্যা, জাপানী জাতির লোকসংখ্যা, ভারতীয় জাতির লোকসংখ্যার চেয়ে অনেক কম। কিন্তু তাহারা গ্রেট পাওয়াস ( বৃহৎ শক্তি ), ভারতবর্ষ ক্ষুদ্র জাতি, গ্রেট বা স্মল কোন রকম পাওয়ারই ( শক্তিই ) নহে। স্বতরাং সর সামুয়েল হোর যখন আবিসীনিয়াকে লক্ষ্য করিয়া বলিয়াছেন, যে, তাহ শক্তিসমষ্টি দ্বারা রক্ষিত হইবার যোগ্য, তখন মুসোলিনী বলিতে পারেন, “বহুৎ আচ্ছ, আপনাদের জমিদারী ভারতবর্ষকে শক্তিসমষ্টির তত্ত্বাবধানে আমুন, তাহা হইলে আবিসনিয়াকেও শক্তিসমষ্টির তত্ত্বাবধানে স্থাপনে আমি আপত্তি করিব না।" উত্তরে সরু সামুয়েল বলিতে পারেন, “আমরা ত একাই ভারতবর্ষের হেপাজত করিতেছি এবং তাহাকে স্বশাসনে পৌছাইয়াছি, শক্তিসমষ্টি দ্বার রক্ষিত হওয়া ভারতের পক্ষে অনাবশ্বক।” প্রত্যুত্তরে মুসোলিনী বলিতে পারেন, “তাহা হইলে ইতালীও এক আবিসনিয়ার তত্ত্বাবধান ও ‘রক্ষা’র ভার লইতে প্রস্তুত ও রাজী আছে এবং পৌনে দুই শত বৎসর উহার মালিক থাকিবার পর ইতালী ‘অবিসীনিয়া-শাসন আইন দ্বারা তাহাকে ২১১৪ খ্ৰীষ্টাব্দে স্বশাসনে পৌছাইয়া দিবে। ভারতবর্ষ ক্ষুদ্র জাতি নহে, একথা অবশু সরু সামুয়েল হোর বলিতে পারেন, এবং তর্ক করিতে পারেন, যে, যেহেতু ভারতবর্ষ ক্ষুদ্র জাতি নহে অতএব উহা শক্তিসমষ্টির তত্ত্বাবধানে থাকিবার যোগ্য নহে। তাহার উত্তরে মুসোলিনী বলিতে পারেন, “ভারতবর্ষ বড় দেশ বলিয়া যেমন বিশাল