পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তমসা-জাহ্নবী ঐীসজনীকান্ত দাস বহুরূপী আলোকের ক্লান্ত আমি রূপ দেখে দেখে, নিরাশ্বাস অন্ধকারে দুদণ্ড বসিব নিরুৎসাহে--- তুমি বস কাছে মোর হাতে তব হাতখানি রেখে । মনে কর স্বৰ্য্য নাই, নাই শশী, মাই তারাদল ; পথ ভুলি এ আঁধারে পশে না পথিক ধূমকেতু ; খসে না জলন্ত উদ্ধা ; প্রাস্তরের আলেয়ার মত খেলে না বিদ্যুৎ-বিভ। আকাশের প্রাঙ্গণ চিরিয়া । আলোরশ্মিস্পর্শহীন অনন্ত আদিম অন্ধকারে বসে আছি দুই জনে, এইটুকু শুধু জানিয়াছি--- আলোকের সম্ভাবনা বলসে যোজন কোটি দূরে । সেথা হতে নিরস্তর রশ্মিমুখে আসিছে ছুটিয়া, অন্ধ মূক অন্ধকারে আসিছে সরল রেখা টানি, পহুছিবে হেথা আসি হয় তো বা কোটি জন্মাস্তরে, পরশ করিবে স্নেহে আমাদের প্রস্তর-পঞ্চর ; ভবিষ্য আলোর দূত গাহিবে মোদের জয়গান, ভমস-তীর্থের কবি খ্যাত হবে আলোকের যুগে । আজ সখি, আপনারে ভুলাব না আশার আলোকে ; প্রেমের উৎসব শেষ, আলোর উৎসাহ গেছে চলি— পৰ্ব্বতের গুহাগৰ্ভে ধূমে বহ্নি নির্বাপিত প্রায় ; তার কথা থাকু আজি। তুমি কি গাহিবে সখি, গান, অতি ক্ষীণ ব্যর্থতার চুপে চুপে কেঁদে-ফেরা স্বর ? একদা জাহ্নবীতীরে গেয়েছ যা বিষগ্ন সন্ধ্যায় পদতলে অবিরাম কলভাষে গৈরিক প্রবাহ, শিয়রে মেঘের স্তুপ নদীজলে ফেলে কালো ছায় । যেন আমি বসে আছি বাত্যাক্ষুব্ধ বারিধির কূলে— স্বরের তরঙ্গাঘাতে যেন ভেসে চলে গেছি দূরে, অতলে ডুবিয়া গেছি, বাড়ায়ে গানের বাছ দুটি অনস্ত অসীম শূন্তে তুমি মোরে ধরেছ তুলিয়া। গানে তবে কাজ নাই, তুমি কি কহিবে সখি, কথা--- যে কথা বলিয়াছিলে একদা প্রভাত-রৌদ্রকরে, উত্তঙ্গ পৰ্ব্বতচূড়ে, খরজলপ্রপাতের মুখে— চূর্ণ চুর্ণ জলধারা নীচে পড়ে ধোয়ার আবেশে, না-বল-কথার তোড় বাষ্প হয়ে ভরে দুই চোথ, গুড়া গুড়া সে কথার অর্থ আমি বুঝেছি সেদিন ! সে কথা আজিকে নহে, তোমার নীরব করাঙ্গুলি, আমার আঙল ছুয়ে রক্তস্রোত চাপুক গোপনে । আলোহীন, শব্দহীন, দিশাহীন, স্তন্ধ অন্ধকারে বিশ্রাম লভিব মোর, আলে। আর শব্দের আঘাত সহিতে পারে না প্রাণ, আলেtশব্দে লোভের সংঘাত—- চোখে লাগে, বাজে কানে, শিহরিয়া চমকিয় উঠি, খ্যাতির ছোয়াচে মন তলে তলে কাদে গুমরিয়া, আলোক ঝলসি উঠে প্রাণে প্রাণে হিংসার আকারে । তার চেয়ে এস সখি, ছিদ্রহীন অন্ধকারে বসি অতীতের রৌদ্রে তোলা ছবি যত দেখি অঙ্গভবে ; কুলুকুলু মহানন্দ, দুই তীরে শাস্ত জনপদএপারে দাড়ায়ে এক ক্ষুদ্র শিশু গণে জল-ঢেউ এক, দুই, তিন, চারি ; কাঠের গোলার আশেপাশে সঙ্গীর প্রসন্ন মনে থেলিতেছে লুকাচুরি খেল । আকাশ অাধার করি ওঠে মেঘ, নামে জলধারা, জলশরবিদ্ধ হয়ে পরপার ব্যাপস দেখায়। স্নানার্থী এসেছে যারা তারা কলকোলাহল তুলি আছাড়ি সাতরি খেলে বরষার নবীন উল্লাসে । নদীপাড়ে শিশুমনে সহসা সে অপৰ্ব্ব প্রকাশ--- টাপুর টুপুর বৃষ্টি কোন সে নদীতে এল বান, গান তার ভেসে এল, শিহরিল বিহবল বালক । সে গানের রেশ টানি এল শীর্ণ অজয়ের তীরে, বালি-কাকরের পথ, লালমাটি ছোট গ্রামখানি,