পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক গোপালন ও অক্সসমস্যা 位 অপূৰ্ব্ব স্বর যেদিন বেজেছিল 8 a, xస్సెరిe শাস্তিনিকেতন ঠিক সেইদিন আমি ছিলেম জগতে বলতে পেরেছিলেম— আশচর্য্য ! গোপালন ও অন্নসমস্যা আচাৰ্য্য শ্ৰীপ্রফুল্লচন্দ্র রায় ( २ ) এক কালে এদেশের লোক গাভীকে কত নিষ্ঠার চক্ষে দেখিত তাহার ঐতিহাসিক প্রমাণ বাংলা ভাষায় প্রচলিত গোপন', 'গো-মাত, ‘গো-সেবা”—এই সকল কথার মধ্যে দেখিতে পাই। মহাভারতে, পুরাণে দেখি গো-সেবা তাপসী ও মুনি-পত্নীদের নিত্যকর্মের মধ্যে গণ্য ছিল। স্বামিসেবা, অতিথিসেবা, রন্ধনশালা ও অগ্ন্যাগারের পাশাপাশি গোশালা গৃহস্থালীর একটি প্রয়োজনীয় স্থান জুড়িয়া থাকিত। দোহন করিতেন বলিয়া কন্যার নাম হইয়াছিল দুহিত ; কালের কুটিল গতিতে দুহিতা এখন দোহন করিতে ভুলিয়াছেন ; এখন তিনি শোষণ করেন পিতৃকুলকে। রাজা দিলীপ ও রাণী সুদক্ষিণ কেমন করিয়া নন্দিনীকে সেবায়ু তুষ্ট করিয়াছিলেন তাহ সুবিদিত। ঋকৃবেদের এক স্থানে জনৈক মুনি দুঃখ প্রকাশ করিয়া বলিতেছেন, “অপর মুনির কন্যার জন্য ভাল বর জুটে, কিন্তু আমি দরিদ্র, আমার যথেষ্ট গোধন নাই, তাই আমার কস্তার অদৃষ্টে মনোমত পাত্র জুটে না।” প্রাচীন কালে রাজ-রাজড়াদের ঐশ্বৰ্য্যের বিবরণ দিতে হইলে তাহাদের গোধনের সংখ্য উল্লেখ করিতে হইত। মহাভারতে দেখা যায়, বিরাট রাজার গোধন লইয়া কৌরবদের সহিত একটা খণ্ডযুদ্ধই হইয়া গেল। এ সকল উপাখ্যান হইলেও ইহ হইতে গাভীর সঙ্গে হিন্দু গৃহস্থ ও গৃহস্থালীর কিরূপ অঙ্গাঙ্গী সম্বন্ধ তাহ বেশ বুঝিতে পারা যায়। এখন জীবনযাত্রার প্রণালী অনেক বদলাইয়া গিয়াছে দেশের মাঠ-ঘাটও নূতন করিয়া বাটোয়ার হইয়াছে। প্রায় ষাট-সত্তর বৎসর পূৰ্ব্বেও প্রতি গ্রামে গোচারণের বিস্তৃত মাঠ ছিল ; সেখানে গ্রামের গাভী ও বলদ যথেচ্ছ ঘাস খাইয়া পুষ্টিলাভ করিত ও গাভীর প্রচুর দুগ্ধ দান করিত। এখনও অনেক গ্রাম আছে যাহাদের নাম হইতে বোঝা যায় যে এক সময়ে সে-সকল জায়গায় গোয়ালার বসতি ও গোচারণের মাঠ ছিল । পোড়াদহের কাছে গোয়ালবাথান, খুলনা জেলার প্রান্তদেশে গোয়ালমঠ প্রভৃতি গ্রাম ইহার সাক্ষ্য দিতেছে। যশোহর জেলার অন্তর্গত কপোতাক্ষীর তীরে দেয়াড়ার মাঠ নামে এক বিখ্যাত গোচারণভূমি ছিল। ইহা রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রদত্ত। ‘ছিল’ বলিতেছি এই জন্য যে উহা আর গোচারণের মাঠরূপে ব্যবহৃত হয় না। প্রায় সাতআট শত ঘর গোয়ালা ইহার আশপাশে বসবাস করিত। এই স্ববিস্তীর্ণ মাঠে তাহাদের গরু চরিত। দেশের লোকে স্থলভে প্রচুর দুগ্ধ, ঘি, মাখন, ছানা থাইতে পাইত । ইহার জন্য গোয়ালার মালিককে নামমাত্র খাজনা দিত—তাহাও টাকায় নহে ; দুধ, ঘি ও ছানার বরাদেই ভূস্বামী তুষ্ট থাকিতেন ।