পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহায়ণ ब्लद्वैiन्त्रौढ़ छेिकिल्ले ચૅડ ভাই না ঐ বড়বাবুর ধমকৃ খেয়ে আপিসের মাটি কামড়ে পড়ে থাকা । ‘না পোষায়, চাকুরি ছেড়ে দাও। ও: ভারী আমার বড়বাবু রে! অমনি মুখের ওপর তুড়ি মেরে চলে আসতে পারি। এদিকে ধারও হয়ে যাচ্ছে অনেক । কমলার হারটা বাধা দেওয়ার পর থেকে মনে আর শাস্তি নেই । উপায়ই বা কি ? সেবার কোলের ছেলেটার এমন অর্থ করল যে বাঁচবার অাশা ছেড়ে দিতে হয়েছিল । বড় ঢাক্তার আনতে হ’লে খরচও অনেক । কমলা নিজেই যদি গলা থেকে না খুলে দিত, তাহলে আর বেশী দিন ওকে ছেলের মা হ'য়ে থাকৃতে হত না । এখানকার দেনাপাওনা সব চুকিয়ে কলকাতা ছেড়ে একেবারে দূরে কোথাও চলে যেতে পারি তবেই মনে শান্তি পাওয়া যায়। সেই রূপনারাণপুর । আজও মনে করলে সেখানকার দূরপ্রসারী উদার আকাশকে সহসা এই ক্ষুত্র ঘরের মধ্যে পাওয়া যায়, সেখানকার মুক্ত বাতাস চোখে মুথে এসে লাগে। সেখানকার সরু রাস্তাগুলো একে-বেঁকে কোথায় যে গেছে, কোথায় কোন দূর অগোচরের মধ্যে নিজেদের যাত্রা শেষ করেছে। তাদের সঙ্গে মনও যেন সেই নিরুদ্দেশের উদ্দেশে বেরিয়ে ঘতে চায়। চারিদিকে একটা স্থপ্রচুর অবকাশ, সমস্ত প্রকৃতি নীরবে ধীরে ধীরে আপনার কাজ ক'রে চলেছে, স্যা সেখানে রাত্রির আবরণ থেকে মুক্ত হয়ে ক্রমে আপনার মহিমায় উজ্জল হ’য়ে উঠতে থাকে, রাত্রি সেখানে নিদ্রার মত পৃথিবীর চোখ দুটিকে জড়িয়ে ধরতে খাকে । শহরে সমস্তই তাড়াতাড়ি, এখানে হঠাৎ দেখা যায় মশট বাজে, আপিসের দেরি হয়ে যায়।-- ঘরের ভিতর থেকে কমলা একটু ঝাঝালো কণ্ঠে পল্লে,—এই অসময়ে ঘুমিয়ে পড়লে নাকি ? উঠে হাতমুখ *য়ে সকাল সকাল থেয়ে নাও না । বেচারী, কমলা! শিশিরের সংসারে এসে ওর আর স্বচনির অস্ত নেই, তার ওপর ছেলেমেয়েদের জালা অাছে। আগের চেয়ে খিটখিটে হয়ে পড়েছে, বড় শীঘ্র চটে যায়। Sরই বা দোষ কি ? চিরকালই ত কমলা এমন ছিল না। সেচ কমলা ! 'প্রথম যখন পিথিতে পিছর, মাথায় ঘোমূট দিয়ে একটি মনোহর লজ্জার দ্বারা নিজের সর্বাঙ্গ আবৃত ৷ করে এই সংসারে পদার্পণ করেছিল সেই নববধূটি আজ কোথায় ? সেই পুরাতন দিনগুলি আপনাদের মৃত্যু-উৎসব কোথায় কি ভাবে সম্পন্ন করছে ? কমলা ! কেরানীর বউ কমলা ! মুন্দরী ও কোন কালেই ছিল না কিন্তু ওর ছেলেমামুষের মত হাসি, অনর্গল কথা বল, হঠাৎ গম্ভীর হয়ে অত্যন্ত অসম্ভব কথাও বিশ্বাস করা, সমস্ত জড়িয়ে ওকে এমন ভাল লাগত যে ওর কাছে এলে মনের মধ্যে ভারী তৃপ্তি পাওয়া যেত । এদিকে কমলার ডাকাডাকি ক্রমেই তীব্র হয়ে ওঠাতে শিশির আলস্ত ত্যাগ করে উঠে পড়ল। সে-রাত্রে ও ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে এলোমেলো বকৃতে লাগল, রূপনারাণপুরকমল পার্থী---ফুলের গাছ-না পোষায়, চাকুরি ছেড়ে দাও•••দিলাম ছেড়ে--- রেঞ্জাসের খবর শীঘ্রই বেরুবে গুনে পৰ্য্যন্ত শিশির আর নিশ্চিস্ত থাকৃতে পারছে না। কিছুই যে হবে না সে-কথা সে নিশ্চয় জানে, তবু কেমন যেন একটা ঔংস্থক্য । হয়ত বা-বলা কি যায় ? নানারকম কল্পনা ক'রে ওর মাথা গরম হয়ে উঠতে লাগল। হয়ত সেখানে জোচ্চুরি হয়, হয়ত তার নামটা সাহেবের নয় ব’লে সেখানে তাকে বাদ দিয়েছে, হয়ত হলধরবাবু পাঠান নি, পাঠালেও হয়ত দেরি হয়ে গেছে কিংবা রাস্তায় কোথাও পড়ে গেছে, ছি-ছি, এই সব হুজুগে পড়ে আমার ছুটে টাকাই গেল, আমার আট দিনের বাজার খরচ-দূর হোকগে লটারী, ঐ দুটাে টাকাণ্ড যদি এপন ফেরৎ পাওয় কিন্তু শিশিরের বরাতে সেবার তৃতীয় পুরস্কারটা ছিল . বড়বাবু সেদিন সকাল-সকাল বাড়ি চলে গেছেন, শিশির নিজের টেবিলের কাছে দু-তিন জনের সঙ্গে আডড দিচ্ছে এমন সময় সেই খবর। শিশিরের চারিদিকে জটলা বেড়ে গেল, সকলেই অভিনন্দন জানাতে লাগল, হলধরবাবু বারবার মনে করিয়ে দিতে লাগলেন যে তিনিই জোর ক’রে টিকিট কিনিয়েছিলেন, দরোয়ানরা বকৃশিশ চাইতে লাগল, কেরানীরা সন্দেশ চাইতে লাগল, শিশির আনন্দে কোন কথা বলতে পারছিল না, অবিশ্রান্ত অর্থহীনভাবে হাস্তে লাগল। বাড়ি ফেরবার সময় হলধরবাবু সঙ্গে সঙ্গে অনেক দূর এলেন, শিশির তার কাছে নিজের মনের কথা বলতে