পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহণয়ণ পশ্চিম-যাত্রিকী RV5位 Ahoin) নামক স্বইস খোদাইকার এটি নিৰ্ম্মাণ করেন। ১০ই আগষ্ট ১৭১২ খ্ৰীষ্টাব্দে প্যারীর জনগণ যোড়শ লুইয়ের টুইলারিস, নামক প্রাসাদ আক্রমণ করে। প্রাসাদরক্ষার ভার সুইসগার্ডদের ওপর ছিল । সম্রাট সপরিবারে গুপ্তদ্বার দিয়ে চুপি চুপি পলায়ন করেন, রক্ষীরা একথা জানত না । তারা জীবন পণ করে শেষ মুহূৰ্ত্ত পর্য্যস্ত লড়ে প্রাণ বিসর্জন করে, তাদের এই সিংহবিক্রমে যুদ্ধ ও আত্মদান স্মরণ করে এই মৰ্ম্মর-কেশরী-মুৰ্ত্তি গঠিত হয়েছে। এখানে আরও অন্যান্য জিনিষ যা দেখেছিলুম সে-সব তেমন মনে নেই, স্বতরাং লুসনের কথা আর কিছু লিখতে পারলুম না । আমরা এখানে দু-রাত্রি ছিলুম। তিন দিনের দিন ইণ্টারলাখেনের উদ্দেশে যাত্রা করলুম। ইণ্টারলাখেন যাবার সময় আমাদের কিছু লাগেজভাড়া পড়ল। জেনোয়া থেকে লুসান পৰ্য্যস্ত আমাদের লাগেজ-ভাড়া কিছুই লাগে নি। ইণ্টারলাখেনের খানিকট পথ পাৰ্ব্বতা রেলের পথ, বেশী মালপত্র নিলে রেলগাড়ী ভারী হয়ে ওঠে, তাই এর জন্য অতিরিক্ত দিতে হয়। স্বইটজারল্যাণ্ডের সমস্ত ট্রেনই ইলেকটি সিটিতে চলে। এর এন্‌জিন নেই, পাহাড়ের উপর সোজা ভাবে মড় মড় শব্দে উঠে যায়। এ সময় ট্রেনে মোটে দাড়াতে পারা ধায় না। সাড়াতে গিয়ে দেখলুম কোমরে ও বুকে কি রকম ধাক্কা লাগতে লাগল। ট্রেন চলেছে, দু-পাশের দৃশ্ব ক্রমশই এত স্বন্দর হতে লাগল যে কোনদিকে যে চেয়ে দেখব তার ঠিক পাচ্ছিলুম না। চারিদিকে সবুজ গাছে ভরা পাহাড়, মাথার ওপরে সাদা বরফ ধপধপ করছে, লেকের “ ঠিক তুতে গুলে দিয়েছে। তখন বরফগুলি সব গলতে ংৰ্ক হয়েছে, সমস্ত পাহাড়ের গায়ে এখানে-সেখানে বরফ প্রমে রয়েছে, যেন ধোপার বাড়িতে সাদা কাপড় শুখচ্ছে । শাশনেই দেখছি সেই সব বরফ গলে গলে ঝর্ণ হয়ে নামছে। কদিনের ঘোরাঘুরিতে শরীর বড়ই ক্লান্ত হয়েছিল, মাঝে পুসল লেকের উপর পুরাতণ সেতু মাঝে সেজন্য বড় ঘুম আসছিল। কতবার ভাবলুম একটু ঘুমই, কিন্তু পাছে এমন স্বন্দর দৃপ্ত ফসকায় সেজন্য চোখ ব্যথা করা সত্বেও চেয়ে বসে রইলুম। সেদিন বিকেলবেলা আমরা ইণ্টারলাখেন পৌছলুম। এখানকার এই হোটেলটিরও নাম ‘হোটেল ডু লাক’ ৷ শীত এখন আমাদের দেশের খুব বেশী শীতের মত। সেদিন আর কোথাও বেড়াতে গেলুম না, কাপড়চোপড় বদলে নীচে গিয়ে খেয়ে এসে শুয়ে পডলুম । ২৯শে জুন ! সকালবেলা আমরা কোথায় কোথায় বেড়াতে যাব ঠিক ক'রে ফেললুম। আমরা ব্রেকফাষ্ট খেয়ে দুপুরের খাওয়াট। সঙ্গে নিয়ে ইলেকটিক ট্রেনে করে লটার ব্রুনেন যাবার জন্য যাত্রা করলুম। পথের দু-ধারেই পাহাড়ের ওপর থেকে ঝরণা পড়ছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দিকে । অবাক হয়ে চেয়ে দেখছি । আমাদের গাড়ীতে একটি বয়স্ক স্ত্রীলোক ও আঠার উনিশ বছরের একটি ছেলে যাচ্ছিল। ছেলেটি এগিয়ে এসে আমাদের জিজ্ঞাসা করলে, “তোমরা কি ভারতবর্ষের লোক ? আমরা বললুম, হ্যা, তুমি কি আমাদের দেশে কখনও গিয়েছিলে ? আমাদের চিনলে কি ক’রে ? তার কাছে শুনলুম, তার আমেরিকা থেকে এসেছে, দেশ বেড়াবার জন্য। একবার আমাদের দেশে এসে সব দেখেশুনে গেছে। তাদের খুব ভালই লেগেছিল। ছেলেটি তার মা’র সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলে