পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कjर्डिन्क অহেতুক SN9 রাত্রে গুইয়া তপোনাথ এই কথাই ভাবিতেছিল। এমন সময় পানের ডিবা হাতে সবিতা ধীরে ধীরে প্রবেশ করিল। আলোটা এক কোণে মিটি মিটি জলিতেছিল । দরজা বন্ধ করিয়া আলোটা সে উজ্জল করিয়া দিল । তার পর পানের ডিবা তপোনাথের শিয়রের কাছে ঠুক করিয়া রাখিয় মিটমিট হাসিতে লাগিল । রাত্রে নির্জন কক্ষে স্বামীকে সে মোটেই লজ্জা করে না । অনেক দিন পরে আজ স্বামীকে জাগ্রত পাইয়াছে । স্বামীর আরও সন্নিকটে ঘেষিয়া আসিয়া তাহার মুখখানি আলোর দিকে তুলিয়া বলিল—এখনও রাগ পড়ে নি ? —রাগি নি ত । তপোনাথ শুইয়া শুইয়াহ দু-খানি হাত সবিতার কোলের উপর রাখিল । —রগি নি ? দেখি ? -- সবিতা তাহার মুখের উপর ঝুঁকিয়া বলিল—তবে অত গম্ভীর কেন ? তথাপি তপোনাথের গাম্ভীৰ্য্য টুটিল না। একটু নড়িয়া১ড়িয়া শুধু বলিল—ভাবছি। —ভাবছ ? এত ভাবন কিসের শুনতে পাই না ? সবিতার শাড়ীর পাড় লইয়া থেলা করিতে করিতে তপোনাথ বলিল—সে অন্ত কথা । দত্তসাহেব একটা কথা আজ বলছিলেন. দত্তসাহেবের কথা সবিতা ইতিপূর্বেও অনেক শুনিয়াছে। এ সব বড় বড় কথায় তাহার আগ্রহ কম । তাড়াতাড়ি দধি দিয়া বলিল-দত্তসাহেবের কথা থাক । শোন, কাল সকালে উঠেই ষ্টেশনে গিয়ে বাড়িতে একটা টেলিগ্রাম করে আসবে। —হঠাৎ ? - হঠাৎ নয়। তুমি ত দত্তসাহেব আর তার সুন্দরী মেয়েকে নিয়ে দিনরাত্রি মেতে আছ । এদিকে দশ দিন পদার কোন চিঠি আসে নি খেয়াল আছে ? বাবার কথায় তপোনাথ ধড়মড় করিয়ু উঠিয়া বসিল । বলিণ-ন, ন, দশ দিন ? অত হবে না। এই ত সেদিন... স্নান হাসিয়া সবিতা বলিল —সেদিন নয়, দশ দিন হয়ে গেল। তোমার দিনরাত্রি কোথা দিয়ে কেটে যাচ্ছে খেয়াল ভ রাথ না । বেশ আছ! অপ্রস্তুত ভাবে তপোনাথ বলিল –ত হ’লে কালকে. নিশ্চয়ই---দশ দিন হয়ে গেল---আমি ত. --আশ্চৰ্য্য ! তাহার মাথার চুলগুলি ললাটের উপর হইতে সরাইয়া দিতে দিতে সবিতা গম্ভীর হইয়া বলিল –আশ্চৰ্য্য আর কি ! পুরুষমানুষের স্বভাবই এই ৷ -—ন, না...আমি ত ভাবতেই পারি নি...দশ দিন ... তোমাদের একবার. --আশ্চৰ্য্য ।--কালই টেলিগ্রাম ক’রে দেব- • •এর আর • • • মাথার শিয়রের দিকের জানালাটা গোলা ছিল, এতক্ষণ চোখেই পড়ে নাই ! হু হু করিয়া থানিকটা ঠাণ্ড হাওয়া আসিতেই সবিতা সচেতন হষ্টল । সেটা বন্ধ করিতে গিয়া জানালার ধারে দাড়াইয়া রহিল। অন্ধকার রাত্রি। বোধ হয় কুয়াশা করিয়াছে। ষ্টেশনের প্লাটফৰ্ম্মের সব কয়টি আলে জালিয়া দেওয়া হইয়াছে। কিন্তু ঘনীভূত অন্ধকারে সে আলো অত্যন্ত অস্পষ্টভাবে দেখা যাইতেছে। যাত্রীদের কোলাহলও শীতের চোটে মন্দীভূত । সবিতা অনেক ক্ষণ জানালার গরাদে ধরিয়া দাড়াইয়া রহিল। সার্চ-লাইটের তীব্র আলোয় রেলপথ এবং আরও পানিকট অংশ আলোকিত করিয়া একখানা ট্রেন আসিয়া থামিল । ট্রেনখানি প্রায় ফাকা । মাঝে মাঝে দুই-একটি কামরায় কয়েক জন করিয়; যাত্রী। তাহারাও নিদ্রিত। ট্রেনগানিও যেন নিদ্রিত পুরী । ঝিমাইতে ঝিমাইতে ভাসিতে ভাসিতে এই ঘাটে আসিয়া মুহূৰ্ত্তের জন্য ঠেকিয়া আবার ঝিনাইতে ঝিমাঙ্গতে চলিয়া গেল । একটু পরে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া সবিতা জানালাটা বন্ধ করিয়া দিল । বিছানার কাছে ফিরিয়া আসিয়া একটুখানি কি ভাবিয়া জিজ্ঞাস করিল -আচ্ছ, দত্তসাহেবের মেয়ে খুব শিক্ষিত, ন! ? . তপোনাথ তখনও কি যেন ভাবিতেছিল। অন্যমনস্কভাবে উত্তর দিল--হুঁ ৷ সবিতা বিছানার একাংশে নিজের পূৰ্ব্বের জায়গায়