পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পশ্চিমষাত্রিকী শ্ৰীমতী ছৰ্গাবতী ঘোষ ( s ) ১লা জুলাই। ৩০শে জুন বেলা ১২টার ট্রেনে চড়ে রাত ১০টার সময় প্যারিসে এসে পৌছলুম। বর্ষাকালের মত টিপ, টিপ, ক’রে বৃষ্টি পড়ছে, রাস্তার দু-পাশে বড় বড় বাড়ি ও দোকান। স্কইটজারল্যাণ্ডের সৌন্দৰ্য্য তখনও মনে ভাসছিল, কাজেই এখানে এসে প্রথমে এই আবহাওয়ার ভেতর পড়ে প্যারিসকে তেমন সোনার চোখে দেখতে পারলুম না। এখানে দিন-পাঁচেক থাকবার পর তবে এর স্বরূপ বুঝেছি। ষ্টেশনে নেমে কুলী পাই না। অনেক ডকাডকির পর দুটি কুলী পাওয়া গেল তাদের মুখে উগ্র স্বরার গন্ধ । কুলীদের বলা গেল আমাদের একট। ট্যাক্সিতে তুলে দাও। এখানে ট্যাক্সি গাড়ীকে ‘অটোমবিল’ বলে । অটোমবিল আমাদের রু-দু- কামারটিনে হোটেল সেন্টপিটাসবার্গে পৌছে দিলে। এই হোটেলটি মুইটজারল্যাণ্ডে থাকতেই ঠিক করেছিলুম। আমরা একটা বড় ঘর পেলুম, ভাড় ৯০ ফ্র্যা ক'রে । প্যারিসে আমরা কয়েকটা জয়গা দেখলুম। লুভর মিউজিয়ম, রোদ্য মিউজিয়ম, এফেল টাওয়ার, লুক্সেমবার্গ বাগান, বোয়াদে বুলোন বাগান, ইত্যাদি। এক দিন প্যারিস থেকে ভাসাইয়ের বাগানও দেখতে গিয়েছিলুম। আর এক দিন প্যারিসের চিড়িয়াখানা দেখা হয়েছিল। প্যারিসের পশুশালাটি বড় নোংরা, জন্তুধনোয়ারও তেমন স্ববিধার নয়, সব যেন খুঁকছে। এক্ষেল টাওয়ারের উপর উঠেছিলুম। এর উচ্চতা ১০০০ ফুট। উপরে উঠবার জন্য লিফটের বন্দোবস্ত আছে। উপরে চটাগাফার পাওয়া যায়, দোকান খুলে বসে আছে, তোমার ধমণ ধুলী সেই রকম ভঙ্গীতে বসে দাড়িয়ে ছবি তোলাতে fর । দু-একটি অন্ত দোকানও আছে। তাতে পিতলের ছাট ছোট্ট এফেল টাওয়ার, পিকচার পোষ্টকার্ড ও অন্তান্ত দবি বিক্ৰী হয়। চায়ের বন্দোবন্ত আছে। পয়সা খরচ করলেই সব রকম পাওয়া যাবে। প্যারিসের বড় দোকান গ্যালারীর লাফেতে একদিন গেলুম। আমাদের কলকাতার নিউ মার্কেটের চেয়ে অনেক ছোট, তবে এর বন্দোবস্ত অন্ত ধরণের। লুভর মিউজিয়মের ছবির গ্যালারীর নামডাক সবাই শুনেছেন, ঘুরে ঘুরে দেখে পা ব্যথা হয়ে যায়। এই মিউজিয়মের ভেতর অনেক শিল্পীকে বসে ছবি অঁাকতে দেখলুম। এরা সবাই বিখ্যাত চিত্রকরদের অাঁকা ছবি থেকে নকল করছিল। এক জন মহিলা-শিল্পী আমাদের দেখে আমাদের কাছে এসে বললেন যে, আমরা যদি রাজী হই ত তিনি আমাদের ছবি খুব ভাল ক'রে অয়েল-পেটিং ক’রে দেবেন। আমরা তার কাছে এর জন্য রোজ যাব, ও আমাদের এক মাস প্যারিসে থাকৃতে হবে। আমরা তাকে ধন্যবাদ দিয়ে জানালুম আমরা মাত্র কয়েক দিনের জন্ত বেড়াতে এসেছি, এখন ছবির কোনও স্ববিধা হবে না। এখানে থাকতে একটা জিনিষ লক্ষ্য করেছিলুম, রাস্তার ফুটপাথের ওপর সকাল থেকে রাত বারটা পৰ্য্যস্ত লোকের চেয়ার-টেবিল পেতে বসে পান ভোজন করা। এই ধরণের ব্যাপার কণ্টিনেণ্টের প্রায় সকল জায়গাতেই দেখেছি, কিন্তু প্যারিসের মত এতটা নয়। এক দিন প্যারিসের অপেরা দেখলুম। এর ভেতর অভিনয় যা হ’ল তা সমস্তই গানের দ্বারা। আমরা ভাষা জানি না, তবে অভিনীত গল্পটি সমস্তই ইংরেজীতে তর্জমা করা ছোট বই কিনতে পাওয়া গিয়েছিল, তাই থেকে সব বুঝতে পেরেছিলুম। এর দৃশুপট ও সাজসজ্জা অতি স্বন্দর। ভাসাইয়ের বাগান ও প্যালেস এক দিন দেখে আসা হ’ল । এর বাগান ও ফোয়ারা দেখবার মতন । এইখানে আমাদের এক দল টুরিষ্টদের নিয়ে ছবি তোলা হয়েছিল। প্যালেসের ভেতরের ছবি ও নানা ধরণের আসবাৰ ইত্যাদির কথা মুখে ব’লে শেষ করা যায় না। এক দিন রাত্রে খাওয়া-দাওয়ার পর আমরা মোটর ক'রে চার ঘন্টার জন্য প্যারিসে নৈশ জীবন দেখতে বেঙ্কপুম। গাইড আমাদের